ঢাকা: বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে পহেলা বৈশাখ থেকে বসেছে ১০ দিন ব্যাপি বৈশাখী মেলা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন ও বাংলা একাডেমীর যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করেছে এ মেলার।
প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলে এ মেলা। মেলা শেষ হবে ২৩শে এপ্রিল।
আর সব শহুরে মেলা থেকে এটি একটু ভিন্নধর্মী এই মেলা। সবকিছুর মাঝে একটা গ্রাম গ্রাম ভাব।
রোববার সন্ধ্যায় টিএসসি পার হতেই কানে ভেসে আসে গানের সুর। বাংলা একাডেমির ভেতরে মেলা প্রঙ্গণে দেখা গেল নজরুল মঞ্চে বসেছে গানের আসর। গান পরিবেশন করছেন বিশিষ্ট শিল্পি নকুল কুমার।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় দেশ বরেণ্য শিল্পিরা রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, বাউল ও দেশের গানসহ বিভিন্ন ধরণের গান পরিবেশ করছেন। প্রতিদিন কেনাকাটর পাশাপাশি দর্শকদের বিনোদন দিতেই এই ব্যবস্থা।
পাশাপাশি গ্রামীণ ঐতিহ্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা কুটির শিল্পের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের হস্তশিল্প যে কাউকে আকর্ষণ করে।
মেলায় রকমারি পণ্যের মধ্যে আছে কাঁচা মরিচ আকৃতির কোল বালিশ, কুমড়ো সাইজের বালিশ। বাউলের একতারা, কাঠের ঝুড়ি, কাঠের হামানদিস্তা, কাঠের ঝাড়বাতি।
নারী উদ্যোক্তোদের নিপুণ হাতে গড়ে তোলা ওড়না, বিছানার চাদর, সোফার কুশনের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ চোখে মতার মতো।
কুষ্টিয়া থেকে আসা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেনের দোকানে বাঁশের তৈরি দেয়ালিকা, মুখোশ, আয়নার প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণও লক্ষণীয়।
সাজ্জাদ হোসেন জানান, কারো প্রতিকৃতি তৈরি করতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবেই তৈরি করে দেওয়া হয়।
গৃহস্থালী পণ্য ছাড়াও মেলায় তরুণীদের জন্য মাটির ও কাঠের তৈরি জুয়েলারির দোকানে ভিড় জমিয়েছিলো তরুণীরা।
‘শহরে থাকার কারণে গ্রামীণ ঐতিহ্য ভুলতে বসেছিলাম, কিন্তু বাংলা একাডেমির এ মেলায় এসে দেশের বিভিন্ন জায়গার কুটির শিল্প সহজে কিনতে পেরে ভালো লাগছে। ’ খুব আবেগের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন যাত্রাবাড়ি থেকে আসা জসিম-সেতু দম্পতি।
শুধু কি কেনাকাটা করলেই হবে? মেলায় আসলে মন্ডা-মিঠাই না থাকলে মেলার আনন্দটাই যে মাটি হয়ে যাবে। আর এজন্য মেলায় সোনারগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকানে ছিলো উপচে পড়া ভিড়।
শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে নাগরদোলা ও পুতুল নাচ।
ঢাকার ব্যাস্ত জীবনে এই মেলায় কেউ ঘুরে আসলে হয়তো মনে পড়ে যাবে গ্রামের শৈশবের সেই বর্ণময় দিনগুলোর কথা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১১