ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

দেশে ৯.৬ ভাগ জনগণ বধিরতায় আক্রান্ত!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৯
দেশে ৯.৬ ভাগ জনগণ বধিরতায় আক্রান্ত! বধিরতা প্রতিরোধে গোলটেবিল বৈঠকে

ঢাকা: বাংলাদেশে ৯.৬ ভাগ জনগণ বধিরতার সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে ১.২ শতাংশ মানুষ সম্পূর্ণ বধিরতায় আক্রান্ত। ১৫ বছরের নিচে বধিরতায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ৬ শতাংশ।

এছাড়া বর্তমান বিশ্বের ৫ শতাংশ মানুষ বধিরতায় ভুগছেন। বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধিতার মধ্যে বধিরতা হলো দ্বিতীয়।

বিশ্বে ৪৬৬ মিলিয়ন মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত।  

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের হামিদুর রহমান সিনহা লাউঞ্জে গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে সার্ক অঞ্চলের বধিরতা প্রতিরোধে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।  

বধিরতা রোধে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বধিরতা নিরূপণ ও প্রতিরোধের বিষয়টি প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে অন্তভুর্ক্ত করে জাতীয় নীতি ও কর্ম কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। বধিরতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা চালু, জনসচেতনা সৃষ্টি, জনবল তৈরি, বধিরতা অতিদ্রুত নিরূপণ কর্মকৌশলে এসব গুরুত্ব পেয়েছে। শব্দ দূষণ, অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার, একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে কথা বলা, কানের জন্মগত ক্রটি কানের সংক্রমণ বধিরতা অন্যতম কারণ। ঢাকা শহরে শব্দদুষণের মাত্রা দিগুণেরেও বেশি শব্দ দুষণের কারণে বধিরতার মধ্যে ১০.৬ শতাংশ মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত হয়। মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারও বধিরতার অন্যতম একটি কারণ।  

বক্তারা বলেন, এখনই যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না যায় ২০৫০ সালে ৯০০মিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ প্রতি ১০ জনের ১ জন বধিরতা আক্রান্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের এই সমস্যা নিরাময়যোগ্য। দ্রুত সনাক্তকরণ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করা ও কানে শোনার ব্যবস্থা করতে পারলে এসকল শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসা সম্ভব।  


বধিরতা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে বক্তারা আরও বলেন, মেবাইলে উচ্চস্বরে গান শোনা থেকে বিরত রাখতে হবে। লাউডস্পিকারে বেশিক্ষণ গান শুনলে কানে শোনার সক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। বধিরতা প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচীও গুরুত্বপূর্ণ। হাম, মামস, রুবেলা ও মেনিনজাইটিসের টিকা দেওয়ার মাধ্যমে ১৯ শতাংশ শিশুর বধিরতা প্রতিরোধ করা যায়। কানে ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণও একটি জরুরি বিষয়। বর্তমান সময়ে ০ থেকে ৫ বছর বয়সের বধিরতা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য দ্রুত সনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হিয়ারিংএইড স্থাপন জরুরি।

বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, বধিরতা প্রতিরোধে আগেভাগেই সনাক্তকরণ ও দ্রুত চিকিৎসার বিকল্প নাই। শিশুসহ সংশ্লিষ্ট সকলেরই যারা বধিরতার সমস্যায় আক্রান্ত তা যত দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে সেটাই হবে রোগীর জন্য মঙ্গলজনক। এজন্য পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি মটিভেশনের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে।  


সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বাংলাদেশ চাপ্টার) সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের (বাংলাদেশ চাপ্টার) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এসএম খোরশেদ আলম মজুমদার, সদস্য অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার, অধ্যাপক এএইচএম জহুরুল হক সাচ্চু, অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. এসকে নূরুল ফাত্তাহ রুমী, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক ডা. মো. আবু হানিফ, অধ্যাপক ডা. মো. আবু ইউসুফ ফকির, ডা. মোহাম্মদ ইদ্রিছ আলী, ডা. দেওয়ান মাহমুদ হাসানসহ অনেকেই।  

বাংলাদেশ সময় : ০০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
এমএএম/এসআইএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।