ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

অমর একুশে বক্তৃতায় গোলাম মুরশিদ

প্রযুক্তির সাহায্যে ভাষাকে আরও সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১১

ঢাকা: ইতিহাসবিদ ও গবেষক অধ্যাপক গোলাম মুরশিদ বলেছেন, ‘আমাদের প্রিয় মাতৃভাষাকে আমাদের পূর্বসূরিরা এক গৌরবোজ্জ্বল অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছেন। ভুসুকু পা থেকে আরম্ভ করে আমাদের তরুণতম কবি-সাহিত্যিকরা সমৃদ্ধ করেছেন আমাদের ভাষা এবং সাহিত্যকে।

নানা দিকে ডালপালা মেলে আমাদের বাংলা এখন মহীরূহের মতোই বিশাল আকার লাভ করেছে, লাভ করেছে অসামান্য সৌন্দর্য। ’

সোমবার বিকেলে মহান ভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে বইমেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত ‘অমর একুশে বক্তৃতা-২০১১’-এ ‘বাংলা ভাষা: আজকের ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘একুশ শতকের গোড়ায় এসে আজ নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি আমরা। সে চ্যালেঞ্জ থেকে আমরা নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতে পারব না। সেটা যে বাঞ্ছনীয় তা-ও নয়। বরং আমাদের উচিত আধুনিক প্রযুক্তিকে দু’হাত বাড়িয়ে গ্রহণ করা এবং তাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ভাষাকে আরও সমৃদ্ধ করা। ’

গোলাম মুরশিদ আরও বলেন, ‘গত প্রায় আড়াইশ বছরের ইতিহাস আলোচনা করলেও আমরা দেখতে পাই, বাংলা ভাষার উন্নতিতে প্রযুক্তি একটা অত্যন্ত মূল্যবান ভূমিকা পালন করেছে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার দায়িত্ব আজ বিশেষ করে বর্তেছে আমাদের তরুণ প্রজন্মের ওপর। ’

জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

কবীর চৌধুরী বলেন, ‘মনের ভাব প্রকাশ ও গোপন করার দ্বিমুখী মাধ্যম হলো ভাষা। অধীনস্থ ুদ্রজাতিগোষ্ঠীর ভাষা আয়ত্ত করার প্রবণতা থেকে এটা নিঃসন্দেহে উপলব্ধি করা যায় যে, ভাষার শক্তি অসীম। ’

তিনি বলেন, ‘আলোচ্য প্রবন্ধে প্রমিত বাংলা বানানের নানা ত্রুটি দূর করার বিভিন্ন উপায় খুঁজে পাওয়া যাবে। বাংলা ভাষার মান রার্থে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধের সারমর্ম চেতনায় ধারণ করে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হবে। ’

স্বাগত বক্তৃতায় শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘বাংলা ভাষায় একই বিষয়কে রূপক বা উপমার মাধ্যমে নানা আঙ্গিকে প্রকাশের বৈচিত্র্য লণীয়। এরূপভাবে বাংলা ভাষা ক্রমশ প্রসার লাভ করছে। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষার গঠনরীতি অনেক ভাষার চেয়ে আধুনিক, বিজ্ঞানসম্মত ও উন্নত। যদিও বর্তমানে প্রমিত বাংলা ব্যবহারে নানা ত্রুটি পরিলতি হচ্ছে। বাংলা ভাষার সুষ্ঠু বিকাশের জন্য প্রমিত বাংলার এসব প্রচলিত ত্রুটি দূর করা প্রয়োজন। ’

একুশে ফেব্রুয়ারি স্মরণে মাসব্যাপী এ বইমেলায় সোমবার ছিল আরও কিছু আয়োজন। মূলমঞ্চে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত স্বরচিত কবিতা পাঠের আসরে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় দেড়শ কবি অংশ নেন। কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সভাপতিত্বে আসরে স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমীর সচিব মো. আলতাফ হোসেন।

দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলা একাডেমী এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের যৌথভাবে আয়োজিত ``Creative Writing and Translation`` শীর্ষক কর্মশালার ফলাফল প্রদর্শন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পী কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী, লায়লা আফরোজ এবং ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘কথা’ আবৃত্তি পরিবেশন করে। দেশ ও ভাষার গান পরিবেশন করেন শিল্পী আবদুল জব্বার, শাহীন সামাদ, কল্যাণী ঘোষ, মলয় কুমার গাঙ্গুলি, ডালিয়া নওশিন, ফকির আলমগীর, বুলবুল মহলানবীশ, শিবু রায়, রাজিয়া সুলতানা মুন্নী, ফকির শাহাবুদ্দিন, আশরাফ উদাস, অনামিকা ত্রিপুরা, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, মেহেদী হাসান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।