ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

লাল ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল সংকট, পরিবর্তে নীল ক্যাপসুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৯
লাল ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল সংকট, পরিবর্তে নীল ক্যাপসুল

ঢাকা: লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল স্বল্পতার কারণে এ রাউন্ডে দেশের তিনটি বিভাগ ও ছয়টি সিটি করপোরেশনে শুধুমাত্র নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।  

তিনি জানান, আগামী শনিবার (২২ জুন) থেকে শুরু হওয়া ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর রাউন্ডে লাল রঙের ক্যাপসুল স্বল্পতার কারণে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল- এই তিনটি বিভাগের সব জেলা এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল- এই ছয়টি সিটি করপোরেশনে শুধুমাত্র নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লাখ আই, ইউ মাত্রা) দিয়েই এবারের ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে।

 

এক্ষেত্রে ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে দু’টি এবং ছয় থেকে ১১ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে যথারীতি একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন এই কার্যক্রম শুরু করেন, তখন ছয় থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগের হার ছিল ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে এর অভাবজনিত রাতকানা রোগের হার শতকরা এক শতাংশের নিচেই রয়েছে।  

২২ জুন থেকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো উদ্বোধন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপন করতে যাচ্ছে। ওইদিন ছয় থেকে ১১ মাস বয়সী প্রায় ২৫ লাখ ৩৩ হাজার শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় এক কোটি ৯৩ লাখ ৪৬ হাজার শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লাখ আই, ইউ মাত্রা) খাওয়ানো হবে।  

জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ছাত্র-শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ সবার সার্বিক সহযোগিতায় দেশব্যাপী এক লাখ ২০ হাজার স্থায়ী কেন্দ্রসহ অতিরিক্ত আরও ২০ হাজার ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রগুলো বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, ফেরীঘাট, ব্রিজের টোল প্লাজা, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন ও খেয়াঘাটে অবস্থান করবে। প্রতিটি কেন্দ্রেই কমপক্ষে দু’জন করে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবে।  

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু ক্যাম্পেইন দিবসেই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এই রাউন্ডে দুর্গম এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ১২টি জেলার ৪৬টি উপজেলার ২৪০টি ইউনিয়নে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাদপড়া শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে না। তবে ক্যাম্পেইন পরবর্তী চার থেকে পাঁচদিন নির্দিষ্ট ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) কেন্দ্র থেকে চিহ্নিত জেলা-উপজেলার-ইউনিয়ন এবং পার্বত্য জেলাগুলোতে (রাঙামাটি,বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি) বাদ পড়া শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে ।

এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর নিয়ম উল্লেখ করে তিনি বলেন, শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রগুলো খোলা থাকবে। শিশুদের ভরাপেটে কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। এছাড়া ছয় মাসের কম বয়সী ও পাঁচ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।  

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যাম্পেইনের দিন প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে বলেও জানান মন্ত্রী।

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২২ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৯
এমএএম/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।