ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

তিনটি কবিতা | মুরাদুল ইসলাম

কবিতা/শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৪
তিনটি কবিতা | মুরাদুল ইসলাম

নড ও নৌকা বিষয়ক

আমি নড নগরীতে অভিশপ্ত নাবিক এক
যার সহায় সম্বল ছিলো একটিমাত্র খেয়া নৌকা
তা ডুবিয়া গিয়াছে গাঢ় চৈত্রের রোদে
আর আমি তোমার হস্ত স্পর্শ করিবার অন্তীম ইচ্ছায়
বর্ণ চিহ্ন মুছে যাওয়া কী বোর্ডের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে যাই
নির্বিকার
খটখট শব্দ তুলে ঝড়
জিউসের বর্জ্রদণ্ডের আঘাতে মুহুর্মুহু কেঁপে উঠে আসমান
আর ফজরের আজানের কালে
দুঃস্বপ্নের ইঞ্জিনিয়ারিং শেষে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়
যেন ঘুম হয় বিদীর্ণ খানখান।


তোমার বর্তমান অবস্থাকে মাথায় রেখে

আমাকে ছেড়ে যাবার পর
তুমি চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে এতই বেড়ে গেছো যে
এখন তোমার মুখের দিকে তাকাতে হলে আমার মাথা উচু করতে হয়
আর আমি ভুলে যাই স্কুলজীবনে শেখা ক্যালকুলাসের যাবতীয় সব সূত্র
শুনেছি ভূ-বিদ্যা কিংবা বায়োলজির কোনো এক অপঠিত অধ্যায়ে
রয়েছে তোমার চক্রবৃদ্ধির জন্মকাহিনী
ছাড়াছাড়াভাবে এবং খুব অস্পষ্ট।




আমার মাছি

আমার একটি পোষা মাছি
নিয়ত হতাশ থাকে
মুখ করে বেজার
আর
মাঝে মাঝে চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে ঘুরতে
বৃত্ত তৈরি করে
তারপর আরেকটি বৃত্ত
এভাবে করে যায় যতোক্ষণ না দিনান্তে
সূর্য জানায় শেষ বিদায়
আমার পোষা মাছি
আমার বিষণ্ন মাছি
সন্ধ্যাবেলা যখন রাত্রির হাতছানি
সে তখন উড়ে এসে জুড়ে বসে থাকে আমার হাতখানি
তারপর এঁকে যায় বৃত্তের পর বৃত্ত
মাঝে মাঝে কিছুক্ষণ থমকে বসে থাকে
মিছেমিছি জুঁই ফুলের গন্ধে আনমনা বৃক্ষের মতো
তখন আমি হাত নেড়ে জানিয়ে দেই, আছি
আমার পোষা বিবর্ণ মাছি

এরপর রাত্রি আসে
হয় গভীর থেকে আরো গভীর
আমি তখন অন্ধকারে লীন
মাছি তখন জোনাকের মতো
সবুজ আলো ছড়িয়ে উড্ডীন
রচনা করে চলে বৃত্ত এবং বৃত্ত
চক্রাকার সব গোলকধাঁধা
রঙ তাদের ধূষর, হরিৎ কিংবা সাদা

আমি যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো তার ভিতরে ঢুকে পড়ি
স্বভাবতই পাই না কোনো ঠাই
এবং আমি তলিয়ে যাই।



বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad