ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

আস্থার জায়গা থেকে পাঠক আগ্রহে বাংলা একাডেমি

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
আস্থার জায়গা থেকে পাঠক আগ্রহে বাংলা একাডেমি বাংলা একাডেমির স্টল/ছবি: বাংলানিউজ

গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: বাংলা একাডেমির অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য তারা মানসম্মত বই প্রকাশ করে। এসব বই প্রকাশের পেছনে কাজ করে তাদের একটি সম্পাদনা পরিষদ, যারা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই বই সম্পাদনা করেন। বিভিন্ন প্রকাশনীর তুলনায় একাডেমির বইয়ের মূল্যও বেশ কম। এসব দিক মাথায় রেখেই পাঠক সাদরে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বইগুলো গ্রহণ করছেন বলে মন্তব্য তাদের।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমি থেকে বই কিনে ফেরার সময় প্রবীণ পাঠক নাসির আহমেদ বলেন, ভালো লেখকের ভালো বই সহজেই পাঠকদের আকৃষ্ট করে। আর বিভিন্ন বিষয়ের ও ভিন্ন ধাঁচের বইয়ের সঙ্গে ভালো সম্পাদনাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

এক কথায় আস্থার জায়গা থেকে অনেকটা নিশ্চিন্তে নেওয়া যায় বাংলা একাডেমির বইগুলো।

তিনিসহ আরো অনেকেরই আস্থার জায়গা একাডেমির বই। তাই মেলার শুরু থেকেই পাঠকের আগ্রহের পাশাপাশি বিক্রিও বেশ ভালো প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন বইয়ের। অগ্রজদের সঙ্গে তরুণ পাঠকরাও বেশ নিরভাবনায় কিনছেন বইগুলো। তবে নবীন পাঠকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বিভিন্ন অভিধান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি।

***বসন্ত বাতাসে হলুদ-বাসন্তীতে রাঙলো বইমেলা

বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি প্রকাশ করেছে ছয় হাজারের মতো বই। এর মধ্যে এখন পাওয়া যায় হাজার দেড়েক বই। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন ও পুনর্মুদ্রিত হয়ে আসা শতাধিক গ্রন্থ। আর গতবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলার পর থেকে চলতি গ্রন্থমেলা পর্যন্ত বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে ৩৯টি নতুন বই।

এই বইগুলোর মধ্যে মিসরীয় লেখক ও সাংবাদিক মোহসেন আল-আরিশির ‘শেখ হাসিনা: যে রূপকথা শুধু রূপকথা নয়’ (অনুবাদ: ইসফানদিয়র আরিওন), মলয় বালার ‘বাংলার প্রাতিষ্ঠানিক প্রাচ্য চিত্রকলার ধারা’, সিরাজুল ইসলামের ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বার্মা রণাঙ্গনে-ইঙ্গ-চীন ও মার্কিন সহযোগিতা’, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের ১৭ই মার্চের ভাষণ কেন বিশ্ব-ঐতিহ্য সম্পদ: বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ’, অজয় দাশগুপ্ত সম্পাদিত ‘সাত দশকের হরতাল  ও বাংলাদেশের রাজনীতি’, সুরাইয়া বেগম সম্পাদিত ‘মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রাণদানকারী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী’, ইউসুফ হাসান অর্কের ‘বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নাট্য পালাগান আঙ্গিক বিচার ও বর্ণনাকারীর অবস্থান অনুসন্ধান’, শামসুজ্জামান খান সম্পাদিত ‘নতুন সময়ের কবিতা’, শাহিদা খাতুনের ‘কবিয়াল বিজয় সরকারের সংগীত জীবনের বিচিত্র ভুবন’, অমলেশ চন্দ্র মণ্ডল ও মো. কামরুল ইসলামের ‘কঠিন পদার্থের বলবিদ্যা’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া আরো আছে অসীম সাহা, মাহবুব সাদিক, সানাউল হক খান ও দিলওয়ারের ‘নির্বাচিত কবিতা’।

বাংলা একাডেমির উল্লেখযোগ্য কিছু বইএবারে সব মিলিয়ে গ্রন্থমেলার দুই প্রাঙ্গণে সাতটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে বাংলা একাডেমির। এর মধ্যে দুই প্রাঙ্গণে দুটি প্যাভিলিয়ন, চার ইউনিটের দুটি ও শিশু-কিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য রয়েছে একটি স্টল। এছাড়া একাডেমির সাহিত্য পত্রিকা মাসিক ‘উত্তরাধিকার’-এর জন্যও রয়েছে আলাদা স্টল। পাশাপাশি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ভবনের নিচতলায় বাংলা একাডেমির নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্রেও বই কিনতে পারছেন পাঠকরা।

বইয়ের বিকিকিনি সম্পর্কে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে বাংলা একাডেমির প্যাভিলিয়নের দায়িত্বে থাকা মনি হায়দার জানান, এবছর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং মিসরীয় লেখক ও সাংবাদিক মোহসেন আল-আরিশির ‘শেখ হাসিনা: যে রূপকথা শুধু রূপকথা নয়’ অজয় দাশগুপ্তের ‘সাত দশকের হরতাল ও বাংলাদেশের রাজনীতি’, অদ্বৈত মল্লবর্মণের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, হুমায়ুন কবিরের ‘নদী ও নারী’ বইগুলোর কাটতি বেশ ভালো। আর এসব বইয়ে আগ্রহ আছে প্রায় সব শ্রেণীর পাঠকের।

বাংলা একাডেমির বিক্রির বিষয়ে একাডেমির বিক্রয়, বিপণন ও পুনর্মুদ্রণ বিভাগের পরিচালক এবং মেলার সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, বাংলা একাডেমি সব সময়ই মানসম্মত বই প্রকাশ করে। তার ওপর একাডেমির রয়েছে একটি দক্ষ সম্পাদনা পরিষদ। সুলেখকের সুসম্পাদিত বই, তাই সহজেই আকৃষ্ট করে পাঠককে। আর আরো একটি বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো অন্যান্য প্রকাশনীগুলোর তুলনায় একাডেমির বইয়ের মূল্যও অনেক কম।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।