ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ শীর্ষক জাতীয় কর্মসূচির উদ্বোধন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১২
ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ শীর্ষক জাতীয় কর্মসূচির উদ্বোধন

ঢাকা: দেশের শিশু-কিশোর ও গর্ভবতী মহিলাদের ভিটামিন-এ ঘাটতিজনিত রোগবালাই দূর করার লক্ষ্যে সরকার ইউনিসেফের সহায়তায় ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং গ্লোবাল অ্যালাইয়েন্স ফর ইম্প্রুড নিউট্রেশন (GAIN) এর সহায়তায় শিল্প মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।



বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ‘ শীর্ষক জাতীয় কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সুস্থ-সবল জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন। সরকার ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ করে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে ভিটামিন-এ ঘাটতিজনিত রোগবালাই থেকে মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। বিএসটিআই‘র সহায়তায় কঠোর মাননিয়ন্ত্রণ ও তদারকির মাধ্যমে ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে গৃহিত ‘বাংলাদেশের ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ‘ শীর্ষক জাতীয় কর্মসূচি সফল করতে সবাইকে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি ইন্সটিটিউট (IPHN) এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোঃ এখলাছুর রহমান, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি প্যাসক্যাল ভিলেনিউভ, গ্লোবাল অ্যালাইয়েন্স ফর ইম্প্রুভ নিউট্রেশন (GAIN এর নির্বাহী পরিচালক মার্ক ভ্যান অ্যামিরিনজেন, ইউনিসেফের পুষ্টি বিভাগীয় কর্মকর্তা ডা. আইরিন আক্তার চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘ফর্টিফিকেশন অফ এডিবল অয়েল ইন বাংলাদেশ‘ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক মির্জা মোঃ মহিউদ্দিন বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ভিটামিন এ ঘাটতির ফলে বাংলাদেশের শিশু-কিশোর ও নারীরা রাতকানাসহ বিভিন্ন রোগের শিকার। বিশেষ করে, গ্রামীণ গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মহিলাদের ভিটামিন-এ‘র অভাবের ফলে শিশুরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারানো, অন্ধত্বসহ মারাত্মক শারীরিক ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতি চারজন প্রাক স্কুলগামী শিশুর মধ্যে অন্তত এক জন ভিটামিন-এ ঘাটতিজনিত রোগে ভুগছে বলে বক্তারা জানান।

বাংলাদেশের শতকরা ২ দশমিক ৭ ভাগ গর্ভবতী মহিলা ও ২ দশমিক ৪ ভাগ দুগ্ধদানকারী মহিলা রাতাকানা রোগে ভুগছে বলে উল্লেখ করে তারা ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এর প্রতিরোধে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেলের ব্যাপক প্রসারের সুপারিশ করেন।

উল্লেখ্য, এ কর্মসূচির আওতায় চলতি বছরের মধ্যে প্রায় দশ কোটি শিশু, কিশোর এবং গর্ভবতী নারীকে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেলের আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল ভোজ্য পাম অয়েল ও সয়াবিন তেল রিফাইনারিতে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে দেশের ৭ টি রিফাইনারি ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণের ফলে প্রতি ৫ লিটার ভোজ্য তেলে মাত্র ১ টাকা খরচ হবে। এ সামান্য খরচের জন্য রিফাইনারি মালিকরা তেলের মূল্য না বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে এরইমধ্যে সরকারের সাথে রিফাইনারি শিল্প উদ্যোক্তাদের একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে। ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ তেল শনাক্ত করার জন্য ভোজ্য তেলের প্যাকেট বা বোতলে সুনির্দিষ্ট লোগো থাকবে। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ লোগো উন্মুক্ত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।