ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

এসেছিলেন হুইল চেয়ারে ফিরবেন পায়ে হেঁটে

সাগর ফরাজী, সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১
এসেছিলেন হুইল চেয়ারে ফিরবেন পায়ে হেঁটে

সাভার (ঢাকা): দুই মাস আগে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথার কারণে হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করতেন বিলকিস বেগম (৫০)। অনেক চিকিৎসা করিয়েও কোনো সমাধান পাননি তিনি।

পরে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র সিআরপি’র খোঁজ পেয়ে ময়মনসিংহের গৌরিপুর থেকে এখানে এসে চিকিৎসা নিতে শুরু করে তিনি।

দীর্ঘ দুই মাস সকাল-বিকেল চিকিৎসকদের যত্নে ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে এখন প্রায় পুরোপুরি সুস্থ বিলকিস বেগম। আগে হুইল চেয়ার চলাফেরা করলেও এখন পায়ে হেঁটে নানা কাজ করতে পারেন এই মধ্যবয়সী নারী। তাকে দেখভাল করার জন্য সঙ্গে আসেন স্বামী সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহ (৬৭)। সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহরও অনেক আগে থেকেই কোমরে বাধ্যর্কজনিত ব্যথা রয়েছে। তার স্ত্রীর সুবাদে তিনিও দুই সপ্তাহের মতো ফিজিওথেরাপি নিয়ে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।
 
তারা দু'জনই এখন সুস্থভাবে জীবনযাপন করছেন। দুই একদিনের ভেতর তারা তাদের গৌরিপুরের বাড়িতে ফিরে যাবেন। বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) গিয়ে কথা হয় এই দম্পতির সঙ্গে।

এ সময় সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহ জানান, অনেক আগে থেকেই কোমরের ব্যথায় ভুগছিলেন। কিন্তু দুই মাস আগে তার স্ত্রী বিলকিস বেগমের কোমর ব্যথা বেশি হলে হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। পরে সিআরপিতে এসে থেরাপি নিয়ে এখন সুস্থ আছেন তিনি। সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহর কোমরেও ব্যথা রয়েছিলো। স্ত্রীকে চিকিৎসা করাতে এসে নিজেও ফিজিওথেরাপি নিয়ে বর্তমানে সুস্থ আছেন।

তার স্ত্রী বিলকিস বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমার কোমরে খুব ব্যথা ছিলো। বিছানা থেকে উঠতে পারতাম না। হুইলচেয়ারে করে চলাচল করা লাহতো। নানা জায়গায় চিকিৎসার জন্য গেছি ভালো হয়নাই। এখানের খবর পেয়ে আইছি। প্রায় দুই মাস থাকলাম। দুই মাস ভরাই এক নারী থেরাপিস্টকে দিয়ে সকাল বিকাল থেরাপি দিতো। একমাসের ভেতর হুইল চেয়ার ছেড়ে দিয়েছি। এখন স্বাভাবিকভাবে হাঁটা-চলা করতে পারি।

ক্লিনিকেল ফিজিওথেরাপিস্ট মাজেদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মূলত স্ত্রীকে চিকিৎসা নিতে আসেন সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহ। তার স্ত্রীকে দুই মাস ধরে এক নারী ফিজিওথেরাপিস্ট চিকিৎসা দিয়েছেন। তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।  

এদিকে স্ত্রীর চিকিৎসার শেষের দিকে সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহও কোমর ব্যথার জন্য থেরাপি দেন। সেও এখন সুস্থ আছে। আমরা একদম ম্যানুয়েল ভাবে টিটমেন্ট করি। যা বাইরে করালে যান্ত্রিক সাহায্য করায়। থেরাপি এমন একটি টিটমেন্ট যা যান্ত্রিকভাবে করলে কাজে আসতে চায় খুব কম।

সিআরপির ফিজিওথেরাপির বিভাগীয় প্রধান ও সিনিয়র কনসালটেন্ট মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বাংলানিউজকে জানান, সারাদেশ থেকেই প্রায় ৫০ ভাগ রোগী বিভিন্ন প্রকার ব্যথা নিয়ে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে আসেন। বাকী রোগী স্ট্রোকজনিত কারণে প্যারালাইজড ও প্রতিবন্ধী। রোগীদের মাসকল, অর্থোপেডিক, চাইল্ড ডিজ্যাবিলিটি, গাইনোলজিক্যাল, স্পোর্টস ইনজুরি ও নিউরোলজিক্যালসহ বিভিন্ন ধরনের থেরাপি দিয়ে থাকি।

তিনি বলেন, পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে সিআরপি এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ। ফিজিওথেরাপি বিভাগ সিআরপির একটি অন্যতম শাখা। যেখানে ২০০’র বেশি থেরাপিস্ট কাজ করেন। সারাদেশে ১৩টা সিআরপি কেন্দ্রের ৯টাতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রতিবছর প্রায় ৮০ হাজার রোগীকে সিআরপিতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।