ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

নোবেলজয়ী লেখকের উপন্যাস

নিখোঁজ মানুষ | পাত্রিক মোদিয়ানো (১০) || অনুবাদ: মাসুদুজ্জামান

অনুবাদ উপন্যাস / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৪
নিখোঁজ মানুষ | পাত্রিক মোদিয়ানো (১০) || অনুবাদ: মাসুদুজ্জামান অলঙ্ককরণ: মাহবুবুল হক

___________________________________

‘নিখোঁজ মানুষ’ [মিসিং পারসন, ১৯৭৮] এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতে নেওয়া পাত্রিক মোদিয়ানোর ষষ্ঠ উপন্যাস। যুদ্ধ মানুষকে কতটা নিঃসঙ্গ, অনিকেত, আত্মপরিচয়হীন, অমানবিক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে, এটি হয়ে উঠেছে তারই চমকপ্রদ আলেখ্য।

‘রু দে বুতিক অবসক্যুর’ শিরোনামে ফরাসি ভাষায় লেখা উপন্যাসটির নামের আক্ষরিক অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘অন্ধকার বিপনীর সড়ক’। ড্যানিয়েল ভিসবোর্ট ১৯৮০ সালে এটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। এর প্রধান চরিত্র ডিটেকটিভ গাই রোলান্দ। রহস্যময় একটা দুর্ঘটনার পর স্মৃতিভ্রষ্ট গাই তার আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধানে নামে। ধীরে ধীরে তার সামনে উন্মোচিত হতে থাকে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানরা প্যারি কব্জা করে নিলে বন্ধুদের কাছ থেকে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং নিখোঁজ হয়। বন্ধুরাও নানা দিকে ছিটকে পড়ে। সমগ্র উপন্যাসটি সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আসলে নিখোঁজ মানুষের গল্প। ১৯৭৮ সালে উপন্যাসটি অর্জন করে প্রি গোঁকুর্ত পুরস্কার। পাঠকদের উপন্যাসটি পাঠের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এখানে উল্লেখ্য যে, এর আগে মদিয়ানোর কোনো লেখা বাংলায় অনূদিত হয়নি। ফরাসি উচ্চারণ এবং কিছু বাক্যাংশের অর্থ উদ্ধারে সাহায্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ফরাসি ভাষার অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য্য। - অনুবাদক
___________________________________

৯ম কিস্তির লিংক

কিস্তি ১০
৫.
পোস্টকার্ডে ‘ইংরেজদের ভ্রমণপথের’ গ্রীষ্মের ছবি। তাতে লেখা :
প্রিয় গাই, আপনার চিঠি যথাসময়েই পৌঁছেছে। এখানে একেকটি দিন, পরের দিনটির মতোই, কিন্তু নিস অত্যন্ত সুন্দর একটা শহর। আপনার এখানে আসা উচিত আর জায়গাটা ঘুরে দেখা দরকার। অনেকটা বিস্ময়কর, তবু যাদের আমি তিরিশ বছর দেখিনি অথবা যাদের মৃত ভেবেছিলাম, সেইসব মানুষকে দেখার জন্য রাস্তায় ছুটে যাচ্ছি। এভাবে পরস্পরকে দেখে আমরা অবাক হচ্ছি। নিস একটা ভূতপ্রেত আর দর্শনার্থীদের শহর, কিন্তু আমি এখনই ওদের মতো হতে চাই না।

যদি কোনো মহিলাকে পেতে চান তাহলে সবচেয়ে ভালো হবে ম্যাক মোহন বার্নাদিকে ০০-০৮ নম্বরে ফোন করা। নানা ধরনের লোকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। আপনাকে পরামর্শ দিতে পারলে তিনি খুশিই হবেন।

আশা করছি আপনাকে নিসে দেখতে পাব, প্রিয় গাই, আপনার সঙ্গে সবসময় আমার সম্পর্ক থাকবে উষ্ণ. আবেগময়,
হুতি

বিশেষ দ্রষ্টব্য : আপনি তো জানেন, এজেন্সির অফিসটা আপনার নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।

৬.
বিষয়বস্তু : অরলভ, মারা, ডাক নাম ‘গে’ অরলভ।
জন্মস্থান : মস্কো (রাশিয়া), ১৯১৪ সালে, কাইরিল অরলভ ও আইরিন জিয়োরজিয়াদজের কন্যা।
জাতীয়তা : রাষ্ট্রহীন। (মিস অরলভের বাবা-মা এবং তিনি নিজে রুশ উদ্বাস্তু হওয়ায় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাছে সোভিয়েত নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাননি)। মিস অরলভের একটা সাধারণ রেসিডেন্ট পারমিট আছে। মিস অরলভ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফান্সে এসেছেন ১৯৩৬ সালে। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি মিস্টার ওয়ালডো ব্লান্টের সঙ্গে বিবাহসূত্রে বৈবাহিক জীবনে প্রবেশ করেন, এরপর ঘটে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ।
মিস অরলভ একের পর এক যেসব জায়গায় বাস করেছেন সেগুলো হলো:
দি ওতেল শাতোব্রিয়ঁ, ১৮ রু দ্য সির্ক, প্যারি ৮
৫৩ এভিন্যু মোতেঈন, প্যারি ৮
২৫ এভিন্যু দ্য মারেশাল-লেওতে, প্যারি ১৬

ফ্রান্সে আসার আগে মিস অরলভ যুক্তরাষ্ট্রে একজন নৃত্যশিল্পী ছিলেন। প্যারিতে তার দৃশ্যমান কোনো আয় রোজগার নেই, যদিও বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন।

২৫ এভিন্যু দ্য মারেশাল-লেওতে, প্যারি ১৬ – এই ঠিকানায় বসবাসরত অবস্থায় ১৯৫০ সালে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে মিস অরলভ মৃত্যুবরণ করেন।

মিস্টার ওয়ালডো, তার প্রাক্তন স্বামী, ১৯৫২ সালের পর থেকেই প্যারিতে বসবাস করছেন। তিনি বিভিন্ন নাইটক্লাবে পেশাদার পিয়ানোবাদক হিসেবে কাজ করেন। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক।

জন্ম ১৯১০ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর, শিকাগোতে। তার রেসিডেন্ট পারমিট নম্বর ৫৩৪এইচসি৮২৮।
টাইপ করা এই পরিচিতির সঙ্গে জঁ-পিয়ের বার্নাদির একটা ভিজিটিং কার্ড, যাতে লেখা আছে :
“এই হলো প্রাপ্ত যাবতীয় তথ্য। শুভকামনা।
হুতিকে শ্রদ্ধা। ”

৭.
সামনে কাচের দরোজা, তাতে লেখা, “হিলটন হোটেলের বারে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯টা পরযন্ত ওয়ালডো ব্লান্টের পিয়ানো বাদন শুনুন। ”
পানশালাটা লোকে ঠাসা, সোনালি ফ্রেমের চশমা পরিহিত জাপানির টেবিলে খালি আছে একটামাত্র আসন। আমি যখন ঝুকে পরে তাকে জিগ্যেস করলাম বসতে পারি এবং সত্যিই যখন বসে পড়লাম, তখনও তিনি খেয়াল করেননি সত্যি সত্যি কী বলতে চাইছি।

আমেরিকান আর জাপানি খদ্দেররা ভেতরে ঢুকছেন, একে অন্যকে সম্ভাষণ জানাচ্ছেন এবং উঁচু থেকে আরও উঁচু স্বরে কথা বলছেন। টেবিল ঘিরে তাদের প্রায় সবাই দাঁড়িয়ে। কারুর হাতে হাতে গ্লাস, কেউ কেউ চেয়ারে ঠেস দিয়ে বা হাত রেখে ঘন হয়ে বসে আছেন। এমনকি এক তরুণীকে দেখা গেল শাদা চুলের একটা লোকের হাঁটুর ওপর বসে আছেন। ওয়ালডো ব্লান্ট প্রায় পনেরো মিনিট দেরি করে পৌঁছালেন এবং পিয়ানোর সামনে বসে গেলেন। গোলগাল ছোটখাট মানুষ, চুল তার প্রায় নিঃশেষের পথে, সরু গোঁফ। পরেছেন ধূসর রঙের একটা স্যুট। প্রথমে, লোকজন যেসব টেবিলকে ঘিরে জড়ো হয়ে আছেন, সেদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে একনজর দেখে নিলেন। ডান হাত দিয়ে পিয়ানোর কী-তে আঙুল ঠুকলেন এবং নিরুদ্দিষ্টভাবে কয়েকটা সুর বাজালেন। আমি বসেছি কাছের একটা টেবিলে।

তিনি একটা সুর তুললেন, আমার মনে হলো সেই চেনা সুরটাই বাজাচ্ছেন, “পুরানো প্যারির নদীর ধারে। ” কিন্তু চারদিকে কথা আর হাসির এত হুল্লোড় চলছে যে, পিনানোর কাছে বসেও গানটা প্রায় শোনাই গেল না। সুরটার সব স্বরলিপিও আমি ঠিক ঠিক ধরতে পারছিলাম না। অবিচলভাবে তিনি বাজিয়ে চলেছেন, বসেছেন ঋজু হয়ে, মাথাটা নিচু। তাকে দেখে আমার করুণা হলো : আমার ধারণা, জীবনের একটা সময়ে তিনি যখন পিয়ানো বাজাতেন সবাই তা শুনতো। এরপর, এই একই বাজনার সুরে সবাই এতটা অভ্যস্ত হয়ে গেছেন যে এই সুর এখন আর কাউকে টানে না। গে অরলভের নামটা বললে কী প্রতিক্রিয়া হবে তার? এই নামটা কী যেরকম নিস্পৃহভাবে তিনি এখন পিয়ানো বাজাচ্ছেন, সেই অবস্থাতেও কি তাকে সাময়িকভাবে বিস্ময়ে অভিভূত করে দেবে? নাকি এসব এখন ওই স্বরলিপির মতোই অর্থহীন তার কাছে, যে স্বরলিপি এখন সামান্য কথোপকথনের গুঞ্জনও থামাতে পারে না।

ধীরে ধীরে পানশালাটা শূন্য হয়ে এলো। শুধু রয়ে গেল সোনালি রিমের চশমা পরা সেই জাপানি লোকটা, আমি আর সেই তরুণী. যাকে আমি দেখেছিলাম শাদা চুলঅলা ভদ্রলোকের কোলে বসে থাকতে। এখন মেয়েটিকে দেখতে পাচ্ছি একটা মোটা, লালমুখো পুরুষ, যার পরনে হালকা নীল স্যুট, তার পাশেই বসে আছে ... ওরা জর্মান ভাষায় কথা বলছে। ওয়াল্ডো ব্লান্ট জোরে জোরে আমার জানা একটা কোমল সুর বাজাচ্ছেন।

তিনি আমাদের দিকে ঘুরে তাকালেন।

“ভদ্রমহোদয় ও ভদ্র মহিলাগণ, আমি কি আপনাদের পছন্দ মতো কোনো বিশেষ সুর বাজাবো?” ঈষৎ মার্কিন উচ্চারণে ঠাণ্ডা গলায় তিনি জিজ্ঞেস করলেন।

আমার পাশে বসা জাপানি লোকটা ভাবলেশহীন। তিনি নিশ্চল, মুখটা মসৃণ, আমি ভয় পাচ্ছিলাম সামান্য বাতাসের ঝাপটাতেই হয়তো চেয়ার থেকে পড়ে যাবেন। তিনি তো মদ্যপানের পর এখন একটা ধূপের গন্ধে সুবাসিত শবমাত্র।            

“সাগ ভারুম,” তরুণীটি পেছন থেকে কর্কশ গলায় বললেন।

ব্লান্ট সামান্য সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লেন এবং “সাগ ভারুম” বাজাতে থাকলেন। বারের আলোটা ক্ষীণ হয়ে জ্বলছে। অনেক সময় নাচঘরে প্রথমে ধীরে ধীরে পা ফেলার সময় এমনটা করা হয়। দম্পতির একজন আরেক জনকে চুমু খাওয়ার সুযোগ নিল এবং তরুণীর বাহু মোটা, লালমুখো লোকটার শার্টের ওপর সরে সরে যেতে থাকলো। কখনও তার হাতটা নেমে এলো আরও নিচে। জাপানি সোনালি ফ্রেমের চশমাটা চকচক করে উঠলো। পিয়ানোতে ব্লান্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে থেকে থেকে বিমুগ্ধ সুর তুললেন : “সাগ ভারুম’ বাজাবার জন্যে তার আঙুলগুলো নিরন্তর সক্রিয় থাকাটা জরুরি হয়ে পড়লো।

কী ভাবছেন তিনি এখন? তার পেছনে, একজন মোটাসোটা লালমুখো লোক, সোনালি চুলের উরুতে আঙুল ঠুকে চলেছেন এবং একজন ধূপের দ্বারা সুবাসিত জাপানি কয়েক দিন ধরে হিলটন বারের চেয়ারে বসে আছেন। আমি নিশ্চিত, কোনো কিছুই তিনি ভাবছেন না। তিনি ঢুকে আছেন অনপেক্ষ কুয়াশার ভেতরে, যে কুয়াশা ক্রমশ গাঢ় থেকে আরও গাঢ়ও হচ্ছে। আমার কি উচিত হবে সেই কুয়াশার ভেতরে সেঁধিয়ে যাওয়া মানুষটাকে টেনে তোলা? জীবনের বেদনাবিধূর কিছু ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য জোর করা?

কোনো একটা ঘরের সন্ধানে সোনালি চুলের নারীকে নিয়ে মোটা লালমুখো লোকটা পানশালা ত্যাগ করলো। লোকটা মেয়েটাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে আর মেয়েটা প্রায় ছিটকে পড়ে যাচ্ছিল, এমন অবস্থা। পানশালায় এখন আছি আমরা দুজন, জাপানি লোকটা আর আমি।
ব্লান্ট আবার আমাদের দিকে ঘুরে তাকালেন এবং তার ঠাণ্ডা গলায় বললেন:
“আপনারা কি আমার কাছ থেকে বিশেষ কিছু শুনতে চান?”
জাপানিটা নিশ্চল।
“আমার প্রেমের কী কিছু অবশিষ্ট আছে,” প্লিজ এইটা বাজান, বললাম আমি।

তিনি অবাক করা ধীর গতিতে সুরটা বাজাতে থাকলেন। সুরটা যেন আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, আটকে যাচ্ছে কোনো বদ্ধ জলাশয়ে, সৃষ্টি করতে পারছে না মুক্ত সুরপ্রবাহ। মাঝে মাঝে তিনি থামছেনও, যেভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে ক্লান্ত কোনো পরিশ্রান্ত পরিব্রাজক। তিনি তার ঘড়ির দিকে তাকালেন আর সঙ্গে সঙ্গে পিয়ানো ছেড়ে উঠে পড়লেন, মাথা ঝুকিয়ে আমাদের উদ্দেশে বললেন:
“ভদ্রমহোদয়গণ, ন’টা বাজে। শুভরাত্রি। ”

চলে গেলেন তিনি। ধূপের গন্ধে সুবাসিত জাপানি ভদ্রলোককে শবাগারে রেখে আমি তার পেছন পেছন যেতে থাকলাম। করিডোর ধরে তিনি হাঁটতে থাকলেন আর পরিত্যক্ত পানশালাটা অতিক্রম করে যেতে থাকলেন। একটু এগিয়ে আমি তাকে ধরে ফেললাম।

“মিস্টার ওয়ালডো ব্লান্ট? ... আমি আপনার সঙ্গে একটু কথা বলতে চাই। ”
“কি কথা বলতে চান?”
তিনি শিকারির শ্যেন দৃষ্টিতে আমাকে দেখলেন।
“একজন মানুষ সম্পর্কে কথা বলতে চাই যাকে আপনি চিনতেন ... এক নারী, নাম গে। গে অরলভ ...”
পানশালার মাঝামাঝি জায়গায় ক্ষণিকের জন্য থামলেন তিনি।
“গে …”
যদিও একটা প্রোজেক্টর থেকে আসা তীব্র আলোয় তার মুখটা ধাঁধিয়ে যাচ্ছিল তবু তিনি ঘুরে তাকালেন্।
“আপনি ... আপনি গে-কে জানতেন?”
“না। ”
আমরা হোটেলটা ছেড়ে এলাম। জাঁকালো ঝলমলে সন্ধ্যায় ট্যাক্সি ধরার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন সবুজ অথবা ধুসর নীল শাটিনের ড্রেস এবং গারনেট কালারের ডিনারের জ্যাকেট পরা অসংখ্য নারী-পুরুষ।  
“আমি আপনাকে কোনো সমস্যায় ফেলতে চাই না ...”
“না, আপনি আমাকে তো সমস্যায় ফেলেননি,” ধরা গলায় বললেন তিনি। “কত দিন পরে আমি গে’র কথা শুনছি ... কিন্তু আপনি কে?”
“আমি তার কাজিন। আমি ... আমি তার সম্পর্কে আপনার কাছ থেকে কিছু জানতে এসেছি ...”
“অল্প কিছু জানতে চান?”
হাতের আঙুল দিয়ে তিনি কপালের দুপাশটা ঘষতে থাকলেন।
“আপনি কী জানতে চান?”
আমরা একটা সরু রাস্তার দিকে বাঁক নিলাম, এই রাস্তাটা সোজা হোটেল আর সিন নদীর দিকে চলে গেছে।
“আমাকে বাসায় পৌঁছুতে হবে,” বললেন তিনি।
“আমি আপনার সঙ্গে হেঁটে হেঁটেই কথা বলবো। ”
“ও ... তাহলে আপনি গে’র কাজিন, সত্যি তো?”
“হ্যাঁ। ওর পরিবার গে সম্পর্কে কিছু কথা জানতে চায়। ”
“সে তো অনেক দিন হলো মারা গেছে। ”
“আমি জানি। ”

(চলবে)



বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।