মুহূর্ত
খুব গান গাইতে ইচ্ছে করছিল
পুতুলটাও বলছিল গান করো
আর আমি আওয়াজ ছাড়াই
গেয়ে ফেললাম অনেক গান
যা এখনো তোমরা শুনছো।
মেঘ
আমাদের বাড়ির দক্ষিণে মেঘ এলে
কাক হয়ে যায়
সেই কাক কা কা করলেই বৃষ্টি!
তখন নরম মাটিতে বাবা জুড়ে দেন হাল
একদিন কচি কচি চারা
তারপর কত ফুলকপি!
বাবা সেই ফুলকপি বিক্রি করে
ঘামগুলো আমাকে পাঠান
ঘাম থেকে জন্ম নেয় মেঘ,
খুঁজে ফেরে আমাদের বাড়ি
জন্মমৃত্যু
এখনো তোমার চোখে সন্দেহের বিষ
আর তা পান করেই জেনেছি-
মৃত্যু, জীবনের পুরাতন নাম
তাকে খামে ভরে উড়াল দিয়েছে যে পাখি
তার নাম জন্ম।
কলরব
পাতাই চেনে না মেয়ে, চিনবে কি ফুল!
চিনবে কি বনলতা, সবুজ তুমুল
মেঘ আর প্রজাপতি, অথবা ফড়িং
চিনেও না লাল ফ্রগ, স্বর্ণের রিং
কিছুই চেনে না মেয়ে, তবু চেনে সব
পাখিই দেখেনি মেয়ে, করে কলরব।
ধারণা
অফিসে খেলতে যাই, কলিগদের সঙ্গে আড্ডা মারি
আর টেবিলে ঝিমাই-এটা আমার স্ত্রীর ধারণা
আমি ভাবি, একমাত্র মেয়েটিকে সামলে রেখে
এই আট ঘণ্টা তিনি খাবার সময়টি পর্যন্ত পান না
লেগে থাকা পাখির চঞ্চুর দাগ
স্তন পরীক্ষা করেই বুঝতে পারবে আমার দাঁতের ঝিলিক
আমি যে পাখির মাংস খেয়েছি তার চঞ্চুর দাগও সম্ভবত সেখানে আছে
সেইসব পাখি এখন তোমার স্তনে ঘুমোচ্ছে; এটা অবশ্য বিজ্ঞাপনের বিষয় হতে পারে
একটা পাখির অর্থ আকাশ হতে পারে
এবং তুমি কিংবা তোমার স্তন হয়ে উঠতে পারে পাখির অদ্ভুত আচরণের বহিঃপ্রকাশ।
বন্ধুর প্রতি
স্বপ্নই তোর শক্র-বুঝলি রে হাঁদা
প্রয়োজনে তুই জুতো পায়ে ঘেসোমাঠে হাঁট
দূরে-নদীর ধারে-
যেখানে কোনো রেলস্টেশন নেই, শুধু বাঁশবন
রাতে মরা চাঁদ
যেখানে মানুষ ও গাছের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই
বরং তুই একটা গাছ হয়ে দাঁড়িয়ে থাক
অন্য দশজনে সেই গাছ থেকে ফল পেড়ে খাক
চন্দন চৌধুরী,
কবি ও সাংবাদিক
বাংলাদেশ সময় ১৪২০, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১১