ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

ব্যাংকিং

ব্যাংকের নাজুক পরিস্থিতিতে ঝুঁকিতে থাকেন ৫২ শতাংশ গ্রাহক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৪২, মার্চ ৯, ২০১৭
ব্যাংকের নাজুক পরিস্থিতিতে ঝুঁকিতে থাকেন ৫২ শতাংশ গ্রাহক বিআইবিএম করা গবেষণা-প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠান-ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা

ঢাকা: ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার অবনতি হলে আমানতকারীদের ৫২ শতাংশই উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। তবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোই বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। অংকের হিসাবে তা  ৩৯ শতাংশ।

আর অন্যসব ব্যাংকের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিরাপদ হচ্ছে বিদেশি ব্যাংকগুলো। যার হার ৩৪ শতাংশ।

 তবে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বেসরকারিখাতের ব্যাংকগুলো সবার আগে। এই অভিমত  ৫২শতাংশ আমানতকারীর।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে আমানতকারীদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) করা গবেষণা-প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ব্যাংকে আমানত করার উদ্দেশ্য, আমানতকারীদের সচেতনতার স্তর পরীক্ষা, সুরক্ষা, নিয়ম কানুন নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে।  

 বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আবু হেনা মোহা. রাজি হাসান।

 প্রতিবেদনে বলা হয়, আমানতকারীদের পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যেরই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে।  আবার আমানতকারীদের  এক-তৃতীয়াংশের পরিবারের সদস্যরা একই ব্যাংকে হিসাব খুলেছেন। ৯শতাংশ আমানতকারী হিসাব খোলেন মূলত ব্যাংকগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে (সিএসআর) আকৃষ্ট হয়ে। ১১শতাংশ গ্রাহক আমানতের বিপরীতে ঋণ নেন।   প্রভাবশালীরা জমি ও ফ্ল্যাট কেনার জন্যই মূলত দীর্ঘ মেয়াদি আমানত করে থাকেন।

 ৭৮ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব থেকে কর কর্তন করা হলেও তাদের ৪১শতাংশই জানেন না কর্তনের হার। ব্যাংকের আর্থিক বিবৃতি বা স্টেটমেন্ট সর্ম্পকে জানতে চাইলে ৪৭ শতাংশ আমানতকারী সাড়া দেননি। এসর্ম্পকে ধারণা আছে মাত্র ১৩শতাংশের।

বাংলাদেশে সচল ব্যাংকের সংখ্যা জানতে চাইলে ৬৭ শতাংশ গ্রাহক বলেছেন, ৪১ থেকে ৬০টি। ব্যাংকগুলোতে ৮১ শতাংশ সঞ্চয়ী হিসাব আছে।   হিসাব খুলতে গিয়ে ৯১ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন।   এদের মধ্যে ৭৭ শতাংশ গ্রাহক ব্যাংক হিসাবের ফরম নিজেরা পূরণ করেছেন। ১৭ শতাংশ পূরণ করে দেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

৫৫ শতাংশ আমানতকারী হিসাব খোলার সময় আবেদন ফরমের শর্তগুলো পড়েনই না। হিসাব অনিয়মত রয়েছে ৩ শতাংশের। ব্যাংকগুলোর ত্রুটিপূর্ণ সেবা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই ৭৮ শতাংশ আমানতকারীর। ১৫ শতাংশ অভিযোগ করে থাকেন। ৭২ শতাংশ এসবের প্রতিকার চান।

১৮ শতাংশ আমানতকারী তাদের সন্তুষ্টির কথা কাউকে না জানালেও ৩৩শতাংশ আমানতকারী অসন্তুষ্টির কথা জানাতে ভোলেন না। ৭৩শতাংশ গ্রাহক কর পরিশোধের জন্য ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো সহায়তা পান না। মাত্র ২৪ শতাশ আমানতকারী জানেন দেশে ইসলামী ব্যাংকিং সুদমুক্ত।

সাধারণ আমানতকারীদের আমানতের সুরক্ষাদাতা কর্তৃপক্ষটি হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনটাই মনে করেন  ৮৬ শতাংশ। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের কেলেঙ্কারি ঘট‍ার বিষয়ে সচেতন মাত্র ২৪ শতাংশ আমানতকারী। আর ১১ শতাংশ  জানেন,  যে কোনো সময় ব্যাংক ব্যর্থ হতে পারে।

দেশের ৪৮ শতাংশ  আমানতকারী নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লেও অর্থনীতি ও ব্যাংকের  খবর পড়েন মাত্র ১৩ শতাংশ। ক্ষুদ্র আমানতকারীদের নিরাপত্তায় ডিপোজিট ইন্সুরেন্স স্কিম থাকলেও এ সর্ম্পকে ৯৮ শতাংশ আমানতকারীর কোনো ধারণা নেই। বাংকের তহবিলের বড় উৎস গ্রাহকের আমানত---এমন অভিমত ৬৮শতাংশ আমানতকারীর।

বিআইবিএম মহাপরিচালক প্রফেসর ড. তৌফিক  আহমাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, বিআইবিএম’র সুপারনিউমেরারি অধ্যাপক এসএ চৌধুরী, হেলাল আহমেদ চৌধুরী, ইয়াছিন আলী। স্বাগত বক্তব্য দেন, বিআইবিএম পরিচালক প্রফেসর ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৭
এসই/জেএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।