ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

জ্বর নিয়ে ভ্রমণে মানা, বাস-লঞ্চ-ট্রেন পরিষ্কারের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
জ্বর নিয়ে ভ্রমণে মানা, বাস-লঞ্চ-ট্রেন পরিষ্কারের নির্দেশ

ঢাকা: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সর্দি-কাশি-জ্বর নিয়ে যানবাহনে চলাচল না করতে আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত পাবলিক পরিবহনগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাতে রেলপথ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়েকে অনুরোধ করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।  
 
রোববার (১৫ মার্চ) সচিবালয়ে ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।


 
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন এবং ১৪ মার্চ আরো দু’জন রোগী পাওয়া যায়।
 
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগের যে তিনজন রোগীর ছিল সবাই সুস্থ হয়ে চলে গেছেন।
 
করোনা ভাইরাস রোধে পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, কারো যদি শরীরে জ্বর থাকে, তারা যেন কোনো যানবাহন ব্যবহার না করেন। সর্দি-জ্বর-কাশি সেরে যাওয়ার পর তারা ভ্রমণ করবেন এবং যানবাহন ব্যবহার করবেন।
 
তিনি বলেন, চীন থেকে এই ভাইরাসের উপদ্রব শুরু হলেও এখন পুরো ইউরোপ এ ভাইরাসে জর্জরিত। আমেরিকায়ও শুরু হয়েছে। আমরাও নতুন কেস পেয়েছি, কাজেই এখন বলতে পারি না যে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস নেই। আছে এবং ছড়িয়ে যাতে না যায় সেদিকে আমরা বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছি।
 
মন্ত্রী বলেন, শিল্প, শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে যারা এসেছিল আমরা তাদের বলেছি ওখানে যে শ্রমিক কাজ করেন তাদের তারা কীভাবে ম্যানেজ করতে পারেন বা কী করছেন?
 
তাদের কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদেরও তাপমাত্রা পরীক্ষা করে কাজে যোগদান করা এবং আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে যদি কেউ বিদেশ থেকে আসে সে বিষয়ে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
 
বাস, রেল ও লঞ্চে যারা চলাচল করে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে যাতে সর্তকতা নেওয়া হয়, যাত্রীরা যাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে এবং যাত্রীরা চলে যাওয়ার পরে বাস, রেল ও লঞ্চ যাতে পরিষ্কার করে। এসব বিষয় রেল ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
 
শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে বলা হয়েছে যাদের আত্মীয়-স্বজন বিদেশে রয়েছে তারা যাতে খুব জরুরি না হলে এই মুহূর্তে দেশে না আসেন, কারণ তারাইতো করোনা ভাইরাস দেশে নিয়ে এলো।
 
‘এই ভাইরাস আরো বেশি যাতে ছড়িয়ে না যায়, সেজন্য আমরা তাদের বলেছি মোবাইলের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে খবরটি দেওয়ার জন্য। ’
 
বস্তিবাসী যারা রয়েছেন তাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সমাজকল্যাণ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে একটা সতর্কতামূলক অবস্থান নেওয়ার জন্য।
 
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলেছি আমাদের দেশে এই মুহূর্তে যাতে ওয়াজ মাহফিল বা অন্য ধর্মের যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়; এগুলি থেকে যাতে বিরত থাকে। তাতে হয়তো সংক্রমণ আরো কমবে এবং কমার সম্ভাবনা থাকবে। এই বিষয়গুলি প্রচার-প্রচারণা মসজিদের মাধ্যমে... আমরা যদিও বলছি যে, সীমিত আকারে মসজিদে আসার জন্য।
 
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা ইতোমধ্যে জানেন ওমরাহ ভিসা বন্ধ হয়ে গেছে। মক্কায় কোয়াব সংখ্যাও খুবই সীমিত হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এখানে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা কম হলে ভালো হয় এবং যারা বিদেশ থেকে এসেছে তারা যেন না আসে মসজিদে এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনরা যাতে না আসে। এ বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিয়েছি।
 
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের প্রতিকারমূলক ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ৪/৫টি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
 
‘ধর্ম ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বলেছি, তাবলিগ জামাত যেখানে হয়, সে জায়গাটাও প্রস্তুত রাখা, অবকাঠামো ঠিক রাখা এবং অন্যান্য আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য। যদি ওই রকম পরিস্থিতি হয়, যাতে ওই জায়গাগুলি আমরা ব্যবহার করতে পারি। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।