ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

আনন্দ-ঐতিহ্যের ঘুড়ি নিয়ে ফারুক হোসেনের ‘দেশে দেশে ঘুড়ি’

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৬
আনন্দ-ঐতিহ্যের ঘুড়ি নিয়ে ফারুক হোসেনের ‘দেশে দেশে ঘুড়ি’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আকাশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঘুড়ি। রঙে-রঙে ভরপুর হয়ে উঠেছে নীল-সাদার ময়দান।

হঠাৎ-ই হেঁচকা টানে পাশের ঘুড়িয়ালকে পরাজিত করা। ওহ্ সে কী মজা! যেন বলে বোঝানোর জো নেই, একেই তো বলে মাঞ্জা মারা! নাটাই ঘুরিয়ে ঘুড়ির সে মাঞ্জায় আকাশে লড়াইটাও জমে ওঠে বেশ। বাতাসের দোল খাওয়া শিহরণ আর ঘুড়ির পতপত ওড়াউড়ি- যেন এক অন্য অনুভূতি জন্ম দেয়।

ঘুড়ি নিয়ে এমন স্মৃতি আছে কম-বেশি প্রত্যেকেরই। এটি উড়ানোর অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে তাদের সে স্মৃতি হাতের কাছে তুলে ধরছে ফারুক হোসেনের ‘দেশে দেশে ঘুড়ি’ বইটি। ৫৬ পৃষ্ঠার বইটির মলাট যেমন আকর্ষণীয়, ঠিক তেমনি এর প্রতিটি পাতায় পাতায় লেখার বিষয়বস্তুগুলোও ঠিক তেমনই আকর্ষণীয়; বরংচ তার চেয়ে বেশিই বলা যায়।

গ্লোসি আর্ট পেপারে বইটি প্রকাশ করেছে চন্দ্রাবতী একাডেমি; যাদের পরিচিতি মানসম্মত প্রকাশনায়। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। প্রকাশ পেয়েছে ২০১৬ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায়; প্রকাশক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান খন্দকার। মূল্য ২০০ টাকা। দেশে দেশে ঘুড়ি বইয়ের প্রতিটি পাতায় পাতায় কাগজ-ছাপার মিষ্টি গন্ধের সঙ্গে মন ভোলাবে ঘুড়ি নিয়ে রচিত নানা তথ্য, গল্প ও ইতিহাসের বিষয়াদি। স্কুল পড়ুয়া থেকে বৃদ্ধ- কারো মানা নেই পঠনে; কেননা সব বয়সীদের জন্যই ভিন্ন ভিন্ন মজা নিয়ে এটি সাজানো।
ঘুড়ি সর্বজনীন, ঘুড়ির ব্যবহার, বাংলাদেশে ঘুড়ি উৎসব, বিদেশে ঘুড়ি উৎসব, নাটাই, মাঞ্জা দেওয়া, রে বেথেল: ঘুড়ির জাদুকর, দেশে দেশে ঘুড়ি জাদুঘর, কীভাবে বানাবেন ঘুড়ি, ঘুড়ি সংস্কৃতি, ঘুড়ি নিয়ে আরও বই-পত্র, ঘুড়ির সত্যি গল্প- এসবই বইটির এক একটি অনুচ্ছেদ। এতে প্রস্ফুটিত হয় নানা ইতিকথা।

এই যেমন ভূমিকা অংশ থেকে তুলে ধরা যাক: ঘুড়ির কাঠামোর ওপর নির্ভর করে ওড়ার গতি, গোঁত্তা খাওয়ার নৈপুণ্য এবং অন্য ঘুড়িকে ঘায়েলের ক্ষমতা। পৃথিবীর নানা দেশের ঘুড়ির বিশেষত্ব একেক রকম। এর ফলে এটি শিল্প-সৌন্দর্য বটে; নির্মাণে রয়েছে জ্যামিতিক হিসেব-নিকেশও।

আবার হয়েছে: ঘুড়ি কখনও ছিল বার্তাবাহী, কখনও গবেষণা উপকরণ, আবার কখনও যুদ্ধের সংকেত। সেইসব অধ্যায় পার করে এটি এখন খেলার অঙ্গনের অংশ। সারাবিশ্বে এখন ঘুড়ি উৎসব হয়। এর জন্য গঠিত আছে পৃথক পৃথক অ্যাসোসিয়েশনও।

লেখক তার গবেষণা সূত্রে তুলে এনেছেন: তিন হাজার বছরের পুরোনো ইতিহাস আছে ঘুড়ির। শুরুটা বলা হয় চীনে; কারণ তারাই প্রথম আবিষ্কার করেছিল সুতো দিয়ে কী করে সিল্ক সেলাই করা যায়। এছাড়া মতান্তরে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার নামও উঠে আসে প্রথম ঘুড়ি আবিষ্কারের সঙ্গে। কোরিয়া এবং জাপান হয়ে ঘুড়ি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। যা বাংলাদেশেও গ্রাম-বাংলার অংশ বনে আছে শত বছর ধরে।

তথ্যজ্ঞান ও আনন্দ-ঐতিহ্যের সমন্বয়ের সাধক এই বইটির লেখক ফারুক হোসেনকে ছড়াকার হিসেবে চেনে পাঠক মহল। শিশুসাহিত্যেও তার বেশ কিছু কাজ রয়েছে উল্লেখ করার মতো। এ পর্যন্ত ৪২টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রথমটি ছিল ছড়ার বই; নাম লুটোপুটি। এছাড়া পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে উড়োচিঠি, পানামা রহস্য, জাপান মানে জমজমাট, শত রকমের ছড়া প্রভৃতি। ফারুক হোসেন ১৯৬১ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৬
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।