ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

‘ঋত্বিক ঘটক রেট্রোস্পেকটিভ’র আয়োজন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
‘ঋত্বিক ঘটক রেট্রোস্পেকটিভ’র আয়োজন

ঢাকা: বাংলা চলচ্চিত্রের ধ্রবতারা ঋত্বিক ঘটকের ৯০তম জন্ম ও ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৬ দিনব্যাপী ‘ঋত্বিক ঘটক রেট্রোস্পেকটিভ’-এর আয়োজন করেছে যৌথভাবে চলচ্চিত্রম ফিল্ম সোসাইটি ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর।

আগামী ১২ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এ রেট্রোস্পেকটিভ অনুষ্ঠিত হবে।


 
চলচ্চিত্রম ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মুনিরা মোরশেদ মুন্নী জানান, উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠানটি শুরু হবে ১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায়। প্রধান অতিথি হিসেবে রেট্রোস্পেকটিভ -এর উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সভাপতিত্ব করবেন এমিরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ও ঋত্বিক ঘটকের কন্যা সংহিতা ঘটক।
 
আগামী ১০ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় একটি ওয়ার্কশপ পরিচালনা করবেন। বৃটিশ কাউন্সিলে অনুষ্ঠিতব্য এই ওয়ার্কশপের শিরোনাম: ‘পাঠপ্রকল্প: ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্র’। গ্রাজুয়েশন পর্যায়ে অধ্যয়নরত যে কোনো শিক্ষার্থী  ২০০০ টাকা কোর্স ফি দিয়ে করে এই ওয়ার্কশপে অংশ নিতে পারবেন। অংশ নেওয়া সবাইকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।

রেট্রোস্পেকটিভ উপলক্ষে ঢাকায় আসছেন ঋত্বিক ঘটকের কন্যা সংহিতা ঘটক ও ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। ১৩ ফেব্রুয়ারি, শনিবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় একটি বিশেষ বক্তৃতা দেবেন। বক্তৃতার  বিষয়: ‘বাঙালির আত্বপরিচয় ও ঋত্বিক কুমার ঘটক’। রেট্রোস্পেকটিভ এর সব প্রদর্শনী ও বিশেষ বক্তৃতা মিলনায়তনের আসন খালি থাকা সাপেক্ষে সবার জন্য উন্মুক্ত।
 
এছাড়াও অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করবেন।
 
রেট্রোস্পেকটিভ উপলক্ষে একটি সুদৃশ্য প্রকাশনাও প্রকাশিত হবে।
 
চলচ্চিত্রম ফিল্ম সোসাইটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেট্রোস্পেকটিভে  ঋত্বিক ঘটক নির্মিত সবগুলো কাহিনীচিত্র ও ৪টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। এছাড়া ঋত্বিক ঘটকের ওপর নির্মিত ২টি প্রামাণ্যচিত্র ও ১টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র প্রদর্শিত হবে।

ঋত্বিক ঘটক নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্রগুলো হচ্ছে- নাগরিক (১৯৫২), অযান্ত্রিক (১৯৫৮), বাড়ী থেকে পালিয়ে (১৯৫৮), মেঘে ঢাকা তারা ( ১৯৬০), কোমল গান্ধার (১৯৬১), সুবর্ণরেখা (১৯৬২), তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) ও যুক্তি, তক্কো আর গপ্পো (১৯৭৪)। ৎ

স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ (১৯৬৩), ফিয়ার (১৯৬৫), আমার লেনিন (১৯৭০) ও দুর্বার গতি পদ্মা (১৯৭১)।

ঋত্বিক ঘটকের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রগুলো হলো- তার মেয়ে সংহিতা ঘটক নির্মিত ‘নব নাগরিক’ (২০০৬) ও অনুপ সিং নির্মিত ‘একটি নদীর নাম’ (২০০১)।

কাহিনীচিত্রটি হচ্ছে কমলেশ্বর মুখার্জী নির্মিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (২০১৩)।

উদ্বোধনী দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রদর্শিত হবে ছবিগুলি।
 
চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটক
পূর্ব বাংলায় জন্ম নেওয়া এক ক্ষণজন্মা ভারতীয় চলচ্চিত্রকার, যিনি সারাজীবন বয়ে বেড়িয়েছেন দেশভাগের যন্ত্রণা। বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদপুরুষ এই চলচ্চিত্রকারের জন্ম ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর, ঢাকায়। এই চলচ্চিত্রকারের মৃত্যু হয় মাত্র ৫০ বছর বয়সে, ১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, কলকাতায়।

সংক্ষিপ্ত কর্ম জীবনে তিনি নির্মাণ করেছেন ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও বেশ কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। কিন্তু এই অল্প কয়েকটি শিল্পকর্মের মাধ্যমেই তিনি বাংলা চলচ্চিত্রকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। তার চলচ্চিত্রে যেমন ঘুরেফিরে এসেছে দেশভাগের যন্ত্রণা, তেমনি এসেছে বাংলার আবহমান সংস্কৃতি ও মিথ। ঋত্বিক ঘটককে তাই বলা চলে একজন পরিপূর্ণ বাঙালি চলচ্চিত্রকার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
এসএমএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।