ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

কর্মক্ষেত্রে হয়রানির প্রতিবাদে ইউনানি হাসপাতালে তালা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৯
কর্মক্ষেত্রে হয়রানির প্রতিবাদে ইউনানি হাসপাতালে তালা ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

ঢাকা: কর্মক্ষেত্রে হয়রানির প্রতিবাদে সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তালা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের চিকিৎসকদের কর্মবিরতি কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।

হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মানিকগঞ্জে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক সিস্টেমের একজন চিকিৎসককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে হয়রানি করা হয়েছে অভিযোগ এনে কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে স্বাধীনতা দেশজ চিকিৎসক পরিষদের (স্বাদেচিপ) সভাপতি ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডা. আজম দৌলত আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রেসক্রাইভ করতে পারবেন।

এ নিয়ে হয়রানি না করতে হাইকোর্টের সুসস্পষ্ট নির্দেশও আছে।

মানিকগঞ্জে মোবাইলে কোর্টের মাধ্যমে চিকিৎসককে হয়রানি করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা টোটালি বেআইনি। যিনি এটা করেছেন তিনি জানেন না মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা বা জানলেও তিনি সেটাকে পাশ কাটিয়ে গেছেন। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি, আদালতের নির্দেশের পরিপন্থি।

এ ধরনের হয়রানি বন্ধ না হলে স্বাদেচিপ ভুক্তভোগী চিকিৎসকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ডা. আজম দৌলত আল মামুন।
ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আন্দোলনরত এক চিকিৎসকহয়রানির প্রতিবাদে আন্দোলনরত চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে ৪০০ নম্বরের ফার্মাকোলজি পড়ানো হয়, যেখানে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ বিষয়ে বিস্তারিত পড়ানো হয়। এছাড়া ৫ বছরের একাডেমিক পড়াশোনা শেষে এক বছর ইন্টার্ন করানো হয়। সেখানে হাসপাতালে তিন মাস জরুরি বিভাগে ইন্টার্ন ছাড়াও অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের প্রয়োগ প্র্যাকটিস করানো হয়। তাহলে কেন অ্যালোপ্যার্থিক ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিখতে পারবেন না এই সিস্টেমের ডাক্তাররা। এ বিষয়ে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও কেন হয়রানি করা হবে?

অভিযোগ করে আন্দোলনকারীরা বলেন, অনেক সময় ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক সিস্টেমের ডাক্তারের জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে আশপাশের অন্যরা ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড করে থাকেন। এরই অংশ হিসেবে মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটকে সঠিক তথ্য না দিয়ে বিভ্রান্ত করে আমাদের চিকিৎসকদের হয়রানি করা হচ্ছে।

আন্দোলনরত চিকিৎসকদের মধ্যে খন্দকার ফারুক আহমেদ, মাঈনউদ্দিন মামুন, আব্দুল্লাহ সালেম সোহেল, দুলালুর রহমান, শামীম হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

চিকিৎসকদের কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে জানিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আলামিন হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন অনিক বলেন, আমাদের দাবি অভিন্ন। আমরা সম্মিলিতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

শিগগিরই ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কাউন্সিল গঠন এবং ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি আইন দ্রুত প্রণয়ণসহ ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।

এদিকে হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। অনেক রোগীকে হাসপাতাল গেট থেকে ফিরে যেতে দেখা গেছে।

আসিয়া আক্তার নামে একজন রোগী বলেন, দাবি আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে এভাবে হাসপাতাল বন্ধ করে আমাদের কষ্ট দেওয়া হবে কেন?

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৯
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।