অণ্বেষণ
‘তোমারে যতন কইরা দিলাম যাহার ঠাঁই
সেই তোমারে ভুইলা গেল, চলো লইয়া যাই...’
বহু বছর আগে গোলকগাঁয়ের বাঁকে
চোখধাঁধানো আলোকধাঁধায় হারিয়ে ফেলি তাকে।
অনেক কাল ধ’রে খুঁজে ফিরছি, ওরে
ভুবনগাঁয়ের মেলা, বাজার, আড়ত, গুদামঘরে।
বদলে-যাওয়া দিনে ঝড়বাদলের ক্ষণে
বসিয়ে রেখে গিয়েছিলাম মেলার এক কোণে
বহু সময় ধ’রে সওদাপাতি ক’রে
ফিরে এসে পাই না খুঁজে, বিকল লণ্ঠনে...
উদ্ভ্রান্তের স্বরে আহাজারি ক’রে
শুধাই আমি জনে জনে, শুধাই মহাজনে।
খুঁজে ফিরছি রোজ, কিন্তু তোমার খোঁজ
কেউই দিতে পারছে না এ বেঘোর বরিষণে।
তবু আমি ছাড়ছি না হাল
সময় যতই বেতাল-মাতাল হোক না ঝড়ের তোড়ে
খোঁজার ব্রত, খুঁজেই যাব
খুঁজে একদিন ঠিকই পাব প্রবল মনের জোরে।
অন্য সবাই ভোলে ভুলুক
কিংবা খুঁজে পাক বা না পাক
কিংবা তোমার নামে ছড়াক কালি-কেলেঙ্কারি
যার যা খুশি ভাবে ভাবুক
কিংবা কেউই নিক বা না নিক
আমিই তোমায় ধীরে ধীরে ফিরিয়ে নেব বাড়ি।
সহগ
তোমার সহগ হয়েই ঘুরি
তোমার সহগ হয়েই মরি
তোমার সঙ্গে সহমরণে
একই-সে চিতায় চড়ি।
তোমার দেহে যে রূপক-ভার
আমার শরীরে প্রভাব তার
অমায় কিংবা পূর্ণিমায়
জাগায় ঘোর জোয়ার।
আমার নিবিড় গভীরে স্বামী
তোমারই বিম্ব, অন্তর্যামী...
তোমারই দেখানো দিশায় আমি
তোমারই সঙ্গে চলি।
তোমার সহগ হয়েই ঘুরি
তোমার সহগ হয়েই মরি
তোমার সঙ্গে সহমরণে
একই-সে চিতায় চড়ি।
মাসুদ খান
কবি ও গদ্যকার
বাংলাদেশ সময় ১৩০৫, মার্চ ২৭, ২০১২