ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

রামেকে আরও ৮ জনের মৃত্যু, বাড়ছে রোগী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২১
রামেকে আরও ৮ জনের মৃত্যু, বাড়ছে রোগী

রাজশাহী: প্রকোপ বাড়ায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা রোগী উপচে পড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে করোনা আক্রান্ত হয়ে ও করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে।

এর আগের ২৪ ঘণ্টায়ও বিভাগটিতে আট জনের মৃত্যু হয়েছে।

রামেক হাসপাতালে এখন প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে আট জনের মৃত্যু হচ্ছে। এনিয়ে গত এক সপ্তাহে রাজশাহীতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৮০ জনে দাঁড়ালো। এর মধ্যে ৬৫ জনই করোনার ‘হটস্পট’ হয়ে ওঠা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী জেলার অধিবাসী। এ ৬৫ জনের মধ্যে ৩৯ জনই চাঁপাইনবাবগঞ্জের অধিবাসী এবং বাকি ২৬ জন রাজশাহীর।

জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বাংলানিউজকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত আটজনের মধ্যে চারজন করোনা পজিটিভ ছিল। অন্য চারজন মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। করোনা পজিটিভ হয়ে মারা যাওয়া চারজনের মধ্যে তিনজনের বাড়িই রাজশাহীতে। আর একজনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে চার জনের মধ্যে দু’জন রাজশাহীর আর দুই চাঁপাইনবাবগঞ্জের।  

বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোট ২২৭ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতে রামেক হাসপাতালে আইসিইউ এবং সাধারণ বেডের জন্য করোনা রোগীদের মধ্যে হাহাকার পড়ে গেছে। স্থান দিতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। অক্সিজেন স্যাচুরেশন মোটামুটি থাকলেই তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৫ এর নিচে নেমে যাচ্ছে কেবল তাদেরই ভর্তি করা হচ্ছে রামেক হাসপাতালে। তবে তাদেরও বেড দেওয়া যাচ্ছে না। ভর্তি নেওয়া হলেও তাদের অনেককে হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আর হাসপাতালের বেড বাড়াতে গিয়ে একটির পর একটি সাধারণ ওয়ার্ড করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হচ্ছে। এতে সাধারণ ওয়ার্ডের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এমন ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে সাধারণ ওয়ার্ডের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বুধবার রামেক হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডকেও করোনা ওয়ার্ড হিসেবে ঘোষণা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) থেকে এ ওয়ার্ডটিও করোনা ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এখানে ৩২টি বেড রয়েছে। ফলে এ বেডগুলো সংযুক্ত হওয়ায় রামেক হাসপাতালে এখন করোনা ইউনিটে বেডের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৬৪টি। আগে ছিল ২৩২টি বেড। এছাড়া হাসপাতালের ১৮টি আইসিইউ বেড ব্যবহার করা হচ্ছে করোনা রোগীদের জরুরি চিকিৎসায়। তবে একটিও ফাঁকা নেই! অথচ প্রতিদিন গড়ে ৪০ জনেরও বেশি রোগী আইসিইউ শয্যার অপেক্ষায় থাকছেন।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বাংলানিউজকে বলেন, দিনদিন করোনা ইউনিটে রোগী বেড়ে যাওয়ায় রামেক হাসপাতালে দেখা দিয়েছে বেড ও চিকিৎসক সংকট। করোনা রোগীদের সামাল দিতে গিয়ে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। তাই বুধবার বেড সংখ্যা ২৩২ থেকে বাড়িয়ে ২৬৪টি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে এ বেডগুলো করোনা ইউনিটে যুক্ত হবে।  

এছাড়া হাসপাতালটির আইসিইউ ইউনিটে মোট ১৮টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। তবে সেখানে আরও বেশি ভেন্টিলেটর প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী।

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের কাছে আরও ভেন্টিলেটর চেয়েছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২১
এসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।