ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বইমেলায় সেমিনার

‘রবীন্দ্রসংগীত শুধু সুর-কাব্য নয়, এক অমীয় ধারা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১১

ঢাকা: ‘রবীন্দ্রনাথ শুধু কবি নন, দার্শনিকও। তার দর্শন সমাজের বিদ্যমান কালিমা দূরীভূত করে এগিয়ে নেওয়ার।



বৃহস্পতিবার, অমর একুশে বইমেলার দশম দিনে বিকালে মূলমঞ্চে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতাকালে সাবেক প্রধান বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলাম এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রসংগীত শুধু সুর-কাব্য নয়, এক অমীয় ধারা। রবীন্দ্রসংগীতের আবেদন নিজের অন্তরকে দেখার, নিজের মনকে গভীরভাবে অনুভব করার। এটা পারলে সত্যিকার অর্থে একজন মানুষ হয়ে ওঠা সম্ভব। ’

অনুষ্ঠানে ‘রবীন্দ্রনাথের গান: ললিতকলার অমৃত’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপাস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. নুরুল আনোয়ার।

প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ তার ভাবকে যে রূপের বাঁধনে বাঁধতে চেয়েছেন তা কথা ও সুরের পাকে তৈরি। বাঙালির স্বভাবে কাব্যবিহীন সুর শোনা সহজাত নয় বলে তার পিপাসা মেটাতে কেবল সুরই যথেষ্ট নয়, সুরের সঙ্গে উপযোগী বাণীও প্রয়োজন। সে কারণেই রবীন্দ্রনাথ তার কাব্যে যথার্থ ভাব প্রকাশ করতে রাগরাগিনীর প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গে অন্য রাগে বা সুরে প্রবেশ করেছেন। কথা, সুর ও ছন্দের এই বিস্ময়কর সমন্বয় সাধনই রবীন্দ্রনাথের শিল্পীসত্তার প্রকাশ, যাকে বলা হয় ‘রাবীন্দ্রিকতা’। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথের গান এক অনন্য সূক্ষ্মতা ও শ্রেষ্ঠতায় অধিষ্ঠিত। তাই রবীন্দ্রসংগীত বিনষ্ট হওয়া মানেই বাঙালির আত্মস্বরূপের মৃত্যু। ’

আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের অধ্যাপক মৃদুল কান্তি চক্রবর্তী বলেন, ‘হাজার বছর ধরে বাংলাগান একরৈখিকভাবে বিকশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ রাগ, পাশ্চাত্য সংগীত ও লোকসংগীতের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র ধারা প্রবর্তন করেছিলেন। তার গান আমাদের আত্মার গান, আমাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, উত্তাপ-উদ্দীপনায় ভরা সুরবৈচিত্র্যময় এক নান্দনিকতার অনুভব। তাই রবীন্দ্রসংগীতের আবেদন মননশীলতার, মানস গঠনের। ’

চট্টগ্রামের শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ফুলকি’র অধ্য শীলা মোমেন বলেন, ‘সংগীত ছাড়া চিত্তের খোরাক হয় না, আত্মার উন্নতি হয় না, চেতনার প্রসার ঘটে না। আর রবীন্দ্রসংগীত চর্চার মাধ্যমেই আমরা আমাদের বাঙালিসত্তা লালন করতে পারি। বাঙালি মানসকে সত্যিকারভাবে উপলব্ধি করতে পারি। তাই আমাদের রবীন্দ্রনাথের গান চর্চা করা ও হৃদয়ে ধারণ করা উচিত। ’

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী কাজী আরিফ। রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন বুলবুল ইসলাম, মহাদেব ঘোষ, নন্দিতা ইয়াসমিন, ছায়া রাণী কর্মকার, অনুপম কুমার পাল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।