ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

অ্যান্টিবায়োটিক যততত্র ব্যবহার হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২০
অ্যান্টিবায়োটিক যততত্র ব্যবহার হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: এটা ঠিক যে অ্যান্টিবায়োটিক যততত্র ব্যবহার হয়। আমার কাছে যেটা মনে হয় ‘ওভার দ্য কাউন্টিং সেলস’ বেশি হয়।

এখানে প্রতিবন্ধকতা আনতে হবে। আইন আছে অনেক কিছু, প্রয়োগটা দরকার। ‘ওভার দ্য কাউন্টিং সেলস’ আমি মনে করি বন্ধ হওয়া দরকার।

সোমবার (২৩ নভেম্বর) ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের কনফারেন্স রুমে কালের কণ্ঠ-ইউএসএইড আয়োজিত অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার ও করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একথা বলেন।

ইডব্লিউএমজিএল পরিচালক ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিতিশ চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এমএ ফয়েজ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শাহলীনা ফেরদৌসী, বাংলাদেশ ফার্মাকোলজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান, আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম আলমগীর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (সিডিসি) ড. অনিন্দ রহমান, মাইক্রোবায়োলজিস্ট (সিডিসি) ডা. এএসএম শাহরিয়ার রিজভি, ইএসএইড’র গ্লোব্লাল হেলথ সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট ডা. আবুল কালাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফোকাল ফর এএমআর ডা. রামজি ইসমাইল ও এমটিএপিএস এর কান্ট্রি প্রজেক্ট ডিরেক্টও ডা. জেবুন্নেসা রহমান।  

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা ঠিক হবে না। এটা বন্ধ করার একটা ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের নিয়মনীতি ও পরিকল্পনা আছে- বাস্তবায়নটা হলো সবচেয়ে বড় বিষয়। আইনটা বাস্তবায়ন করা খুব জরুরি। আমি মনে করি আইনটা বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। ফার্মেসিগুলো লাভের জন্য সব সময় চাইবে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করতে।

জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের দেশে এটা (অ্যান্টিবায়োটিক) প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রি হয়। এটা বন্ধ করার জন্য একটা ভালো ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এজন্য ফার্মেসি অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা দরকার। প্রথমত আনপ্রেসক্রাইব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না। ওভার দ্য কাউন্টার বিক্রি করা যাবে না। এবং কোনো ডাক্তার যদি প্রেসক্রিপশন করেন তাহলে যেন পুরো কোর্স পূরণ করে ব্যবহার করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কোর্স পুরোটা না খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে না বরং ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকার উপায় পেয়ে যাবে। আমরা নিজেরাই কোর্স পুরো করছি না। কোর্স পূরণ করাটা খুবই জরুরি। পাশপাশি আমাদের কোয়ালিটি অ্যান্টিবায়োটিকও দরকার।  

‘অনেক সময় নকল অ্যান্টিবায়োটিকও বাজারে আসে। এজন্য আমরা ওষুধ প্রশাসন অধিপ্তরকে বলি নিয়মিত পরিদর্শন চেকআপ করতে। দরকার হলে ফার্মেসি সিলগালা ও জরিমানা করবেন।  

অ্যান্টিবায়োটিকের লাল মোড়কের বিষয়ে দাবি তোলা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমার একার হাতে নয়। সবার সঙ্গে আলোচনা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক উন্নত ও বিজ্ঞানসম্মত হয়েছে। আন্দাজের উপর চিকিৎসা আজকাল আর হয় না। প্যাথলজিও অনেক উন্নতি করেছে। অন্য ইক্যুপমেন্টও অনেক ডেভেলপ করেছে, যেটা ছিল না। পাশপাশি মেডিসিনও ডেভেলপও করেছে।

তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় বায়োটেকনোলজি যতটুকু ডেভেলপ হয়েছে, ফার্মাসেউটিক্যালস ওই হারে ডেভেলপ হয়নি। অ্যান্টিবায়োটিক সেই হারে বাড়েনি। একটা আর্টিকেলে পড়লাম। একটি ওষুধ মানুষের উপযোগী করার জন্য ১০ বছরও লেগে যায়। ব্যয় হয় ১ থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার। এটা অনেক কষ্টের বিষয়।

সুচনা বক্তব্যে কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য চিহ্নিত। জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য এটি সব সময় প্রয়োজন। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার হতে হতে এখন আর আমাদের হাতে শেষ রক্ষা বলে কিছু নেই। কেবল ব্যক্তি পর্যায়েই নয়, হাসপাতালের চিকিৎসকরাও কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার করছেন।

‘দ্রুত সুস্থ করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার প্রবণতা শুরু হয়েছে। ফলে ওষুধ কোম্পানিগুলোর অ্যন্টিবায়োটিকের রমরমা ব্যবসা দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। পৃথিবীর কোনো দেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না হলেও আমাদের দেশে প্রেসক্রিপশনের তোয়াক্কাই করা হয় না। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে এমন একটা অবস্থার মধ্যে আছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২০
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।