ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

মেলা আছে, রেশ নেই

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৯
মেলা আছে, রেশ নেই বইমেলা প্রাঙ্গণে লোক সমাগম কম/ছবি- ডি এইচ বাদল

গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: অন্যদিন টিএসসি থেকে বাংলা একাডেমির দিকে পা বাড়ালেই কানে ভেসে আসে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’; তবে আজ সেই সুর নেই। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্ত্বর পর্যন্ত নিরাপত্তাকর্মীদের যে কড়াকড়ি, নেই সেটিও, গ্রন্থমেলার সামনের রাস্তাটুকু তাই পুরোপুরিই উন্মুক্ত। রিকশা, প্রাইভেটকার আর অন্যান্য সাধারণ যানের চলাচলে এখন সেটি পুরোপুরিই সাধারণ রাস্তা।

আর সাধারণ দিনে বইমেলায় যেমন বইপ্রেমীদের উপস্থিতি থাকে, সেটিও চোখে পড়েনি ছুটির দিনে। সব মিলিয়ে সময় বাড়িয়ে মেলা থাকলেও ফেব্রুয়ারির সঙ্গেই কেটে গেছে তার রেশ।

শুক্রবার (০১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অমর একুশে গ্রন্থমেলা ছিল প্রায় ফাঁকা। আর অল্পসংখ্যক যে বইপ্রেমী এদিন মেলায় এসেছেন, তারা এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ালেও বই কিনেছেন খুব কমই। তাদের কাছেও মেলা যেন শেষ হয়ে গেছে। রেশহীন মেলাতে এখন শুধুই একটু ঢুঁ মেরে যাওয়ার অবকাশ।

বিকেলে মেলাপ্রাঙ্গণে কথা হয় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিতের শিক্ষক মো. সায়েদুজ্জামানের সঙ্গে। কয়েক ঘণ্টা ঘুরে ঘুরে তিনি কিনেছেন মাত্র দু’টি বই। কথা হলে তিনি বলেন, আজ মেলায় একেবারেই ফাঁকা পরিবেশ। এভাবে যদি মেলার সময় বাড়াতেই হয়, তবে আগে ঘোষণা দিয়ে বাড়ালে ভালো হতো। অথচ এমন একটি সময়ে মেলার সময় বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে, যখন অনেক স্টলই বন্ধের প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে এবং যারা ক্রেতা, তারাও মোটামুটি তাদের প্রয়োজনীয় বইগুলো কিনে নিয়েছেন। ফলে আজ মেলা একেবারেই ফাঁকা। মেলাকে মেলার মতো মনে হচ্ছে না। মেলা আছে কিন্তু রেশ নেই।

বইমেলা প্রাঙ্গণে লোক সমাগম কম/ছবি- ডি এইচ বাদলমেলার সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণে কথা হয় আরেক বইপ্রেমী খন্দকার আতিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাট যখন ভেঙে যায়, তখন নতুন করে আর জমে না। হাট জমার আলাদা একটা সময় থাকে। তেমনি মেলাও বৃহস্পতিবারই (২৮ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয়ে গেছে, আর তার প্রমাণ মেলে আজকের উপস্থিতি দেখলেই। সবারই ধারণা মেলা ভেঙে গেছে, ফলে ছুটির দিনের বিকেল হওয়া সত্ত্বেও আজ তেমন উপস্থিতি চোখে পড়ছে না। আর মনে হয় শেষ দিন শনিবারও (০২ মার্চ) এমন অবস্থায় থাকবে।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেও এদিন দেখা গেছে একই অবস্থা। এমনকি অন্যদিনের তুলনায় তথ্যকেন্দ্রের সম্প্রচার মাইকও ছিল প্রায় বন্ধ। আর স্টলের সামনে ক্রেতাদের ভিড়ও তেমন লক্ষ্য করা যায়নি।

এবিষয়ে মুক্তদেশ, শৈলী, বই বাজার, ঘাসফুল, যুক্ত, নন্দিতা, বলাকা, আদিত্য অনিক, সিঁড়ি, সাহিত্যদেশ প্রকাশনীসহ বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলে কথা বলে জানা গেছে, ছুটির দিনের বিকেল হলেও বইয়ের বিক্রি সাধারণ দিনের তুলনায়ও কম।

তারা জানান, মেলা দু’দিন বাড়ানোর ঘোষণায় আমরা যতটা আশান্বিত হয়েছিলাম, আজকে ক্রেতাদের অনুপস্থিতি আমাদের ততটাই হতাশ করেছে। তারপরও আমরা আশা করছি সন্ধ্যার আগ মুহূর্ত থেকে বিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৯
এইচএমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।