ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

ধানকাটা শ্রমিক সংকটে কৃষকের বন্ধু হারভেস্টার

মো. আমিরুজ্জামান, ডিষ্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৩
ধানকাটা শ্রমিক সংকটে কৃষকের বন্ধু হারভেস্টার হারভেষ্টার মেশিন

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে কৃষি শ্রমিক সংকটে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হারভেস্টার মেশিন। ঝড়, বৃষ্টির শঙ্কায় কৃষকরা দ্রুত ইরি-বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন।

কৃষকরা মান্ধাতা আমলের প্রযুক্তি পেছনে ফেলে আধুনিক ও স্মার্ট প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে পড়ছে। কাটা-মাড়াই, পরিস্কার থেকে শুরু করে বস্তাবন্দি সবই হচ্ছে এই মেশিনের সাহায্যে। ফলে অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে কৃষকদের।  

মৌসুমে ধান, গম, ভুট্টা কাটা-মাড়াইয়ের সময় কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়। বেশি দাম দিয়েও শ্রমিক মিলেনা। ফলে ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই ঝরে পড়ে। এ কারণে কৃষকরা উন্নত প্রযুক্তির এ মেশিনের দিকে ঝুঁকছেন মাঝারি ও বড় কৃষকরা। তবে মেশিনটির দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা কিনতে না পেরে ভাড়ায় চালাতে হচ্ছে।

সরকার কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে কৃষককে সহায়তা দিতে বিভিন্ন মেশিনে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছে। ফলে অনেক কৃষক মিনি হারভেস্টার মেশিন ক্রয়ে এখন আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে চাহিদা অনুয়ায়ী মিনি হারভেষ্টার মেশিন ও অর্থ সহায়তা বাড়ানোর দাবি করেছেন কৃষকরা।
 
কৃষি বিভাগ জানায়, বড় সাইজের হারভেস্টার মেশিনের দাম প্রায় ২৬ লাখ টাকা, মিনি কম্বাইন হারভেস্টারের নিয়মিত দাম সাত লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ মেশিন ক্রয়ে সরকার অর্ধেক টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দিয়ে থাকে। ফলে মেশিনটি  সহজে কৃষকরা এটি কিনতে পারেন। শ্রমিক সংকট ও মজুরি বৃদ্ধিতে এই মেশিনের ব্যবহার বেড়েছে। এ অবস্থায় শ্রম ও সময় সাশ্রয়ের জন্য কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে কৃষি যন্ত্রপাতি।

ব্যবহারকারী কৃষকরা জানায়, মিনি কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহারে ৬০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত খরচ কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে সময় বাঁচায় ৭০-৮২ শতাংশ এবং ৭৫ শতাংশ কম শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। প্রতি ঘণ্টায় দেড় একর জমির ধান কাটা এবং মাড়াই, পরিস্কার এবং প্যাকেটজাত করা সম্ভব। এই মেশিন ব্যবহারের ফলে এক ঘণ্টায় ৩৩ শতক জমির ধান বা গম কাটা যায়। প্রচলিত নিয়মে এক একর জমির ফসল কাটতে খরচ পড়ে ৬ হাজার টাকা। সেখানে এই মেশিন ব্যবহারে খরচ পড়ে মাত্র ৬ লিটার ডিজেল। এ মেশিন অল্প কাঁদায় ব্যবহার করা যায়। সেই সঙ্গে এই মেশিন দিয়ে কাটার পর খড় আস্ত থাকে। মেশিনটির মাধ্যমে ধান কাটা হলে ফসল বেশি পাওয়া সম্ভব।  

কৃষি শ্রমিক সংকট ও মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা কারণে সহজে আনা-নেওয়াসহ এই মিনি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে কৃষকদের আগ্রহের সঙ্গে চাহিদাও বাড়ছে। বিশেষ করে মাঝারি ও বড় ধরণের কৃষকরা নিজেরাই এটি কেনার চেষ্টা করছেন। ধান, গম কাটার মেশিন রিপারের পর কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনও জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ধীমান ভূষণ জানান, ইরি-বোরো মৌসুমে প্রতিবছরই ধানকাটা শ্রমিকের সংবট দেখা দেয়। এসময় ধানকাটা শ্রমিকরা বেশি টাকা লাভের আশায় বাইরের জেলাগুলোতে যায়। ফলে এ্সব মেশিন ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। কৃষি বিভাগ হারভেস্টার মেশিনসহ কৃষি যন্ত্রপাতি ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।