ঢাকা: ভালো পরিবেশ, ছিমছাম পরিকল্পিত স্টল বিন্যাসে এবারের অমর একুশে বইমেলা বেশ প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। প্রথম দু’দিনের ধুলোর দাপটও তৃতীয় দিন থেকে কমে আসে।
তবে দশম দিনে এসে বৃহস্পতিবার একটা অভিযোগ শোনা গেল ক’জন ভুক্তভোগীর কণ্ঠে। তাদের অভিযোগ- মেলা প্রাঙ্গনের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি আর তাতে সৃষ্ট কাদা নিয়ে। এ কাদাপানির কারণে বিব্রতকর বিড়ম্বনায়ও পড়ে ক্ষিপ্ত ও বিরক্ত হতে দেখা গেছে অনেককে। অথচ গত ক’দিন কাদার যন্ত্রণাটি তেমন ছিল না।
বৃষ্টি-বাদল নেই তাও কেন কাদা? এ প্রশ্নে উত্তর মিললো... ধুলো বন্ধ করতে ছেটানো পানিতেই এ কাদা।
রবি ঠাকুরের জুতা আবিষ্কারের দুটি চরণ মনে পড়ে গেলো ‘..... ধুলারে মারি করিয়া দিলো কাদা!’
মেলা ঘুরে দেখা যায়, আগামী প্রকাশনী সামনের রাস্তার মাঝখানে পানি জমে আছে। পাঞ্জেরীর স্টলের সামনেও একই অবস্থা। অ্যাডর্ন পাবলিকেশনের সামনে ও ধ্রুবপদের বাম পাশেও অনেকটা জায়গাজুড়ে পানি। এখানে একটি বড় অংশ ছাড়াও আশপাশে আরও তিনটি ছোট ছোট অংশ ছিল। অন্যপ্রকাশের সামনে খোলা জায়গাটুকুর মাঝখানেও পানি।
খিলক্ষেতের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আতিক দর্জির পা পড়ে গিয়েছিল পানিতে। আর তাতে পানি ছিটকে পড়ে তারই বন্ধু গোড়ান থেকে আসা আরেক ব্যবসায়ী মরিযাদ হারুনের গায়ে।
বিরক্ত আতিকের প্রশ্ন- ‘মেলার লোকজন এগুলো দেখে না না-কি? এতো পানি জমে থাকে কিভাবে?’ উত্তরে হারুনের উপদেশবাণী- ‘দেখে হাটাও উচিত ছিলো নয় কি?’
কাদাপানিতে পড়ে জুতো ও সাদা সেলোয়ারের কিছু অংশ ভিজে যাওয়া এক তরুণীর প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে নাম জানতে চাইতেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন।
সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তার সঙ্গে থাকা আরেক তরুণী বললেন, ‘এই কাদার কথা একটু লেইখেন ভাই’।
পানিতে পা দেওয়া এক তরুণ লেখকের মতে, মেলার পরিবেশগত সৌন্দর্য্যে সামান্য কিছু জায়গার জন্য দাগ পড়ছে। এ নীচু জায়গাগুলোতে সামান্য মাটি ফেললেই হয়তো পানি জমতো না, অন্য জায়গাগুলোর মতো শুকনো থাকতো।
বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলা একাডেমীর পরিচালক শাহিদা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, ‘যেখানে ধুলো বেশি থাকে সেখানে একটু বেশি পানি ঢালা হয়। কিন্তু কোথাও পানি জমে থাকার কথা নয়। আমাদের পর্যবেক্ষণ টিম এমন কিছু পেলে সঙ্গে সঙ্গে এর সমাধান করে থাকে। ’
এদিকে, বৃহস্পতিবারও মেলা বেশ জমজমাট ছিল। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই বিক্রি হয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ৯৫টি।
বিকালে মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানের বিষয় ছিল ‘রবীন্দ্রনাথের গান : ললিতকলার অমৃত’। একই মঞ্চে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ১৬টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন।
এদিকে, শুক্রবার সকাল ৯টায় মূল মঞ্চে শুরু হতে যাচ্ছে শিশু-কিশোরদের সংগীত প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব। আর ছুটির দিন হিসেবে বেলা ১১টা থেকেই মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১১