ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

বইমেলা

অনুবাদ গ্রন্থে আগ্রহ পাঠকদের, মান নিয়ে প্রশ্ন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪
অনুবাদ গ্রন্থে আগ্রহ পাঠকদের, মান নিয়ে প্রশ্ন ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: অনুবাদ হচ্ছে বাতাসের মতো। এর মধ্যেই আমরা বাস করি, কিন্তু দেখি না, যদিও মাঝে মধ্যে টের পাই সেটার উপস্থিতি; যখন ভালো বা খারাপ কোনো অনুবাদ আমাদের অভিজ্ঞতার গণ্ডিতে আসে, ভালো অনুবাদ সুবাতাসের মতো আমাদের মন ভরিয়ে দেয়, আমাদের মন-প্রাণ প্রফুল্ল হয়ে ওঠে; আবার বাজে কোনো অনুবাদ আমাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বরাবরই একুশের বইমেলায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় উপন্যাস। তারপর আগ্রহ গল্প, প্রবন্ধ ও গবেষণার বইয়ের প্রতি। তবে স্থানীয় মৌলিক এসব বইয়ের বাইরে দিন দিন বড় হচ্ছে অনূদিত বইয়ের বাজার। বিশেষ করে বিশ্বসাহিত্যের ধ্রুপদী গ্রন্থ ও সমকালীন সেরা ফিকশন, নন-ফিকশন বইয়ের ভালো চাহিদা রয়েছে। বিষয়টি বুঝে প্রকাশকরাও এদিকে মনোযোগ দিচ্ছেন।

এবার মেলায় আসা অনূদিত বইয়ের খবর নিতে গিয়ে অবশ্য প্রকাশক ও পাঠকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। মোদ্দাকথা পাঠকরা যা বলল তাহলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সাহিত্য বাংলায় উপভোগ্য হয়ে ওঠে ভালো অনুবাদে। তবে অনেক অনুবাদ বইয়ের ভাষাই দুর্বোধ্য ও খটোমটো। ভুলে ভরা অনুবাদ বইয়েরও ছড়াছড়ি।

বইমেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে, অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক ধরনের প্রকাশনার আধিক্য। ‘বিশ্বসাহিত্যের ক্লাসিক’ নামে অনেক বই বের করা হয়েছে, যেগুলোর ভাষাগত মানসহ সার্বিক প্রকাশনা হতাশ করার মতো। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুরস্কৃত হওয়া বইয়ের সস্তা অনুবাদই বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার পরপরই অতি দ্রুত যেনতেনভাবে এগুলো বাজারে আনা হয়।

দেশভাগ ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য এক বড় ঘটনা। জার্নিম্যান বুকসের প্যাভিলিয়নে পাওয়া গেছে উর্দু, হিন্দি, সিন্ধি, তামিল, ইংরেজি, পাঞ্জাবি, মারাঠি, কানাড়ি ও মালয়ালাম ভাষায় লেখা দেশভাগের গল্পের চারটি আলাদা অনুবাদ বই। গল্পগুলো অনুবাদ করেছেন জাভেদ ইকবাল ও মোস্তফা আজিজ জয়। একই প্রকাশনী সাবেরা তাবাসসুমের অনুবাদে প্রকাশ করেছে ‘মীনা কুমারীর শায়েরি’।

পাঠক সমাবেশ প্রকাশ করেছে আর্জেন্টিনার প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আদলফো কাসারেসের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ‘মোরেলের উদ্ভাবন’। স্প্যানিশ থেকে বইটি অনুবাদ করেছেন আনিসুজ জামান। একক প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে এবার ঐতিহ্য সর্বোচ্চ সংখ্যক অনূদিত বই প্রকাশ করেছে। শুধু এ মেলায়ই এসেছে তাদের ২৯টি অনূদিত বই। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের দুটি বই- ‘মৃত্যুর কড়া নাড়া’ আর ‘গোত্রপিতার হেমন্ত’। অনুবাদ করেছেন যথাক্রমে বেলাল চৌধুরী ও অদিতি ফাল্গুনী।

অবসর প্রকাশনার কর্মীরা জানালেন, এবার মেলায় আসার আগেই মুদ্রণ ফুরিয়েছে তাদের সংস্থার প্রকাশ করা একটি অনূদিত বই। সাতোশি ইয়াগিসাওয়ার ‘মরিসাকি বইঘরের দিনগুলি’ নামে বইটি অনুবাদ করেছেন সালমান হক। ইউপিএল বের করেছে হাসিবা আলী বর্ণার অনূদিত এশিয়ার নারী সাধকদের জীবন ও কবিতার বই ‘গহিনের স্রোতধারা’। আলম খোরশেদের অনুবাদে কাগজ প্রকাশ করেছে অনূদিত সাক্ষাৎকার সংকলন ‘কথা-সরিৎসাগর’। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক ব্রিটিশ কর্মকর্তার রোমাঞ্চকর অভিযান নিয়ে টমাস হারবার্ট লুইনের লেখা ‘থাংলিয়ানা’ বের করেছে কথাপ্রকাশ। অনুবাদ হারুন রশীদের। কথা থেকে আরও প্রকাশিত হয়েছে দিলওয়ার হাসানের অনুবাদে সাদাত হাসান মান্টোর গল্প ‘শিকারি আওরাত’। সংবেদ প্রকাশ করেছে মাসুমুল আলমের অনুবাদে ফিলিস্তিনি লেখক ঘাসসান কানাফানির ‘মেন ইন দ্য সান’।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।