ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

শেবাচিম হাসপাতালে জনবল বাড়ানোর জোর দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২১
শেবাচিম হাসপাতালে জনবল বাড়ানোর জোর দাবি

বরিশাল: বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকসহ জনবল বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়েছে বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনার সংক্রমণ বাড়ায় কাগজে কলমে ১ হাজার শয্যার এই হাসপাতালটি বর্তমানে ১৩শ শয্যায় উন্নীত হয়েছে।

কিন্তু হাসপাতালের সব জনবল ৫শ শয্যার অনুকূলে।

অর্থাৎ তিন শতাংশের এক শতাংশ জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতালটি। আবার সেই ৫শ শয্যার অনুকূলে যে ২২৪ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে, সেখানেও রয়েছে মাত্র ১৯৭ জন। আর তা দিয়েই প্রতিদিন চলছে হাজারো রোগীর চিকিৎসাসেবা।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, কম জনবল নিয়ে বর্তমানে ৩শ বেডের করোনা ইউনিটসহ পুরো হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বরিশাল সার্কিট হাউজে জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে ১০ শয্যা থেকে শুরু হওয়া করোনা ইউনিট এখন ৩শ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৩শ'র ওপরে রোগী ভর্তি থাকছেন এখানে। কিন্তু মূল হাসপাতালে জনবল সংকটের কারণে করোনা ইউনিটের চিকিৎসক মাত্র ২ জন। আমাদের এখন কমপক্ষে ৫শ চিকিৎসক দরকার। এই চিকিৎসক যদি আমরা পাই তাহলে আমাদের আর চিকিৎসক সংকট থাকবে না।

সাইফুল ইসলাম বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে নার্স যা রয়েছে তা দিয়ে চলতে পারি, তবে মন্ত্রণালয় আর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেবে না। তাই আমাদের স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন ৫শর মতো। আর স্বেচ্ছাসেবক পেলে করোনা ইউনিটে চিকিৎসায় কোনো সমস্যা থাকবে না।

বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে বরিশালের ৬ জেলা তো রয়েছেই, পাশাপাশি মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকেও রোগী আসছে। এমনিতেই এই হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট। এর মধ্যে বিভাগের সব করোনারোগী যদি এখানে আসে তাহলে তো বেশ বিপাকে পড়তে হবে। আমি হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানাবো।

তিনি আরও বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে চাপ কমাতে ইতোমধ্যে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল এবং ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ শয্যা করে করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি গর্ভবতী নারীদের জন্য বরিশাল নগরের শিশু ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ২০ শয্যার করোনা ইউনিট করা হয়েছে।

জসীম উদ্দীন বলেন, এছাড়া বরিশালের আম্বিয়া মেমোরিয়াল হাসপাতাল এবং সাউথ অ্যাপোলো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য আমাদের আলোচনা চলছে। মানুষের অবিশ্বাসের কারণে আমাদের এখান থেকে ৯০ হাজার ডোজ টিকা ইতোমধ্যে ফেরত চলে গিয়েছিলো। এবার অনেক টিকা এসেছে। সবাই টিকা গ্রহণ করুন, দেশকে রক্ষা করুন।

বরিশালের সিভিল সার্জন বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে ৬৮টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা অনুদান দিয়েছে সমাজের বিত্তবানরা। তবে আমাদের এই হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার থেকে সি প্যাপ এ প্যাপ মেশিন হলে ভালো হয়। একটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার দাম ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আর সি প্যাপ এ প্যাপ মেশিনের দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলায় যেখানে ৮০ লিটার তরল অক্সিজেন খরচ হয় সেখানে সি প্যাপ এ প্যাপ মেশিনে ১০ লিটার তরল অক্সিজেন খরচ হয়। এছাড়া হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলায় অক্সিজেন অপচয়ও হয়।

বর্তমানে অনেক অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

শেবাচিম হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ৬১৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। এর মধ্যে ৫৯৩টি ছোট সিলিন্ডার এবং ৫০টি বড় সিলিন্ডার। আরও ৭শ সিলিন্ডার চাওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২১
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।