ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

‘এত কম দামে পাট বিক্রি করে পোষায় না’

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯
‘এত কম দামে পাট বিক্রি করে পোষায় না’ মুন্সিগঞ্জ জেলায় পাট চাষ । ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: ‘এবার পাটের দাম কম। গত তিন মাস ধইরা যেই শ্রম দেওয়া লাগছে, তা জলে গেছে। এত কম দামে পাট বিক্রি করে পোষায় না।’- বাংলানিউজকে এমনটিই বলছিলেন মুন্সিগঞ্জের পাট চাষিরা।

সরকারিভাবে পাট না কেনার কারণে কম দামেই স্থানীয় পাইকার ব্যবসায়ীদের কাছে পাট বিক্রি করতে হচ্ছে চাষিদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট তিন হাজার ৫৬৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।

এর মধ্যে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫০৮ হেক্টর, টংগিবাড়ী উপজেলায় ৭৩৫ হেক্টর, শ্রীনগর উপজেলায় ৬৫ হেক্টর, সিরাজদিখান উপজেলায় এক হাজার ৭৩০ হেক্টর, লৌহজং উপজেলায় ৩২০ হেক্টর এবং গজারিয়া উপজেলায় ২০৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ জেলায় পাট চাষ ।                                          ছবি: বাংলানিউজজানা যায়, পাট বিক্রি করেও লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না মুন্সিগঞ্জের চাষিরা। যেই ঋণ ও জমানো টাকা দিয়ে চাষ শুরু হয়েছিল, শুধু সেই খরচ উঠছে। অনেকের আবার সেটুকুও নেই। লোকসান গুণে এখন হতাশাগ্রস্ত। প্রতি মণ পাটে মজুরিসহ খরচ পড়েছে প্রায় এক হাজার ৫০০ টাকা। চাষিরা বর্তমানে প্রতি মণ পাট এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি করতে পারছে।

টংগিবাড়ী উপজেলার বলই গ্রামের চাষি আলী হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ৪০ মণ পাটের মধ্যে মাত্র চার মণ পাট মণপ্রতি এক হাজার ৯০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পেরেছিলাম। এখন পাইকার ব্যবসায়ীরা মণপ্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা করে বলছে। তাই পাট এখনও বিক্রি করি নাই। প্রতি মণ পাট চাষে যে টাকা খরচ হয়েছে, তাতে এক হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করে কোনো লাভ নেই।  মুন্সিগঞ্জ জেলায় পাট চাষ ।  ছবি: বাংলানিউজকৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. শফিকুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, প্রতি মণ পাটে কৃষকের খরচ পড়েছে প্রায় এক হাজার ৫০০ টাকা। এখন পাটের যে দাম, তাতে কৃষকের লাভ থাকছে না। দেশি সিবি-১, সিবি-৩, তোষা-৯৮ ও ৯৭ জাতের পাট এ জেলায় চাষ হয়ে থাকে। চাষিদের কাছ থেকে সরকারিভাবে পাট কেনার কোনো ব্যবস্থা নেই।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় দেশি পাট আবাদ হয়েছে ৪৮৭ হেক্টর ও তোষা পাট আবাদ হয়েছে ২১ হেক্টর জমিতে।

এছাড়া টংগিবাড়ী উপজেলায় দেশি পাট ৪৭৫ হেক্টর ও তোষা পাট ২৬০ হেক্টর, শ্রীনগর উপজেলায় দেশি পাট ৪০ হেক্টর ও তোষা পাট ২৫ হেক্টর, সিরাজদিখান উপজেলায় দেশি পাট ১৫০ হেক্টর ও তোষা পাট এক হাজার ৫৮০ হেক্টর, লৌহজং উপজেলায় দেশি পাট ২৫০ হেক্টর ও তোষা পাট ৭০ হেক্টর এবং গজারিয়া উপজেলায় দেশি পাট ২০৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।