ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

মৌলভীবাজারে আশ্বাসে সীমাবদ্ধ পিসিআর ল্যাব

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২১
মৌলভীবাজারে আশ্বাসে সীমাবদ্ধ পিসিআর ল্যাব মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: গত বছর প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর নানা মহল থেকে দাবি উঠেছিলো পর্যটনসমৃদ্ধ প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপনের। বছর পার হয়ে ঊর্ধ্বমুখী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলেও সে দাবির কোনো অগ্রগতি আজও পরিলক্ষিত হয়নি।

সাংসদ থেকে মন্ত্রী পর্যায়ে ডিও লেটার পাঠানো হয়েছে ঠিকই তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী ফলাফল শূন্য।

মৌলভীবাজার জেলায় এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা নমুনার বেশিরভাগ পরীক্ষা করা হয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে। ফলে সেখানে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার পর ফলাফল আসতে সময়ও লাগছে অনেক বেশি।

মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পিসিআর ল্যাব স্থাপন না হলেও চলতি এপ্রিল মাসের শেষের দিকে নমুনা পরীক্ষার জন্য মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে থাকা টিবি রোগ নির্ণয়ের জন্য যে যন্ত্র রয়েছে সেটা দিয়ে ছোট পরিসরে নমুনা পরীক্ষা করা যাবে তবে এর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণের কিট সাপ্লাই যা এখনো শুরু হয়নি। কবে নাগাদ কিট আসতে পারে তাও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।  

সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ। এসময় পিসিআর ল্যাব সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এপ্রিলের শেষের দিকে অথবা মে মাসের দিকে মৌলভীবাজার পিসিআর ল্যাব স্থাপনের আশ্বাসের কথা। এ সংক্রান্ত অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে শনিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে তিনি জানান পিসিআর ল্যাব কখন কবে স্থাপন হবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজার জেলা শাখার সমন্বয়কারী আসম সালেহ সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতেও পিসিআর ল্যাব স্থাপন না হওয়াটা এখানকার জনপ্রতিনিধিদের ব্যর্থতা বলে মনে করছি।

এদিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত মার্চের ২২ তারিখ থেকে চলতি এপ্রিল মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলায় ৭৫০টি নমুনা সংগ্রহ হলে তাতে ১৮৩ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। আর মৃত্যু হয় তিন জনের।

সবশেষ শুক্রবার (৯ এপ্রিল) মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শহরের রঘুন্দনপুর এলাকার বাসিন্দা মনছব আলী (৬৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এর আগে ২৩ মার্চ একই হাসপাতালের আউসোলেশনে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শহরের শেখেরগাও এলাকার সৈয়দা আফসারুন্নেছা নামে এক মহিলা ও ৩১ মার্চ শ্রীমঙ্গলের মনির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক দেশের ৩১ জেলার মধ্যে মৌলভীবাজার জেলাকে করোনা সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে রাখা হয়। এরপর থেকে জেলায় বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণের হার। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যে সরকারের জারি করা ১১ দফা নির্দেশনার আলোকে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এক সাপ্তাহের ঢিলেঢালা লকডাউন, যা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ফের আরও দুই দিন বাড়ানো হয় লকডাউনের সময়সীমা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২১
বিবিবি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।