কবিতা জীবনকে আলোকিত করে। আমার ক্রমশঃ কবিতার দিকেই এগিয়ে যাই জীবনকে অবগাহন করে।
এই কাব্যসন্ধ্যায় মুখ্য কবি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি ফকির ইলিয়াস। নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকার একটি মিলনায়তনে ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ শনিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি নিবেদন করা হয় - বাংলাদেশ ও মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের উদ্দেশে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল `কবি শহীদ কাদরীর সাথে আড্ডাপর্ব`। এপর্বে, `` কবিতা কেন পড়ি`` --- বিষয়ে অংশ নেন প্রবাসের অন্যতম আবৃত্তিকার - ফারুক ফয়সল, জি এইচ আরজু, রওশন আরা লিপি, ফারুক আজম ও ইভান চৌধুরী।
``কবিতা কেন লিখি `` - বিষয়ে কথা বলেন , শামস আল মমীন, আমিনুর রশীদ পিনটু, ও লুবনা কাইজার। ছন্দ ও কবিতার প্রকরণ নিয়ে আলোচনা করেন কবি শহীদ কাদরী। উপস্থাপনা করেন আবৃত্তিকার, নাট্যজন মুজিব বিন হক।
শহীদ কাদরী বলেন, প্রকৃত কবিতার মাঝেই বেঁচে থাকেন একজন শুদ্ধতম কবি। সমস্ত সৃজনশীল কবিরা এ পর্যন্ত যা বলেছেন, তার নির্যাস হচ্ছে যোগাত্মক জীবনের ফলাফল। কবিরা সব সময়ই দাঁড়ান সত্যের পক্ষে। তারা মাটিকে ভালোবাসেন বলেই বার বার ফিরে যান অবনত ভালোবাসার কাছে। তাদের কবিতাই হয়ে ওঠে আপামর মানুষের শক্তির উৎস।
কাব্যসন্ধ্যার দ্বিতীয় পর্বে প্রথমেই আশীষ বড়ুয়া রচিত `বিজয় দিবসের কবিতা` আবৃত্তি করেন চিত্রশিল্পী তানভীর সারওয়ার রানা। এরপরই শুরু হয় কবি ফকির ইলিয়াসের কবিতা আবৃত্তি পর্ব। এপর্বে- আবৃত্তিকার মনজুর কাদের আবৃত্তি করেন - `যৌথ মেঘবৈঠক`, `করায়ত্ব জলের উজান` ও `অর্চনা সিরিজ`।
রওশন আরা লিপি আবৃত্তি করেন- `কম্পিত ভূমির মন`, `যাদের উল্লেখযোগ্য কোনো স্মৃতি থাকে না` ও `হরফের জলসৌধ`।
জি এইচ আরজু আবৃত্তি করেন - `প্রভাকরণ`, `বৃক্ষজন্ম, ঝড়ের আবাদ`, `নসবনামা` ও `নদীদের জবানবন্দী`।
এরপরে ছিল নির্বাচিত কবিদের কবিতার আবৃত্তি। এতে কবি সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা আবৃত্তি করেন- অনুসূয়া আরিফ। ফরহাদ মজহারের কবিতা পড়েন- আনন্দ ইকবাল। স্বরচিত কবিতা পড়েন-- লুবনা কাইজার, আমিনুর রশীদ পিনটু, ও শাহ আলম দুলাল। সবশেষে ছিল স্বকন্ঠে কবি ফকির ইলিয়াসের কবিতা ও কথা পর্ব।
ফকির ইলিয়াস বলেন, আমার কবিতায় আমি আমার সমকালকে ধারণ করতে চেয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার। আমার কবিতায় প্রজন্মের চেতনা ও মননের উন্মেষকে আমি ভালোবাসার ক্যানভাস করতে চেয়েছি।
ফকির ইলিয়াস আরও বলেন, এই সময়ে বাজারি দখলদাররা কবিতাকেও দখল করতে চাইছে। এটা শুভ লক্ষন নয়। এ বিষয়ে কবির দায়িত্ব আছে। যারা কবিতা লিখেন ও যারা কবিতা পড়েন তারা একে অন্যের পরিপূরক। সব নদীই মিশে যায় বঙ্গপোসাগরে। এটাই হচ্ছে বাংলা কবিতার মূল অববাহিকা।
চার ঘণ্টার এই সন্ধ্যার সবশেষে, কবি শহীদ কাদরী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন আগামী ২ মার্চ ২০১২ চতুর্থ অনুষ্ঠানের প্রধান কবি হিসে আলোচিত হবেন- কবি আল মাহমুদ।
বাংলাদেশ সময় ১৩০৯, ডিসেম্বর ১৯, ২০১১