ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ কমেই চলেছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৯
বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ কমেই চলেছে

ঢাকা: এক যুগেরও বেশি আগে জাতীয় বাজেটের স্বাস্থ্যখাতের অংশে যে অংকের বরাদ্দ থাকতো তার চেয়ে কম বরাদ্দ হচ্ছে বর্তমান বাজেটে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের অংশে রয়েছে বাজেটের ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। অথচ ২০০৬-০৭ অর্থবছরে এখাতে বরাদ্দ ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

বুধবার (১৯ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে।

 

এতে তুলে ধরা হয়, ২০০৬-০৭ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থখাতে বরাদ্দ ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। পরের অর্থবছরগুলোতে জরুরি এই খাতটিতে বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলেও ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে তা কমতে শুরু করে। সে বছর ছিল মোট বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এরপর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আবার ৬ দশমিক ১০ শতাংশে উন্নীত হলেও ২০১৮-১৯ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ০৩ শতাংশে। এছাড়া বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের ব্যবহারের বিষয়টিও সুনির্দিষ্ট নয়।  

বক্তারা বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার স্বাস্থ্য বাজেটের তুলনায় বাংলাদেশই সবচেয়ে কম বরাদ্দ রাখে। কিন্তু এদেশে স্বাস্থ্যখাতে বাড়তি বরাদ্দ অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশি জরুরি।

বক্তারা বলেন, জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা দেওয়া নেই। কেবল বরাদ্দ দিয়েই ক্ষান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়। এদিকে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় দেশের জনগণের অর্থায়ন পরিস্থিতি বা ব্যক্তির নিজের খরচের পরিমাণ বেড়ে গেছে। এছাড়া স্বাস্থ্যখাতে সরকারি অর্থায়ন এখন কেবল জেলা বা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত রয়েছে। এটাকে গ্রাম বা ইউনিয়ন পর্যায়ে বাস্তবায়নের দাবি জানানো হচ্ছে।  

জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুন নাহার, সভাপতি অধ্যাপক এম আবু সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক ডা. কাজী রাকিবুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তাক হোসেন, জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডা. ফয়জুল হাকিম লালা, বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন প্রমুখ।  

এ সময় জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার লক্ষ্যে বক্তারা ২১টি বিস্তারিত দাবি ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।  দাবিনামায় বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে; চিকিৎসক সহজপ্রাপ্য করতে হবে; চিকিৎসার খরচ কমাতে হবে; সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে; স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে; রোগীদের অসন্তোষ দূর করা জরুরি; প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো আরও অন্যান্য ব্যবস্থাপনাকে আরও সুষ্ঠু পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে; গ্রাম-শহর নির্বিশেষে স্বাস্থ্য অর্থনীতির ক্রমবিন্যাস মানুষের স্বার্থের সঙ্গে সম্পূরক করা; সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা বাড়ানো; সেনা স্বাস্থ্যসেবা ও সেনা প্রশাসনাধীন মেডিকেল কলেজ পরিচালনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ব্যতিরেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট ব্যবহার করা; সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের মতামত নেওয়া; হাসপাতালসমূহকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ও যন্ত্রপাতির স্বল্পতা দূর করা; পাবলিক হেলথ অবকাঠামোকে শক্তিশালী করা উচিৎ; সহজলভ্য অ্যাম্বুলেন্সের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ; সুস্বাস্থ্যের জন্য সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিনিময়ের ক্ষেত্রে মেডিকো লিগ্যাল পদ্ধতির কার্যকারিতা, নৈতিকতা ও গুণাবলী বিষয়ে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৯
এমএএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।