ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

মুক্তিযুদ্ধের বিশ্বস্ত দলিল ’৭১ বীরগাথা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫
মুক্তিযুদ্ধের বিশ্বস্ত দলিল ’৭১ বীরগাথা’ ছবি: দীপু- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ষাট জন মুক্তিযোদ্ধার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে রচিত ‘৭১ বীরগাথা’কে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিশ্বস্ত দলিল হিসেবে কাজ করবে বলে মত দিয়েছেন প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান।
 
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিভাজন মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিষয়েও সংশয় তৈরি করেছে।



‘৭১ বীরগাথা’ বইটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখের কথা সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখানে আর সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। বইটি মুক্তিযুদ্ধের বিশ্বস্ত দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে, বলেন অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।  
 
মুক্তিযুদ্ধের বীরযোদ্ধাদের অভিজ্ঞতার সংকলন ‘৭১ বীরগাথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে ২০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার-২ এ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বইয়ের এ মূল্যায়ন করেন।
 
এটি বসুন্ধরা পাবলিকেসন্সের প্রথম প্রকাশনা। ‘৭১ বীরগাথা’ প্রকাশিত হবে ৬টি খন্ডে ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধস্মৃতি ও তথ্য নিয়ে। বইতে মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহসিকতার অভিজ্ঞতা লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরার উদ্যেগ নিয়েছে বাংলাদেশ সংবাদ ’৭১ (বিডিএস’৭১)। প্রথম খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে ১০ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার বীরত্ব গাথা।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ে ও ক্রেস্ট হস্তান্তরের মাধ্যমে সন্মাননা প্রদান করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।
 
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আরো বলেন, বইটি শুধু নতুন প্রজন্মের নয়, সব বয়সের মানুষেরই এখান থেকে শেখার আছে। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, উপভোগ করছি, কিন্তু কিভাবে দেশ স্বাধীন হলো সেটি জানার আরো প্রয়োজন রয়েছে। কারণ একটা সময় ছিল, যখন রাষ্ট্রীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা ছিল।
 
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সামরিক বাহিনী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, আর পেছনে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কৃষকের সন্তান ছিল বড় সংখ্যায়।
 
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেজর জেনারেল (অব) কে এম শফিউল্লাহ বলেন, বাঙ্গালিরা সুযোগ পেলে কি করতে পারে, তার প্রমান রেখেছিল ১৯৭১ এ। সে সময় আমাদের মূল অস্ত্র ছিল, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান। এ শ্লোগান শুনলে, পাকবাহিনী ইদুঁরের মতো পালাতো।  
সন্মাননা প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে মেজর (অব) ওয়াকার হাসান বলেন, আমাদের বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযু্দ্ধকে নতুন প্রজন্মের কাছে নিয়ে যাবে এই বই। মুক্তিযুদ্ধের উপর চলচ্চিত্র নির্মাণেরও পরামর্শ দেন তিনি।
 
সভাপতির বক্তব্যে দৈনিক কালের কন্ঠের সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বইগুলোর মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম নতুনভাবে, নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে মুক্তিযুদ্ধকে দেখবে।
 
বইয়ের সম্পাদক সাংবাদিক শাহরিয়ার শহীদ বসুন্ধরা গ্রুপকে মুক্তিযুদ্ধের ওপর বই প্রকাশে সহায়তার জন্যে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বসুন্ধরা গ্রুপের এই অবদান দেশের জন্য গৌরবের। এমনটা খুব দেখা যায় না।  
 
সন্মাননাপ্রাপ্ত ও প্রথম খন্ডে প্রকাশিত ১০ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন- মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম), লে. কর্ণেল (অব) মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন (বীর উত্তম), কমোডর (অব) আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী (বীর উত্তম, বীর বিক্রম), গ্রুপ ক্যাপ্টেন শামসুল আলম (বীর উত্তম), লে. কর্ণেল (অব) জাফর ইমাম (বীর বিক্রম), মেজর জেনারেল (অব) ইমাম-উজ-জামান (বীর বিক্রম), ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল (বীরপ্রতীক বার), মেজর (অব) ওয়াকার হাসান (বীর প্রতীক), লে. কর্ণেল (অব) আবু ওসমান চৌধুরী ও পদ্মা রহমান।
 
২১ ফেব্রুয়ারি শনিবার মহান ভাষা শহীদ দিবস থেকে ’৭১ বীরগাথা’ বইটি পাওয়া যাবে একুশে বইমেলায় বসুন্ধরা পাবলিকেশন্সের স্টলে।
 
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলিকে কাব্য চিত্র ‘রণাঙ্গনের কথা’তে পরিবেশন করে ঢাকা স্বরকল্পন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন,  দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম ও বিডিএস’৭১ এর সিইও হাসিনা আকতার নিগার।

বাংলাদেশ সময় ১৯৩৮ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।