ঢাকা, শনিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ মে ২০২৪, ১৬ জিলকদ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ঢামেকে অগ্নিকাণ্ড: চরম আতঙ্কে ছিলেন রোগীর স্বজনরা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২১
ঢামেকে অগ্নিকাণ্ড:  চরম আতঙ্কে ছিলেন রোগীর স্বজনরা আগুন লাগার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাসপাতালে রোগীর স্বজনরা/ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘ভাই গো, আমার ছেলে আইসিইউতে, আগুনের ধোঁয়া দেখে ছেলের কাছে যেতে চেয়েছিলাম। তারা আমাকে যেতে দেয়নি।

বললেন, সবাই নিচে চলে যান আগুন লেগেছে। তখনো আরেক শিশুসন্তান আমার কোলে। কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তাকে কোলে নিয়ে দ্রুত নিচে চলে আসি। ধোঁয়ার কারণে কিছুই দেখতে পারছিলাম না। ’

বৃহস্পতিবার (০৭ জানুয়ারি) ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে পুরাতন ভবনের চারতলায় আইসিইউর পাশে ব্যালকনিতে অগ্নিকাণ্ডের সময় আতঙ্ককে সঙ্গী করে বিকেল ৩টার দিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাসিনা আক্তার। কোলে ছিল এক শিশু, তার অপর শিশু আইসিইউতে।  

তিনি আরও জানান, তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তার ১২ বছরের সন্তান জাবের হোসেন (১২) আইসিইউর ২০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।

হাসিনা আক্তার বলেন, আনুমানিক পৌনে দুইটার দিকে হঠাৎ দেখি প্রচণ্ড ধোঁয়া। ৪ তলায় আইসিইউর গেটের সামনে তখন আমরা অবস্থান করছিলাম। এসময় আমার আরেক শিশু সন্তান আমার কোলে। কি করবো বুঝতে পারছি না। প্রচণ্ড ধোঁয়া, এদিকে সবাই চিল্লাচিল্লি করছে আগুন, আগুন। তখন আইসিইউতে থাকা আমার ছেলের কাছে যেতে চাইলে কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। তারা বলে দ্রুত আপনারা নিচে চলে যান। রোগীদের আমরা দেখছি।  

‘আমার মতো আরও অনেকেই রোগীর ভিজিটররা আইসিইউর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। সবাই একযোগে তাড়াহুড়ো করে আমরা নিচে নেমে যাই। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। এক শিশু সন্তান আমার কোলে আরেক শিশুসন্তান আইসিইউতে। ’

সিজারের সমস্যা জনিত কারণে চাঁদপুরের গৃহবধূ সোনিয়া (১২) ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের পুরাতন ভবন এর চার তলায় আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন।

আগুনের সময় আতঙ্কিত হয়ে তার মা শামীমা অন্যান্য রোগীর স্বজনদের সঙ্গে নিচে নেমে আসেন। তিনি জানান, আমার মেয়ে লাইফ সাপোর্টে। প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে থাকতে পারিনি। তাছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের নিচে নামিয়ে দিয়েছে। জানি না আমার মেয়ের কি অবস্থা।

এছাড়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলায় গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশের রোগীরা আগুন আতঙ্কে সিঁড়িতে অবস্থান করছেন। জরুরি বিভাগের তৃতীয় তলায় বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে রোগী ও স্বজনরা আগুন আতঙ্কে নিচে নেমে আসে।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, ময়লা আবর্জনা থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের পর পরই ঢামেকের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে কর্মচারীরাই আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও এসে তদারকি করেছে। কেন আগুন লেগেছে তা জানতে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনায় হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা কোনো রোগীর সমস্যা হয়নি।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন জানান, ১ টা ৪০মিনিটে আমরা আগুনের খবর পাই। এর দু থেকে তিন মিনিটেই আমরা হাসপাতালে পৌঁছাই। তবে আমাদের যাওয়ার আগেই হাসপাতালের কর্মচারী, আনসার সদস্যরা আগুন নিভিয়ে ফেলে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সিগারেটের শেষাংশ অথবা অন্য কোনো কারণেও আগুন লাগতে পারে।

আরও পড়ুন>> ঢামেকের পুরাতন ভবনে আগুন 

>> ঢামেকের আগুন নিয়ন্ত্রণে 

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২১
এজেডএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।