ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

নোবেলজয়ী লেখকের উপন্যাস

নিখোঁজ মানুষ | পাত্রিক মোদিয়ানো (১১) || অনুবাদ: মাসুদুজ্জামান

অনুবাদ উপন্যাস/শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৪
নিখোঁজ মানুষ | পাত্রিক মোদিয়ানো (১১) || অনুবাদ: মাসুদুজ্জামান অলঙ্ককরণ: মাহবুবুল হক

___________________________________

‘নিখোঁজ মানুষ’ [মিসিং পারসন, ১৯৭৮] এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতে নেওয়া পাত্রিক মোদিয়ানোর ষষ্ঠ উপন্যাস। যুদ্ধ মানুষকে কতটা নিঃসঙ্গ, অনিকেত, আত্মপরিচয়হীন, অমানবিক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে, এটি হয়ে উঠেছে তারই চমকপ্রদ আলেখ্য।

‘রু দে বুতিক অবসক্যুর’ শিরোনামে ফরাসি ভাষায় লেখা উপন্যাসটির নামের আক্ষরিক অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘অন্ধকার বিপনীর সড়ক’। ড্যানিয়েল ভিসবোর্ট ১৯৮০ সালে এটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। এর প্রধান চরিত্র ডিটেকটিভ গাই রোলান্দ। রহস্যময় একটা দুর্ঘটনার পর স্মৃতিভ্রষ্ট গাই তার আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধানে নামে। ধীরে ধীরে তার সামনে উন্মোচিত হতে থাকে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানরা প্যারি কব্জা করে নিলে বন্ধুদের কাছ থেকে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং নিখোঁজ হয়। বন্ধুরাও নানা দিকে ছিটকে পড়ে। সমগ্র উপন্যাসটি সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আসলে নিখোঁজ মানুষের গল্প। ১৯৭৮ সালে উপন্যাসটি অর্জন করে প্রি গোঁকুর্ত পুরস্কার। পাঠকদের উপন্যাসটি পাঠের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এখানে উল্লেখ্য যে, এর আগে মদিয়ানোর কোনো লেখা বাংলায় অনূদিত হয়নি। ফরাসি উচ্চারণ এবং কিছু বাক্যাংশের অর্থ উদ্ধারে সাহায্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ফরাসি ভাষার অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য্য। - অনুবাদক
___________________________________

১০ম কিস্তির লিংক


কিস্তি ১১
খুব দ্রুত হাঁটছেন ব্লান্ট এবং তাকে অনুসরণ করা আমার পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে উঠলো। তার সঙ্গে সঙ্গে আমার চলার গতিও বাড়িয়ে দিতে হলো। কে ব্রঁলিতে এসে পৌঁছালাম আমরা।  
“আমি, ওই যে দেখছেন, ওইখানে থাকি,” সিন নদীর অপর পাড়টা দেখিয়ে বললেন তিনি।
পোঁ বির-আকিমের দিকে আমরা পা বাড়ালাম।
“আমি আপনাকে খুব বেশি তথ্য দিতে পারবো না,” তিনি বললেন। “অনেক বছর আগে গে-র সঙ্গে আমার জানা-শোনা ছিলো। ”
নিরাপত্তার বোধ থেকে চলার গতিটা তিনি শ্লথ করে আনলেন। যতক্ষণ তার মনে হয়েছিলো কেউ তাকে ফলো করছেন, ততক্ষণ তিনি দ্রুত হাঁটছিলেন। অথবা আমাকে এড়ানোর জন্য ওইভাবে তাকে হাঁটতে হয়েছিলো।
“আমি জানতাম না যে গে’র কোনো ফ্যামিলি আছে,” তিনি বললেন।
“হ্যাঁ... তার ছিলো... জিয়োরজিয়াদজের দিক থেকে...”
“মাফ করবেন, আমি জানতাম না। ”
“ফ্যামিলিটা জিযোরজিয়াদের... তার দাদাকে সবাই জিয়োরজিয়াদ বলে জানেন। ...”
“আচ্ছা, তাই...”
তিনি থামলেন এবং সেতুর রেলিংটার ওর ভর দিয়ে দাঁড়ালেন। ওর মতো আমি কিছু করতে পারলাম না, ব্যাপারটা আমার কাছে অদ্ভুত মনে হলো। তার সামনে আমি তাই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। তিনি কথা বলতে নারাজ।
“আপনি জানেন... তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিলো?...”
“আমি জানি। ”
“কি করে জানলেন?”
“পুরানো কিছু কাগজপত্র ঘাঁটাঘাটি করতে গিয়ে জেনেছি। ”
“দু’জনেই নিউ ইয়র্কে একটা নাইট ক্লাবে কাজ করতাম। ...আমি পিয়ানো বাজাতাম... সেই আমাকে বিয়ে করার কথা বলে শুধু এই কারণে যে, সে আমেরিকা থাকতে চাইছিলো। ইমিগ্রেশনের লোকজন যাতে ঝামেলা না করে সেই জন্যই বিয়ে করতে চাওয়া...”
স্মৃতির অতলে ডুবে গিয়ে তিনি মাথাটা নাড়ালেন।
“অদ্ভুত একটা মেয়ে ছিলো সে। ওই ঘটনার পর লাকি লুসিয়ানোর সঙ্গে গে চলে যায়...সে যখন পাম আইল্যান্ডে কাজ করতো তখন থেকেই ওদের জানাশোনা ছিলো...”
“লুসিয়ানো?”
“হ্যাঁ, হ্যাঁ, লুসিয়ানো... আরাকানসাস থেকে লুসিয়ানো যখন গ্রেফতার হয় তখন সে তার সঙ্গে ছিলো... এরপর তার পরিচয় হয় এক ফরাসি ভদ্রলোকের সঙ্গে এবং আমি শুনেছি সেই লোকটির সঙ্গে সে ফ্রান্সে চলে যায়...”
তার দৃষ্টি কিছুটা নিষ্প্রভ হয়ে এলো। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন।
“আপনি জানেন, গে’র সম্পর্কে কথা বলতে পেরে আমার ভালই লাগছে...”
একটা মেট্রো ট্রেন ডান দিকের তীরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের মাথার ওপর দিয়ে অতিক্রম করে গেলো। এরপর দ্বিতীয় ট্রেনটি অন্য আরেকটা পথ ধরলো। ট্রেনের প্রচণ্ড শব্দে ব্লান্টের কণ্ঠ তলিয়ে গেলো। তিনি কী সব যেন বলছিলেন আমাকে, তার ঠোঁট নাড়া দেখে কী বলতে চাইছিলেন, তা শুধু অনুমান করতে পারি। “... সে-ই আমার জীবনের একমাত্র সুন্দরী নারী যার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিলো...”
টুকরো টুকরো এইসব কথাকে জোড়া লাগিয়ে যে অর্থ আমি উদ্ধার করতে পারলাম তা আমাকে দারুণ হতাশ করলো। এখানে, সেতুর মাঝামাঝি পৌঁছে, এই রাতে এমন একজন মানুষের সঙ্গে কথা বলছি, যাকে আমি জানতাম না, কিন্তু তার কাছ থেকেই কিছু তথ্য জানতে চাইছি। এই জানাটা আমার নিজেকে জানার জন্যই জরুরি। কিন্তু ট্রেনের শব্দে তার কথাগুলো শুনতে পেলাম না।
“আমরা কি আর কিছু দূর হাঁটতে পারি না?”
কিন্তু তিনি নিজের মধ্যে এতটাই ডুবে আছেন যে, আমার কথার কোনো জবাব দিলেন না। কোনো সন্দেহ নেই, কতকাল আগের কথা,  গে’ অরলভের স্মৃতি জেগে উঠছে তার মধ্যে। অরলভ সম্পর্কে তার যত স্মৃতি, সব একে একে ভেসে উঠছে আর তার মাথাটা নিশ্চয়ই সমুদ্রের হাওয়ার মতো পাক খাচ্ছে। তিনি যেখানে ছিলেন সেই সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
“আরও কিছু দূর যদি হাঁটতেন, আমার ভালো লাগতো। ”
“আপনি কি গে’কে চিনতেন? কখনও কি তার সঙ্গে দেখা হয়েছে?”
“না। সেই জন্যই তো তার সম্পর্কে জানতে এসেছি। ”
“সোনালি চুল… সঙ্গে সবুজ চোখ... তার সোনালি চুলের বাহার ছিলো অন্যদের থেকে একেবারেই আলাদা… কিভাবে তার বর্ণনা দেব?... অনেকটা ধূসর সোনালি বর্ণের...”
ছাইরঙা সোনালি বর্ণের ত্বক ও চুল ছিলো তার। আমার জীবনে তার ভূমিকা ছিলো অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার ছবিগুলো খুব ভালো করে দেখা দরকার। তাহলে সবকিছু আবার ফিরে আসবে। শেষ অব্দি তিনি যদি কোনো সূত্র ধরিয়ে দিতে না পারেন তাহলে এই কাজটিই করতে হবে। ওয়ালডো ব্লান্টকে যে আমি খুঁজে পেয়েছি, এও ভাগ্যেরই অংশ।
সেতুর ওপর থাকতে পারবো না বলে আমি তার হাত ধরলাম। কে দ্য পাসি ধরে এগুতে থাকলাম।
“আপনি কি তাকে আর কখনও ফ্রান্সে দেখেছেন?” আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম।
“না। আমি ফ্রান্সে পৌঁছানোর আগেই সে মারা যায়। সে আত্মহত্যা করেছিলো...”
“কেন?”
“সে প্রায়ই বলতো, বুড়ি হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক তাকে পেয়ে বসেছে...”
“তার সঙ্গে সর্বশেষ আপনার কবে দেখা হয়েছিলো?”
“লূসিয়ানোর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর। ওই ফরাসি লোকটির সঙ্গে সে দেখা করতো। সেই দিনগুলোতে আমাদের কয়েকবার মাত্র দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছিলো...”
“আপনি কি ওই ফরাসি লোকটাকে চিনতেন?”
“না। গে’ বলতো ফরাসি নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য তাকে সে বিয়ে করবে... নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য সে মরিয়া হয়ে উঠেছিলো...”
“কিন্তু আপনাদের তো তখন বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে?”
“হ্যাঁ হয়েছে... আমাদের বিয়ে ছয় মাস টিকে ছিলো... ইমিগ্রেশনের লোকজনকে থামিয়ে রাখার জন্য সময়টা একেবারে কম ছিলো না। তারা তাকে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করতে চাইছিলো...”
ব্লান্টের গল্পের সূত্রটা যাতে ছিঁড়ে না যায় সে জন্য আমাকে বেশ মনঃসংযোগ করতে হলো। মনঃসংযোগের কারণটা হলো, তার কণ্ঠটা ছিলো বিশেষভাবে কোমল আর নিচু।
“সে আমেরিকা ছেড়ে ফ্রান্সে চলে যায়... আত্মহত্যা করার কথা জানার পূর্ব পরযন্ত... আমি তাকে আর কখনও দেখিনি...”
“আত্মহত্যার কথাটা আপনি জেনেছিলেন কিভাবে?”
“গে’কে চিনতো এরকম একজন আমেরিকান বন্ধুর কাছ থেকে, ওই সময়ে তিনি ফ্রান্সে ছিলেন। তিনি খবরের কাগজের ছোট্ট একটা পেপার কাটিং পাঠিয়েছিলেন, তাতেই খবরটা ছিলো...”
“আপনি কি সেই পেপার কাটিংটা সংরক্ষণ করেছেন?”
“হ্যাঁ, সেটা আমার ঘরেই আছে, একটা ড্রয়ারে। ”
আমরা ত্রোকাদেরো গার্ডেনের দিকে এগিয়ে চলেছি। ঝর্নাটা আলোয় ঝলমল করছে আর ভীষণ ট্রাফিক জ্যাম। ঝর্নার সামনে এবং পোঁ দিয়েনায় নানান দলে বিভক্ত পর‌্যটকদের ভিড়। অক্টোবর মাসের এক শনিবারের সন্ধ্যা, কিন্তু তপ্ত বাতাসের কারণে পথচারীদের আনাগোনা চলছে, গাছগুলোর পাতাও ঝরে পড়েনি। মনে হলো বসন্ত কালের সপ্তাহান্তের মধ্যে বুঝি আছি।
“আমি আরও কিছুটা দূরে থাকি ...”
বাগানটা আমরা পেরিয়ে এলাম এবং ঘুরে এভিন্যু দ্য নিউ-ইয়র্কের দিকে হাঁটতে থাকলাম। সেখানে, বাঁধের বৃক্ষরাজির নিচে এলে স্বপ্নে যেমন হয়েছিলো, সেরকম একটা অস্বস্তিকর অনুভবের সৃষ্টি হলো। মনে হলো, যে জীবন আমার যাপন করার কথা, সেটা আমি যাপন করেছি, কিন্তু এখন এই শনিবারের ঈষদুষ্ণ বাতাসে একটা ভূত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। যে সম্পর্ক ভেঙে গেছে কেন আমি সেই সম্পর্ককে আবার ফিরিয়ে আনছি? যে পথ অনেক আগেই রুদ্ধ হয়ে গেছে, কেন ফিরে পেতে চাইছি সেই পথ? আর এই যে মোটাসোটা, গোঁফবিশিষ্ট ছোটখাট লোকটি, আমার সঙ্গেই হাঁটছে, তাকে বাস্তবের কোনো মানুষ বলে মনে হচ্ছে না।
“মজারই বটে, হঠাৎ করে আমেরিকায় যে ফরাসি লোকটির সঙ্গে গে’র জানাশোনা ছিলো, তার নামটা মনে পড়ে গেলো...”
“কি নাম তার?” অসহিষ্ণু কণ্ঠে আমি জিজ্ঞেস করলাম।
“হাওয়ার্ড... তার ডাক নাম... তার আসল নাম এটা নয়... একটু দাঁড়ান… হ্যাঁ, হাওয়ার্ড দ্য ধরনের কিছু...”
আমি থমকে দাঁড়ালাম আর তার শরীরের দিকে ঝুঁকে পড়ে ঘনিষ্ঠ হলাম।
“হাওয়ার্ড দ্য কি?”
“দ্য... দ্য... দ্য... লুজ। লু…উ…জ...”
হাওয়ার্ড দ্য লুজ... নামটা যেন চাবুক হানছে… দোআঁশলা ধরনের নাম... অর্ধেক ফরাসি... অথবা হিস্পানি...
“লোকটার প্রথম নামটা কি?”
“আমি জানি না...”
অসহায়ের ভঙ্গি করলেন তিনি।
“আপনি কি জানেন না শারীরিকভাবে লোকটা দেখতে কেমন ছিলো?”
“না। ” ৎ
গে, বৃদ্ধ জিয়োরজিয়াদজে, এবং যে মানুষটি আমি নিজেই বলে মনে করি, সেই ছবিটা তাকে দেখাতে পারি।
“আর ওই হাওয়ার্ড দ্য লুজ কি কাজ করতেন?”
“গে আমাকে বলেছিলো তিনি একটা অভিজাত পরিবারের সদস্য... কিছুই করতেন না। ”
ছোট্ট করে হাসলেন তিনি।
“আহ্, হ্যাঁ, আরেকটু দাঁড়ান তো... সব স্মৃতি ফিরে আসছে... লোকটা হলিউডে অনেক সময় কাটাতন... আর সেখানে, গে বলেছে, অভিনেতা জন গিলবার্টের বিশ্বস্ত বন্ধু...”
“জন গিলবার্টের বিশ্বস্ত বন্ধু?”
“হ্যাঁ... গিলবার্টের শেষজীবনের...”
এভিন্যু দ্য ন্যু-ইয়র্কের গাড়িগুলো দ্রুত ছুটছে, কিন্তু আপনি শুনতে পাবেন এমন কোনো শব্দ হচ্ছে না, আর এরই প্রভাবে আমার স্বপ্নময় অনুভূতিটা বেড়ে যাচ্ছে। পরস্পর জড়াজড়ি করে গাড়িগুলো চলছে, পৃথিবী পিচ্ছিল, পানির ওপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে। পোঁ দালমার একটু আগে ফুটব্রিজের ওপর আমরা এসে পৌঁছালাম। হাওয়ার্ড দ্য লুজ। এটা হতে পারে আমার নিজেরই নাম। হাওয়ার্ড দ্য লুজ। হ্যাঁ, এই ধ্বনিগুঞ্জন আমার ভেতরে কেমন যেন একটা আলোড়ন তুলছে, কোনো বস্তুর ওপর দিয়ে চাঁদের আলো যেমন ভেসে চলে, তেমনি করে কী যেন আমার ভেতরেও ভাসছে। যদি আমিই হই সেই হাওয়ার্ড দ্য লুজ, আমার লাইফস্টাইলের আসল কিছু দিক তাহলে আমি তাদের দেখিয়ে ফেলেছি। অনেক খ্যাতিমান আর নিবেদিতপ্রাণ পেশাজীবী মানুষ থাকা সত্ত্বেও আমি জন গিলবার্টের বিশ্বস্ত বন্ধু হয়েছিলাম।
মডার্ন মিউজিয়াম আর্ট-এ পৌঁছুবার আগে একটা সরু রাস্তা দিয়ে এগুতে থাকলাম।
“এই হলো সেই জায়গা যেখানে আমি বাস করি,” বললেন তিনি।
আমরা ঠিক যখন ওপরে উঠছি তখনই এলিভেটরের আলো জ্বালানো গেলো না, আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে ওঠা টাইম-সুইচের বাতিটাও অকেজো হয়ে গেলো। অন্ধকারে আমরা শুনতে পাচ্ছি হাসি আর গানের শব্দ।
এলিভেটর থেমে গেলো, আমি বুঝতে পারলাম পাশেই দাঁড়ানো ব্লান্ট ল্যান্ডিং গেটের হাতলটা খুঁজছেন। তিনি সেটা খুললেন আর আমি তাকে সেই গাঢ় অন্ধকারে ধাক্বা দিয়ে এলিভেটরটা ছেড়ে এলাম। বাড়িটার যে ফ্লোরে আমরা এসে পৌঁছুলাম, হাসি আর গান সেই ফ্লোর থেকেই ভেসে আসছে। ব্লান্ট একটা চাবি একটা তালায় ঢুকিয়ে মোচড় দিয়ে ঘোরালেন।

(চলবে)

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।