ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

নজরুল, নবযুগ এবং আমার বাবা

মাহফুজা মোসলেহী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১১
নজরুল, নবযুগ এবং আমার বাবা

ছেলেবেলা থেকেই আমরা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে, তাঁর গান ও সৃষ্টির সঙ্গে পরিচিত হলেও পরিচিত নই তাঁর এক প্রিয় সহকর্মী খান মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন নামটির সঙ্গে। হ্যাঁ, তিনিই আমার বাবা।

তিনি ছিলেন ব্রিটিশ-বাংলার এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সাংবাদিক,  যিনি নজরুলের সময়ে ‘নবযুগ’ পত্রিকায় কাজ করতেন।

নতুন প্রজন্মের কেউ চেনেন না জাতীয় কবির সহকর্মী চল্লিশ দশকের সাংবাদিক এই খান মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীনকে। শুধু সাংবাদিকই নন তিনি, একাধারে একজন কবি, সাহিত্যিক ও গীতিকারও। বরাবরই প্রচারবিমুখ এই শিল্পী নিজেকে প্রচারের চেয়ে সৃষ্টিতে নিমগ্ন থাকতেই ভালোবাসতেন বেশি। ছিলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কবি কায়কোবাদ, সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ, কমরেড মুজফফর আহমদ, শিল্পী আব্বাস উদ্দীন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বেদার উদ্দীন, লেখক শিবরাম চক্রবর্তীর মতো বহু বরেণ্য ব্যক্তিত্বের স্নেহধন্য। কবি নজরুলসহ গুণী এসব লেখক-শিল্পীর সান্নিধ্যর নানা স্মৃতিকথা বলতে বলতে এখনো ব্যাকুল হয়ে পড়েন আমার বাবা।

আমরা জানি, নয় বছর বয়স থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করতে করতে একদিন বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে নিজের মেধার জানান দেন জীবনযুদ্ধে হার-না-মানা নির্ভীক সৈনিক নজরুল। ব্রিটিশ শৃঙ্খল ভেঙ্গে এ দেশের মানুষকে মুক্ত করতে গান, কবিতা, প্রবন্ধ, সাংবাদিকতা, রাজনীতির কোথায় নেই তিনি!  ঠিক একইভাবে শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগের সঙ্গেই আমার বাবা ধাবিত হতেন নজরুলের প্রতি। বাবার মুখেই শুনেছি, বরিশালের বাকেরগঞ্জের চাখার ফজলুল হক কলেজে পড়া অবস্থাতেই বাবার মেধায় মুগ্ধ হন বাংলার বাঘ এ কে ফজলুল হক। ঘনিষ্ঠতার এক পর্যায়ে দেশের কৃষক বাঁচানোর আন্দোলনসহ বাবাকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানান শেরে বাংলা। বাবা বিনয়ের সঙ্গেই শেরে বাংলার সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সাফ জানিয়ে দেন ‘রাজনীতিতে নয়, আমি নীরবেই শিল্পকে ভালোবেসে বেঁচে থাকতে চাই। চাই কলমের চোখের আঙুল দিয়ে এ দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরতে। এর পরপরই নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতা করার প্রস্তাব  দিয়ে বাবাকে ডেকে পাঠান শেরে বাংলা।

১৯৪৩ সালের মাঝামাঝি ‘নবযুগ’ পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে যোগদান করলেন আমার বাবা। নজরুল তখন সে পত্রিকার বার্তা সম্পাদক। তখন এর সম্পাদক মাওলা আহমদ আলী হলেও নজরুলই ছিলেন মূল সংগঠক ও নেতা। তার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে সবাই ছিলেন মুগ্ধ। নজরুলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এখনো আমি বাবার চোখে জল দেখি। এ বয়সেও তিনি স্মৃতি হাতড়ে বলে দিতে পারেন সেই সব দিনের নানা ঘটনা। তিনি দেখেছেন দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধ, ’৪৭-এর দেশভাগ, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রাম। আর তাই কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে কাজ করার স্মৃতি তাঁর মনের আয়নায় আজও জ্বলজ্বল করে। নজরুলের নেতৃত্বে নবযুগে তখন একদল তরুণ কাজ করতেন উচ্ছ্বাস আর আনন্দে। আমার বাবাও  সে সময়েরই টগবগে তরুণ। ‘নবযুগ’ পত্রিকায় নজরুলের সঙ্গে নিজের স্মৃতি হাতড়ে বাবা সেদিনও বললেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ কোনো রিপোর্ট এলেই নজরুল সেটিকে আমার কাছে এডিট করতে পাঠাতেন। একদিন সন্ধ্যার পর নিউজ রুমের দরজার কাছে এসে কবি দাঁড়িয়ে হঠাৎই আমাকে বলেছিলেন, তবে চললাম। আজও তার ভরাট কণ্ঠের শেষ কথাটি আমার কানে বেজে ওঠে। ’

এই সব স্মৃতি বাবাকে সারাজীবনই অস্থির করে রেখেছে।   এমন কথা বাবা প্রায়ই বলে ওঠেন। বলেন, ‘থেকে থেকেই মনে পড়ে,  নবযুগ পত্রিকায় কাজ করতে করতে দেখলাম, শেষ কথাটি বলে কবি সেই যে গেলেন, দু থেকে তিন দিন কবি আর অফিসে এলেন না! তিনি চলেই গেলেন। ’

আসলে নজরুল তার আগে থেকেই অল্প অল্প অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। বিভিন্ন শারীরিক-মানসিক বৈকল্য তখন বেশ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে, যা তাঁর আচরণ ও কাজে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হচ্ছিল। ফলে পেশাগত ক্ষেত্রে বাবা তাঁর সান্নিধ্য পেলেন মাত্র কয়েক মাস। তার কিছুদিন পর থেকে তো কবি নির্বাকই হয়ে গেলেন! এটিও বাবার অনেক বড় একটি মর্মবেদনা।       

নজরুলের অসুস্থতার কথা শুনে নবযুগের অন্য সহকর্মীদের মতো করেই বাবাও একদিন দেখতে গেলেন কবিকে। তখন নজরুল ইসলাম থাকতেন কলকাতার শ্যামবাজার এলাকায়। কিন্তু বাবাকে তখন বাসায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গেটে একজন বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি কি তাকে ভালোবাসেন? বাবা স্তব্ধ হয়েই হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়লেন। তিনি বললেন, ‘কবি তার কাছের মানুষদের দেখলে কেমন যেন হয়ে যান। তাই আপনি যদি কবিকে ভালোবাসেন তাহলে দয়া করে আর ভেতরে যাবেন না। ’ বাবা ফিরে এলেন মনোকষ্টে। বাবার কথা একটাই, ‘কবিকে তো আমি ভালোবাসি। আমার ভালোবাসা আর জানানো হলো না কবিকে। বাকরুদ্ধ হওয়া এই রোগেই কবি চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গেলেন, বাকশক্তি হারালেন। কী নবযুগ অফিস, কী অন্য কোথাও তারপর জীবিত অবস্থায় আমি আর কোনো দিনও কবিকে দেখিনি । ’ এভাবেই কবি নজরুলের স্মৃৃতি হাতড়ে কেঁদে ফেলেন বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বাংলা সাহিত্য ও সাংবাদিকতার এই শতবর্ষী মানুষটি।
তাকে নাতি বলে ডাকতেন কবি কায়কোবাদ। ক্ষুরধার লেখনীর কারণে ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাকে ‘ইয়াংগেস্ট জার্নালিস্ট’ বলে সম্বোধন করতেন। একা হলেই নজরুলের সঙ্গে সঙ্গে হাতড়ে ফেরেন সেসব স্মৃতিও।

চল্লিশের দশকে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় বাবার সাংবাদিকতা শুরু। ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি সাংবাদিকতা করেছেন। কাজ করেছেন কোলকাতায় দৈনিক আজাদ, দৈনিক নবযুগ, দৈনিক ইত্তেহাদ, গুলিস্তাঁ পত্রিকায়। দেশবিভাগের পর চলে আসেন বাংলাদেশে। রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন নিউ নেশন, বাংলাদেশ টাইমস ও অবজারভার পত্রিকায়। পটুয়াখালী থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক পায়রা’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন তিনি। প্রায় দশ বছর এ পত্রিকাটি বাবা সম্পাদনা করেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর পিরোজপুরে আম্বিয়া হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ওই হাসপাতালের স্বাস্থ্যবার্তা নিয়ে প্রকাশিত মাসিক ‘সেবা’ পত্রিকারও। একই সময়ে সম্পূর্ণ নিজের আর্থিক উদ্যোগে সম্পাদক হিসেবে তিনি বের করেন ‘সাপ্তাহিক অভিযাত্রী’ নামের আরেকটি পত্রিকা।

’৪২ সালের শেষ দিকের কথা। কোলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ের নিচতলায় সাহিত্যবিষয়ক আড্ডা হতো। সে আড্ডায় যোগ দিতেন কবি জসীমউদদীন, গায়ক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কবি আহসান হাবীব, আব্বাস উদ্দিনসহ বিখ্যাত কবি-সহিত্যিক-সাংবাদিক-গায়ক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। তরুণ ও উঠতি কবি-সাহিত্যিকরাও সে আড্ডায় যেতেন। তাদের হাত ধরে বাবা নিয়মিতই যেতেন সে আড্ডায়। এখানেই আমার বাবা দেশের বড় বড় কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের সান্নিধ্য লাভ করে নিজেকে শাণিত করেন। অন্যদিকে ইসলামী সাহিত্য সৃষ্টির অনুপ্রেরণা তিনি পেয়েছিলেন মাওলানা আকরাম খাঁর কাছে । কবিতা, প্রবন্ধ এবং জীবনীসহ সাহিত্যের নানা শাখায় কাজ করেছেন তিনি।

পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবা প্রথম কবিতা লেখা শুরু করেন।   সাহিত্যকে ভালোবেসে কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের অধিকাংশ সময়। শতবর্ষে এসেও অবিরাম চলছে তাঁর সাহিত্যচর্চা। তাঁর বহু কবিতা ও প্রবন্ধ সে সময়ের প্রধান পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। মাওলানা আকরাম খাঁ সম্পাদিত মাসিক ‘মোহাম্মদী’ পত্রিকায় নিয়মিত লিখেছেন তিনি।

বাংলা ১৩৫২ সালের ভাদ্র মাসের কথা। কায়কোবাদকে নিয়ে লেখা ‘মহাশ্মশানের কবি’ শিরোনামে পাঁচ পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রবন্ধ মাসিক মোহাম্মদীতে প্রকাশিত হলে সাহিত্যমহলে হৈচৈ পড়ে যায়। এ সময় ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁকে খুঁজে বের করেন। শহীদুল্লাহ এই তরুণ লেখকের লেখাটি ভীষণ পছন্দ করেন এবং তাকে খুব উৎসাহ দেন। পরে কায়কোবোদের সঙ্গে তিনিই তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন। কায়কোবাদ নিজের রচনাবলির কপি বাবাকে উপহার দেন।

কবি জসীমউদদীনের সঙ্গেও যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা ছিল বাবার। কোলকাতায় অবস্থানের সময় কণ্ঠশিল্পী আব্বাস উদ্দীনের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে সময় নজরুল ইসলামকে কেন্দ্র  করে বাংলা সাহিত্যের যে নতুন যুগের সূচনা হয়, তার অনুসারী হিসেবে কবি ফররুখ আহমদ, কবি আহসান হাবীব প্রমুখ কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকের সঙ্গে তিনিও সাংবাদিকতা ও সাহিত্যাঙ্গনে যোগ দেন। আবুল কালাম শামসুদ্দিন, মুজিবুর রহমান খান, আবুল মনসুর আহমদ প্রমুখ গুণী সাংবাদিকের সঙ্গেও তাঁর ব্যাপক ঘনিষ্ঠতা ছিল।

বাবা খান মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন একজন সমাজকর্মীও। ছাত্রজীবনেই তিনি নিজ এলাকায় বিভিন্ন  সমাজকল্যাণমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন। নিজ গ্রামে একটি পাঠাগার ও যুব সমিতি গঠন করেছিলেন। এলাকার একাধিক স্কুল-মাদ্রাসা ও মসজিদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত আছেন। শহুরে চাকচিক্য তাকে কখনও মোহিত করতে পারেনি। তাই সরকারি চাকরির সূত্রে বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে চাকরি করার পর নিভৃতচারী এই শিল্পী প্রকৃতি আর মায়ের টানে ফিরে গেছেন মফস্বলেই।

তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চারটি। দুটি কবিতা ও দুটি প্রবন্ধ। কবিতা ও গদ্যসহ অপ্রকাশিত বই রয়েছে প্রায় ২০টি। এর মধ্যে নজরুলকে নিয়ে রয়েছে একটি সুবিশাল কাজ। বাবা তাঁর জীবনে সফলতা এবং সম্মান পেয়েছেন প্রচুর। কিন্তু ব্যক্তি উদ্যোগে প্রকাশিত বইয়ের বাইরে কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রকাশনা সংগঠনের সহযোগিতা না পাওয়াতেই অপ্রকাশিত রয়ে গেছে তার ভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক গবেষণাধর্মী বেশ কটি পাণ্ডুলিপি। শেষ জীবনে তাঁর ইচ্ছে একটিই, মৌলিক সাহিত্য সংরক্ষণের পৃষ্ঠপোষকতা যারা করেন, এসব সাহিত্যসম্পদ বই আকারে প্রকাশের দায়িত্ব যেন নেন সেসব প্রকাশকরা।
                                                                 
১৯২১ সালে বর্তমান পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার বেতমোর গ্রামের সম্ভ্রান্ত খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন খান মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন। তার বাবার নাম আলহাজ বাহাউদ্দীন খান। মায়ের নাম সামরাত বানু। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা  শেষে  ১৯৪১ সালে ™ি^তীয় বিশ^যুদ্ধে রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভিতে কমিউনিকেশন অফিসার পদে যোগদান করেন। দেশ বিভাগের পর সেখান থেকে ফিরে এসে সচিবালয়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরকারি চাকরিতে কর্মরত ছিলেন। দক্ষতা ও মেধার কারণে কর্তৃপক্ষ বারবার তার চাকরির মেয়াদ বাড়ান। পরে ১৯৭৬ সালে পটুয়াখালী কালেক্টরেট অফিস থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে অবসর নেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিলেও চাকরি তাকে ছাড়েনি। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন পিরোজপুরের আম্বিয়া হাসপাতালে।

আত্মপ্রচারবিমুখ এই সাহিত্যিক ও সাংবাদিক এখনো থেমে নেই। সৃষ্টির পথচলায় এখনো নবীন তিনি। নজরুলের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে এখনো বাবা রাতভর নীরবে সাহিত্যসাধনা করেন। নজরুলের ওপর গবেষণা ছাড়াও গভীর রাত অব্দি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা দিক নিয়ে লিখে চলেছেন গবেষণাধর্মী বই। জীবনের শেষপ্রান্তে চলে এলেও আজও চিন্তায়, কর্মে তিনি চির নবীন। প্রাতঃভ্রমণ থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত তরুণদের মতোই চলে তার নানা কাজ। ছেলেবেলার মতোই এখনো একেকটি শব্দ জড়ো করে আমায় শেখান সঙ্গীত, শিল্প, সাহিত্য, সাংবাদিকতা।

জীবন ও সংস্কৃতির সব অঙ্গনে কেমনভাবে সত্যকে লালন করতে হবে, কেমনভাবে কুৎসিত সংস্কৃতিকে দূর করতে হবে সে মন্ত্র এখনো শিখে নিই আমার প্রতি বাবার পবিত্র বাৎসল্যবোধে উৎসারিত সহজাত বিনয়বোধ থেকেই।

লেখক : সংস্কৃতিকর্মী এবং একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক

                   
বাংলাদেশ সময় ১৯৫২, মে ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।