ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

রামেক হাসপাতালে ২৭ ডেঙ্গু রোগী, সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৯ জন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
রামেক হাসপাতালে ২৭ ডেঙ্গু রোগী, সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৯ জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে 

রাজশাহী: রাজশাহীতে এখনও ডেঙ্গুর প্রকোপ নেই। তবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীতে আসছেন এ রোগে আক্রান্ত অনেকে। এতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ২৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। প্রথমে হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার খোলা হয়েছিল।

কিন্তু সেখানে রোগীর স্থান সংকুলান না হওয়ায় এখন মশারি টানিয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্তদের।

এছাড়া পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং করণীয় নির্ধারণ করতে সভা ডাকা হয়েছে। শনিবার (২৭ জুলাই) হাসপাতাল পরিচালকের সভা কক্ষে ওই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে, রামেক হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) ইনচার্জ ডা. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সেখানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা পুলিশ কনস্টেবল আতিক হাসানের (২৫) অবস্থা এখন অনেকটাই উন্নতির দিকে। আজকে পর্যবেক্ষণের পর তাকে সাধারণ ডেঙ্গু কর্নারে স্থানান্তর করা হবে। তার বাড়ি জয়পুরহাট জেলার তিলেবপুর ইউনিয়নের কয়াসসোবলা গ্রামে।

এর আগে গত বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে নেওয়া হয়। আতিক বগুড়া পুলিশ লাইনে কনস্টেবল পদে কর্মরত। তবে দুই মাসের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণে পাবনায় কর্মরত আছেন। অতি সম্প্রতি তিনি বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য রাজধানী ঢাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে পাঁচ দিন কর্তব্যরত থাকার পর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন আতিক।

পুলিশ কনস্টেবল আতিক হাসানের বাবা বাবুল হোসেন জানান, ঢাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ফেরার পর প্রথমে তাকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনদিন ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রথমে তাকে ডেঙ্গু কর্নারে রাখা হয়। কিন্তু অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে বুধবার দুপুরে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন চিকিৎসরা। এ পর্যন্ত তাকে তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে।  

রামেক হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ইনচার্জ ডা. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, পুলিশ কনস্টেবল আতিকের অবস্থা এখন অনেকটাই উন্নতির দিকে। আজকে পর্যবেক্ষণের পর অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে তাকে হাসপাতালের সাধারণ ডেঙ্গু কর্নারে স্থানান্তর করা হবে।  

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত ২৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন নারী ও একটি শিশু রয়েছে। বাকিরা পুরুষ। তবে এদের কেউই রাজশাহীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি। ঢাকা বা বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন।

ডা. সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, এ বছর ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বেশি হচ্ছে। চোখ, নাক ও ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ, বমি, পেটব্যথা, খাদ্যনালী, মূত্রনালীসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষরণের উপসর্গ নিয়েই ডেঙ্গুতে আক্রান্তরা হাসপাতালে বেশি আসছেন। আতিকের হেমোরেজিক ফিভার ছিল। তাই তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তবে আগের চেয়ে তার অবস্থা এখন ভালো।  

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের ১৭ নম্বর কেবিনটিতে আটটি বেড দিয়ে ডেঙ্গু কর্নার খোলা হয়েছিল। কিন্তু রোগী বাড়তে থাকায় প্রথমে সন্দেহভাজন ডেঙ্গু রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডেই মশারি টানিয়ে রাখা হচ্ছে। যে দিন যে ওয়ার্ডে ভর্তির দিন থাকছে সেই দিন সেই ওয়ার্ডেই রোগী ভর্তি হচ্ছে। পরে ডেঙ্গু শনাক্ত হলে তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।     

আর এই পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে শনিবার সভা রয়েছে। সেখানে ডেঙ্গুর পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ নেই। যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন তাদের অবস্থাও খুব খারাপ নয়। এরই মধ্যে নয়জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলেও জানান রামেক হাসপাতালের এই উপ-পরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।