ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২, ১২ মে ২০২৫, ১৪ জিলকদ ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ফুলের শরীরে শিশিরের চুম্বন

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, স্পেশালিস্ট এনভায়রনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩:০৯, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫
ফুলের শরীরে শিশিরের চুম্বন

শ্রীমঙ্গল: চারদিকজুড়ে এখন ঘন কুয়াশা। সঙ্গে কনকনে ঠাণ্ডা।

হাঁড়কাঁপানো শীত আরো তীব্রভাবে ধেয়ে আসছে শৈত্যপ্রবাহের মধ্য দিয়ে। জবুথবু শহর-গ্রামের প্রতিটি মানুষ থেকে শুরু করে প্রাণিকুল।

সারারাত জেগে থাকা একটি ফুলের অবস্থা তখন কেমন? ফুলের গায়ে জমা হওয়া শিশিরকে সে কত যত্নে আগলে রাখে? কুয়াশাময় এমন মুহূর্তগুলো কীভাবে তৈরি করে প্রকৃতি?

রাতের পৃথিবী তাপ বিকিরণ করে শীতল হয় নির্দিষ্ট মৌসুমে। তখন শীতল ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরের তাপ হ্রাস পায়। বায়ুর বাষ্প ধারণ-ক্ষমতা কমে যায় এবং অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ছোট ছোট জলবিন্দুরূপে ঘাস, গাছের পাতা কিংবা ফুলের গায়ে এসে আটকে থাকে। জমাটবদ্ধ এ জলবিন্দুই শিশির।

ফুলের গায়ে শিশিরের আটকে থাকার এ ব্যাপারটি শুধুই বিজ্ঞান কিংবা ভূগোল সম্পর্কিত নয়। প্রকৃতির নিখুঁত ভালোবাসার সঙ্গেও এটি সম্পর্কযুক্ত। শিশির ওইভাবে ফুলের গায়ে লেপ্টে থাকে বলেই প্রতিটি ফুল হয়ে ওঠে আরো সৌন্দর্যময়। এ যেন ফুলে গায়ে জলধারার মৃদুচুম্বন! বিন্দু বিন্দু প্রতিটি ফোটায় এ যেন তার নবজন্ম।   

শীতের ফুল গাছগুলোর অনেকটিই এক বর্ষজীবী। আবার কোনো কোনো গাছ বাঁচে বহু বছর। শীতে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিতে আসে গাঁদা, কসমস, ডালিয়া, গন্ধরাজ, দেবকাঞ্চন, বোতাম ফুল, চন্দ্রমল্লিকা, পপি, পেটুনিয়া, মোরগ ফুল, জিনিয়া, দোপাটি, বোগেনভেলিয়া, স্যালাভিয়ার প্রভৃতি। পাখি বা মৌমাছিরাও শিশিরকণা শরীরে লাগিয়ে এই ফুল থেকে মধু আহরণ করে।

এই শীতের মধ্যে রয়েছে কুয়াশার ব্যাপক উপস্থিতি। আর কুয়াশা জমাটবদ্ধভাবে মিশে শিশির হয়ে গিয়ে ঠাঁই নিয়ে প্রকৃতির অনিন্দ্য সুন্দর ফুল নামক এক উপাদানের মাঝে। ঘাসের ডগায় শিশির অথবা ধানের শীষের জমে থাকা শিশিরের দৃশ্যকেও হার মানিয়েছে এই ফুলের গায়ে শিশিরের দৃশ্যটি! যা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের চিরন্তন জলজ-শোভা।  


বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।