ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

মনের টানে মেলায় আসি

শরিফুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
মনের টানে মেলায় আসি বই দেখায় মশগুল পাঠক/ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: প্রথম দিকে একটু ঢিলেঢালাভাবে চললেও ধীরে ধীরে লোক সমাগম বাড়ছে বইমেলায়। তবে মেলার ১৬তম দিনে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মেলা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। এদিন একদিকে ছুটির দিন, অন্যদিকে শিশুপ্রহর থাকায় বেলা ১১টায় শুরু থেকেই জমে ওঠে মেলা।

এদিনের জনসমুদ্র দেখে যে কারোরই অভিমত জনতা ব্যাংকের সদ্য অবসর নেওয়া উপ-মহাব্যবস্থাপক মুকুল হোসেনের মতোই হবে।
 
নিজের পুত্র-কন্যাকে নিয়ে মেলায় আসা মুকুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আজকের লোক সমাগম দেখে মনে হচ্ছে সত্যিই প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণ।

আমি প্রতি বছর কমপক্ষে তিন থেকে চার দিন মেলায় আসি। নিজে আসি মনের টানে, আর সন্তানদের নিয়ে আসি বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করাতে।
 
সাবেক এই ব্যাংক কর্মকর্তার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মুয়াজ, মেয়ে মারিয়াসহ তিনজনই নিজেদের পছন্দের আলাদা আলাদা বইয়ের তালিকা নিয়ে এসছেন মেলায়। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী মারিয়া এসেছেন নারী জাগরণের কয়েকটি বই কেনার জন্য।
 
মারিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বেগম রোকেয়াকে আমার খুবই পছন্দ। তিনি সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নারী জাগরণে নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রাখেন। মেলায় এসেছি বেগম রোকেয়াসহ নারী জাগরণ নিয়ে কাজ করেছেন এমন কয়েক জনের জীবনী নেওয়ার জন্য।
বইপ্রেমীদের দীর্ঘ সারি/ছবি: সুমন শেখআর ভবিষ্যতে সেনা অফিসার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর মুয়াজের পছন্দ গোয়েন্দা কাহিনী, ভূতের গল্প আর সায়েন্স ফিকশন। এ সংক্রান্ত ১২টি বইয়ের একটি তালিকাও নিয়ে এসেছে ছোট্ট মুয়াজ।
 
এদিকে জুমার নামাজের কারণে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ভিড় কিছুটা কম থাকলেও নামাজের বিরতির পর দূর-দূরান্ত থেকে আসতে থাকেন বইপ্রেমীরা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় অনেকেই বই না কিনলেও বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী নিয়ে মেলায় এসেছেন সময় কাটাতে।
 
কিন্তু সময় কাটাতে এসে নিজের অজান্তে কখন যে বইয়ের প্রেমে পড়েছেন সেটা বলতে পারছেন না রাজধানীর বাংলামটর এলাকার গৃহিণী নাজনীন সুলতানা। ব্যতিক্রম রান্নার রেসিপি, ঘর গোছানোর কৌশল আর বিভিন্ন গল্পের বইসহ ১৬টি বই নিজের অজান্তেই কিনেছেন তিনি।
 
আবার মেলায় ঘুরতে আসা কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য এমবিএ শেষ করা মৃদুল মিঠু বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় এসে মনে হচ্ছে জানার কোনো শেষ নেই। যে বই দেখছি সেটাই কিনতে ইচ্ছা করছে। এমনিতেই নতুন বইয়ের ঘ্রাণটাই অন্যরকম। কিন্তু পছেন্দের সব বই চাইলেও কিনতে পারিনি।

এদিকে মেলার পরিবেশ ও পরিসর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক দর্শনার্থী। মেয়ে বন্ধু নিয়ে মেলায় আসা আকতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, এতো বড় আয়োজন, কিন্তু খালি ধুলা আর ধুলা। মেলায় ছোট ছোট বাচ্চারা এসেছে, ধুলায় তারা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া এখানে বসারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আর মেলার পরিসরটাও একটু বাড়ানো যেতো, অল্প জায়গায় বেশি মানুষের চাপে খুব ক্রাউডি পরিবেশ হয়ে গেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
এসআইজে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।