ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

পদোন্নতির দাবিতে স্মারকলিপি দিলো বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২০
পদোন্নতির দাবিতে স্মারকলিপি দিলো বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকরা

ঢাকা: পদোন্নতির দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্যের কাছে তৃতীয়বারের মত স্মারকলিপি দিয়েছেন পদোন্নতি বঞ্চিত চিকিৎসকরা। পাশাপাশি প্রায় দুই শতাধিক পোস্ট গ্রাজুয়েট চিকিৎসক দাবি আদায়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) সকালে মানববন্ধন শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য বরাবর তৃতীয়বারের মতো স্মারকলিপি দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিএসএমএমইউ দেশের সবচেয়ে বড় মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হলেও স্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত চিকিৎসকদের পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরবর্তীতে যারা পোস্ট গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করবেন, এ ধরনের চিকিৎসকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা ছিল যেখানে পোস্ট গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পরে তাদেরকে সবেতনে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হতো।

পরবর্তীতে ডিপার্টমেন্টের প্রয়োজন অনুযায়ী সেই পদে আত্তীকরণ করা হতো কিন্তু ২০০৯ সালে সেই আইনটি অজানা কারণে রহিত হওয়ার অভিযোগ করা হয়। এর থেকে দুই শতাধিক চিকিৎসক পদোন্নতিবঞ্চিত অবস্থায় আছেন।

আন্দোলনকারীদের ভাষ্যমতে, যারা পদোন্নতিবঞ্চিত আছে তাদের অনেকের অবসরে সময় হয়ে আসছে। এবং প্রায় আট বছর যাবত অনেকে পদোন্নতি না পেয়ে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। যদিও তাদের অনেকের এফসিপিএস ও এমডি নামক বাংলাদেশের সেরা ডিগ্রিগুলো সম্পন্ন করা আছে।

তাদের অভিযোগ, সরকারি সেক্টরে যেসব চিকিৎসক কর্মরত তারা চিকিৎসাক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রি সম্পন্ন করলেই দ্রুত কনসালটেন্ট পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ডিপিসি-এর মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। কিন্তু বিএসএমএমইউতে কর্মরত প্রায় দুই শতাধিক পোস্ট গ্রাজুয়েশন চিকিৎসক তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেও পদোন্নতি বঞ্চিত।

এ সময় তাদের পদোন্নতির ব্যাপারে উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণের আহ্বান করেন।

মানববন্ধন শেষে গাইনি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. কাজী ফারহানা বলেন, দেড় যুগের বেশি সময় ধরে পদোন্নতি বন্ধ আছে। পদোন্নতির জন্য এর আগে গত ১ ডিসেম্বর ২০১৯ প্রথম দফা আন্দোলনসহ নানা কর্মসূচী পালন করেন। পাশাপাশি সেদিন প্রথম স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর ১৪ জানুয়ারি ২০২০ আরও একবার স্মারকলিপি দিয়ে দাবি দাওয়া পেশ করেন তারা। এবার তৃতীয়বারের মতো আন্দোলনে নেমেছেন তারা।

আন্দোলনরত বিএসএমএমইউ’র চিকিৎসকদের দাবি, করোনার এই পরিস্থিতিতেও টেলিমেডিসিন সেবা, বহির্বিভাগের সেবা, ইনডোরে রাউন্ড, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ফিভার ক্লিনিক এবং কোভিড ইউনিটের রোগীদের সেবা প্রদানসহ সহকারী অধ্যাপক পদের সমমানের কাজে ব্যস্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যসেবার মানকে সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।

নিউরো সার্জন ডা. শিকদার মো রুহুল কুদ্দুস বলেন, চিকিৎসকদের পদোন্নতি বঞ্চনার এই বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সব সিন্ডিকেট সদস্য, সব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয় স্বাচিপের সভাপতি সেক্রেটারি ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহসহ সব পর্যায়ের নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।  

এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্যের উপস্থাপনায় সিন্ডিকেট সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে একটি সিন্ডিকেট কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তী সিন্ডিকেট মিটিংয়ের আগে তাদেরকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই কমিটির মেয়াদ ৬ মাসের অধিক পার হওয়ার পরেও সুনির্দিষ্ট রিপোর্ট না দিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের গাইনি বিভাগ, নিউরোসার্জারি, নিউরোলজি, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিকস, রিউম্যোটোলজিসহ প্রায় ৫৪টি বিভাগের দুই শতাধিক চিকিৎসক।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২০
পিএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।