ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন জাতের বারোমাসি আমে ব্যাপক সাড়া

এ কে এস রোকন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২১
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন জাতের বারোমাসি আমে ব্যাপক সাড়া স্যান্ডি আম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বারোমাসি আমের একটি নতুন জাতের দেখা মিলেছে। আম গাছের মালিক চারা লাগানোর সময় এর নাম না জানলেও কৃষি বিশেষজ্ঞরা এ জাতটির নাম ‘স্যান্ডি’ বলে জানিয়েছেন।

 

আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের রোকনপুর গ্রামের আমচাষি নাজমুল হকের জমিতে এ জাতের আম পাওয়া গেছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, বছরের প্রতিদিনই এ জাতের গাছগুলোতে মুকুলের দেখা মেলে। বাজারে মৌসুমের সময় যে সমস্ত জাতের আম পাওয়া যায় সেগুলো স্বাদের দিক থেকে অনন্য। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ে এ আমগুলো পাওয়া যায়।  

বারোমাসি আমের মধ্যে কাটিমন ও বারি-১১ আম অন্যতম। তবে বর্তমানে এ জাতের আম বারোমাসি হলেও সম্পূর্ণ আলাদা জাতের। কারণ এর ফলন খুব বেশি। এ আমের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একসঙ্গে গাছে গুটি ও মুকুল ধরে। এক একটি থোকায় একাধিক আম থাকায় ফলন অনেক বেড়ে যায়। ক্ষেত্র বিশেষে এ জাতের আমের থোকায় ৮-১০টি করেও আম দেখা যায়।   

আমচাষি নাজমুল হক বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে আমার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বিদেশি জাতের এ গাছের চারা পেয়েছিলাম। এ গাছগুলো থেকে আমি আম ও এ গাছের চারা তৈরি করে বিক্রি করে যাচ্ছি। একটি চারা ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করি। এখন পর্যন্ত এই গাছগুলোর নাম আমার জানা নেই। তবে কৃষি অফিস এ আমের নাম দিয়েছে ‘স্যান্ডি’। গাছগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- প্রতিদিনই মুকুল আসে, একটি থোকায় অনেকগুলো আম ধরে, আমের ভেতর আঁশ নেই, খেতেও খুব সুস্বাদু এবং মিষ্টি। এর এক একটির ওজন হয় ৫০০ থেকে ৬৫০ গ্রাম। আমের চামড়া খুব পাতলা হলেও সেটিও অনেক মিস্টি। আম পরিপক্ব হয়ে হলুদ রং হলে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে।  

তিনি আরো বলেন, আমগুলো পরিপক্ব হতে ক্ষিরসাপাত ও গোপালভোগ আমের মত সময় লাগে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে বারোমাসি এ জাতের আম এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সীমা কর্মকার জানান, কৃষক নাজমুল হকের বাগানে যে বৈশিষ্ট্যের আমগুলো দেখেছি এর আগে আমি তা দেখিনি। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, একটা থোকায় লিচুর মতো অনেকগুলো আম ধরে। আর প্রতিদিনই মুকুল আসে। একটি মুকুল ভেঙে ফেললে সেটি আবার হয়। আমচাষির ভাষ্যমতে আমরা ধারণা করছি ও বিভিন্ন বই-পুস্তক পড়ে জানতে পেরেছি এটি ‘স্যান্ডি’ আমের জাতের মতো।

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে এসে আমচাষি নাজমুল হক পরীক্ষামূলকভাবে গাছের চারাটি রোপণ করে ভাল সাড়া পেয়েছেন। আমের ফলন ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে স্থানীয়ভাবে এ আমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্যান্ডি’। আমচাষিরা এ জাতের আম চাষ করলে ভাল ফলাফল পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ জাতের আম চাষে চাষিরা আগ্রহ প্রকাশ করলে আমচাষিদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।