ঢাকা, শনিবার, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

নেত্রকোনায় নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৪
নেত্রকোনায় নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নেত্রকোনা: কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।

ফলে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার দুর্গাপুর ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া এলাকার নেতাই নদীর পাড় ভেঙে উপদাখালী, সুমেশ্বরী নদীর পানি বেড়েই চলেছে।

রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে পূর্বধলার জারিয়া পয়েন্টের নাটেরকোনায় বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। অপরদিকে কংস নদের পানি বিপৎসীমার ০ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদ-নদীর পানি বাড়ায় নদীর তীরবর্তী দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়ন এবং কলমাকান্দা, সদর ও পূর্বধলা উপজেলার বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে উঠতি রোপা আমনের জমি। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকার মানুষ। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।


জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনার জারিয়া-জাঞ্জাইল পয়েন্টে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি ও দুর্গাপুরে ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বৃষ্টির ফলে জেলার সোমেশ্বরী, উপদাখালি ও ধনু নদীর পানি বেড়ে চলেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এখনও প্রধান নদীরগুলো পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কংশ নদের পানি পূর্বধলার জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কলমাকান্দায় উপদাখালী নদীর পানি দ্রুত বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চল। পানির তীব্র স্রোতে কিছু গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। বেশ কিছু বাড়িঘর ধসে গেছে। বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ও বারান্দায় পানি উঠেছে।

কলমাকান্দা উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ। পাশাপাশি তলিয়ে গেছে শতাধিক পুকুর, আউশ ধান, রোপা আমন, রবিশস্যসহ বীজতলা। অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলা সদরের সঙ্গে চারটি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ি ঢলে রোপণ করা ধানের চারা ও সবজিসহ জমি তলিয়ে গেছে। তিনদিনের মধ্যে পানি কমে গেলে রোপা আমন ধানের ক্ষতি কম হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে দুর্গাপুর উপজেলার প্রায় পাঁচটি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নে পানিবন্দির সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে উপজেলাটিতে ৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ মোট ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে নেত্রকোনা জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টার পর থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার জারিয়াজানজাইল নামক স্টেশনে ৩০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সর্বশেষ ৭২ ঘণ্টায় এ স্টেশনে ৭৫৮ (২০০ + ২৫০ + ৩০৮) মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা একটি রেকর্ড।

এদিকে দুর্গতদের সহযোগিতায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।