ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

শেষ সময়ে বই কেনার পাল্লা

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯
শেষ সময়ে বই কেনার পাল্লা গ্রন্থমেলায় আহত দর্শনার্থীরা, ছবি: জিএম মুজিবুর

অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাজমুল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল বাকী। মডেল টেস্ট থাকার কারণে গ্রন্থমেলায় আসার চেষ্টা করলেও সুযোগ হয়নি। তাই শেষ সময়ে এসে দু’জনে তালিকা ধরে ধরে কিনলেন পছন্দের সব বই। যেন একজন আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাবেন।

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ছিলো অমর একুশে গ্রন্থমেলার চব্বিশতম দিন। এদিন বিকেলে গ্রন্থমেলার দ্বার উন্মুক্ত হওয়ার পর বইপ্রেমীদের উৎসাহ নিয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

ছুটির দিন না হলেও প্রকাশনীগুলোতে ছিল ভিড়। আর কয়দিন পরেই পর্দা নামবে বাঙালির প্রাণের মেলার। যার জন্য সবাই পছন্দের বই সংগ্রহের সুযোগ হারাতে চান না।

বই কেনার পর নাজমুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমার জেলা সম্পর্কে জানার আগ্রহ সব সময় ছিল। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত লক্ষীপুর জেলার বইটি কিনেছি। নিজের জন্য কমলাকান্তের উইলসহ বেশ কয়েকটি সাহিত্যের বই এবং ছোট ভাইয়ের জন্যও কিনলাম গল্পের বই।

মেলার শেষ দিকের বেচা-কেনা সম্পর্কে জানতে চাইলে অনন্যা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী ফারহান শাহরিয়ার বলেন, ছুটির দিন না হলেও বিক্রি ভালোই। যারা আসছেন প্রত্যেকে বই কিনছেন।

এদিকে মেলায় নতুন বই এসেছে ৯১টি। এর মধ্যে গল্পের বই ১৬টি, উপন্যাস ৯টি, প্রবন্ধ ৭টি, কবিতা ১৮টি, গবেষণা ২টি, ছড়া ১টি, শিশুসাহিত্য ১৬টি, জীবনী ৬টি, রচনাবলী ১টি, মুক্তিযুদ্ধ ১টি, ভ্রমণ বিষয়ক ২টি, ইতিহাস ২টি, রাজনীতি ১টি, রম্য/ধাঁধা ২টি, ধর্মীয় ১টি, অনুবাদ ১টি ও অন্যান্য ৫।
 
বিকেল ৪ টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বলধা গার্ডেন: আমাদের উদ্যান-ঐতিহ্য’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোকারম হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন হাশেম সূফী, মোহাম্মদ আলী খান, নূরুন্নাহার মুক্তা। সভাপতিত্ব করেন কথাসাহিত্যিক বিপ্রদাশ বড়ুয়া।
 
প্রাবন্ধিক মোকারম হোসেন বলেন, আমাদের অন্যতম উদ্যান-ঐতিহ্য বলধা গার্ডেন আজ বিপন্ন। চারপাশের সুউচ্চ দালানকোঠা বলধা বাগানের বিরল সংগ্রহকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। বাগানের সমপরিমাণ জায়গা নিয়ে অথবা বিকল্প কোনো নকশায় মূল বাগানের প্রতিটি উদ্ভিদের চারা একটি করে রোপণ করে সৃষ্টি করা যায় নতুন বলধা গার্ডেন। এরজন্য আগে থেকেই বানাতে হবে বিশেষ বীজতলা, বীজ আসবে বাগান থেকে, ইতোমধ্যে যেসব গাছ হারিয়ে গেছে তা আবার সংগ্রহ করতে হবে, যেসব গাছ বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে সেসবও। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবেই যেন উদ্যানের পুরনো নকশার বিকৃতি না ঘটে, আদি উদ্যানও অবহেলার শিকার না হয়। বাগানের নাম ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পরিবর্তন বাঞ্ছনীয় নয়।

আলোচকরা বলেন, বলধা গার্ডেন নেহায়েত একটি উদ্যান নয়, এটি আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্তর্গত অঞ্চল। এ উদ্যান নগর ঢাকার নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে ধারণ করে আছে বহুকাল ধরে। এ উদ্যান বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত, বহু স্মরণীয় কবিতা ও সাহিত্যকর্মের জন্ম হয়েছে এ উদ্যানে।  

তারা বলেন, ঢাকার উদ্যান-ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে প্রায়। মানুষের প্রকৃতি-বিধ্বংসী প্রবণতা বলধা গার্ডেনকেও গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে। ঢাকাকে বাঁচাতে হলে ধ্বংসের হাত বলধা গার্ডেনসহ আমাদের উদ্যান-ঐতিহ্যের আশু সুরক্ষা প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে বিপ্রদাশ বড়ুয়া বলেন, বলধা গার্ডেন শুধু বাংলাদেশের নয় সামগ্রিকভাবে বিশ্ব উদ্যান-ঐতিহ্যের অন্যতম সংযোজন। এখানে বৃক্ষরাজি-তরুলতার যে বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাবেশ ঘটেছে তা যেমন প্রাণপ্রকৃতির রক্ষাকবচ। কালের বিবর্তনে এ উদ্যানের বিন্যাসে পরিবর্তন এলেও এর মূল কাঠামো অক্ষুণ্ন রাখা প্রয়োজন।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বিশ্বজিৎ ঘোষ, এম. আবদুল আলীম, বিমল গুহ, জেসমিন মুন্নী, ড. চৌধুরী শহীদ কাদের।

সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪ টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের অনুবাদ সাহিত্যের চালচিত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশ নেবেন  মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, আনিসুর রহমান, আলম খোরশেদ এবং রাজু আলাউদ্দিন। সভাপতিত্ব করবেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

** পরিসর বাড়ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯
এসকেবি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।