ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

কবীর চৌধুরী স্মরণে বাংলা একাডেমীর শোকসভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১১
কবীর চৌধুরী স্মরণে বাংলা একাডেমীর শোকসভা অনুষ্ঠিত

ঢাকা: দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী, বাংলা একাডেমীর সভাপতি ও সম্মানিত ফেলো সদ্য প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর স্মরণে এক শোকসভার আয়োজন করে বাংলা একাডেমী।

শনিবার বিকেল ৪টায় একাডেমীর রবীন্দ্রচত্বরে এ শোকসভার আয়োজন করা হয়।



শিক্ষাবিদ প্রফেসর জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে শোকসভায় স্মৃতিচারণ করেন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ইকবাল বাহার চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, অধ্যাপক করুণাময় গোস্বামী, সংসদ সদস্য বেবী মওদুদ, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং কবীর চৌধুরীর কন্যা অধ্যাপক শাহীন মাহবুবা কবীর।

শোকসভায় কবীর চৌধুরীর স্মরণে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।

শোকসভায় বক্তারা বলেন, স্বপ্নচারী দূরদৃষ্টিসম্পন্ন আধুনিক মানুষ কবীর চৌধুরী আমৃত্যু ন্যায়ের প্রশ্নে ছিলেন অবিচল ও অকুতোভয়। তাঁর লেখকসত্তা ও ব্যক্তিত্ব ছিল বহুমাত্রিক ও নিরীক্ষাপ্রবণ। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলা একাডেমীর পরিচালক থাকাকালে পাকিস্তান সরকারের তৈরি করে দেওয়া মিথ্যা বিবৃতিতে জীবন-বিপন্নের শংকাকে উপেক্ষা করে তিনি যে সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের পরিচয় দেন সমকালে তার তুলনা মেলা ভার। মুক্তিযুদ্ধকালে যেমন ছিল তাঁর সাহসী ভূমিকা তেমনি স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

বক্তারা আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধবিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন সম্মুখসারির যোদ্ধা। কবীর চৌধুরী ছিলেন শুদ্ধ বাঙালির প্রতিকৃতি। তাঁর লিখে যাওয়া ‘শেষ ইচ্ছা’র মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান-সর্বস্বতার বিপরীতে তাঁর পরিশিলিত রুচির প্রকাশ মেলে। সকলের জন্য অসীম ভালোবাসায় পরিপূর্ণ ছিল তাঁর ব্যক্তিসত্তা। ব্যক্তির বৃত্ত ছাপিয়ে তিনি ক্রমেই এক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হন। আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নে তাঁর ভূমিকা স্মরণযোগ্য। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা ভাষা-সাহিত্য ও বৃহত্তর বাঙালি এক সাহসী অভিভাবক হারালো।

বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে রাজাকারদের হাতে অপহৃত কবীর চৌধুরীর অনুজ শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর অসমাপ্ত কাজকেও তিনি নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করেন। মুনীর চৌধুরীর অসমাপ্ত অনুবাদকর্ম সম্পন্ন করেই তাঁর দায় শেষ হয়ে যায়নি বরং আমৃত্যু তিনি মুনীর চৌধুরীর লালিত বাংলাদেশের আধুনিক নাট্যজগতের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে অক্লান্ত প্রয়াস চালিয়েছেন।

বাংলা একাডেমী অচিরেই কবীর চৌধুরীর প্রামান্য জীবনীগ্রন্থ ও তাঁর স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করবে।

এছাড়াও,  তাঁর স্মরণে ‘উত্তরাধিকার’ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ এবং বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে কবীর চৌধুরীর ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।