ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

আপনি কি প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত?

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৬
আপনি কি প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত?

ঢাকা: সুপ্তর বেশ কিছুদিন ধরে একটা সমস্যা হচ্ছে। যেকোনো ব্যাপারেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছে সে।

সাধারণ ঘটনাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। তিথি ফোন রিসিভ না করলে সুপ্ত ভয় পেয়ে যাচ্ছে, বুক ধড়ফড় করে ওঠে, মাথার ভেতরে দপদপ করতে থাকে, হাঁটু কাঁপতে থাকে, গলা ক্রমশ শুকিয়ে আসে আর ঘাম ঝরে খুব। ব্যাপারটা ঠিক হতে সময় লাগে অনেক। শরীরের ঝাঁকুনি দীর্ঘসময় ধরে থাকে। মনে অজানা আতঙ্ক।

আপনারও কি এমনটি হয়? যেকোনো ব্যাপারেই কি এই অতি উদ্বিগ্নতা কাজ করে? উত্তর হ্যাঁ হলে এর নাম, প্যানিক ডিজঅর্ডার।

প্যানিক ডিজঅর্ডার
প্যানিক ডিসঅর্ডার স্ট্রেসের সময় সাধারণ ভয় ও অ্যাংজাইটি রিয়েকশনের চেয়ে ভিন্ন। প্যানিক ডিজঅর্ডার একটি সিরিয়াস কন্ডিশন যা কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা সংকেত ছাড়াই হয়। হঠাৎ ভয় বা নার্ভাসনেস, ঘাম, হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি প্যানিক ডিজঅর্ডারের স্বাভাবিক লক্ষণ।

প্যানিক অ্যাটাকের সময় ঘটনা হুমকিস্বরূপ না হলেও ভয়ের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। সময়ের ধারাবাহিকতায় প্যানিক অ্যাটাক দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলশ্রুতিতে আক্রান্ত ব্যক্তি ডিপ্রেশন, ড্রাগ অ্যাবিউজ ও অ্যালকোহলিজমে জড়িয়ে পড়ে।  

লক্ষণ
প্যানিক অ্যাটাক হঠাৎই শুরু হয় ও কমপক্ষে ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
• অস্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস
• বুকে ব্যথা
• তীব্র আতঙ্ক
• মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ঘোরানো বা পড়ে যাচ্ছেন এমন অনুভূতি
• ঝাঁকুনি
• ঘাম
• পেটে ব্যথা ও বমিভাব
• উত্তাপ অনুভব করা
• নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা ও মারা যাবেন এমন অনুভূতি

প্যানিক ডিজঅর্ডার কেন হয়
যদিও এর মূল কারণ এখনও জানা যায়নি তবে এতো বছরের গবেষণা বলে, প্যানিক ডিজঅর্ডার শরীরবৃত্তীয়, পরিবেশগত উভয় কারণের সংমিশ্রণ।
• পরিবারে বাবা-মা কারও যদি প্যানিক ডিজঅর্ডার থেকে থাকে বা হৃদরোগ থেকে থাকে তাহলে সন্তানদেরও এটা হতে পারে।
• মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ এলাকায় অস্বাভাবিকতা থাকলে। মস্তিষ্কের ফাইট অর ফ্লাইট রেসপন্স এরিয়া নিয়ন্ত্রণকারী অংশে সমস্যা থাকলে প্যানিক ডিজঅর্ডার হতে পারে।
• জীবনে স্ট্রেসফুল কোনো মেজর ঘটনা থাকলে এটা হওয়া স্বাভাবিক।

আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া
প্যানিক অ্যাটাক যাদের হয় তারা পরবর্তী অ্যাটাক হতে পারে ভেবে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। যেসব কারণে ব্যক্তির এ অ্যাটাক হয় সেসব ঘটনা ও বস্তুকে এড়িয়ে চলতে চান, ভিড় এড়িয়ে চলেন এবং নিজেকে সবার চেয়ে আলাদা ও দূরত্বে রাখতে পছন্দ করেন। সবই হয় আশঙ্কা থেকে। যখন কেউ প্যানিক অ্যাটাকে পড়েন তখন বিচ্ছিন্ন ভাবনা মস্তিষ্কে আসতে থাকে যার রেশ আত্মহনন পর্যন্ত যেতে পারে।

প্যানিক ডিজঅর্ডার কি পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব
প্যানিক ডিজঅর্ডারে সাইকোথেরাপি, কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি ও ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এছাড়াও শিথিলায়ন পদ্ধতিও রয়েছে।
প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলো কমিয়ে আনতে প্রথমেই স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে-
• অতিরিক্ত ক্যাফেইন প্রোডাক্ট যেমন কফি, চা, কোলা ও চকলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
• যেকোনো ওষুধ বা হারবাল প্রতিষেধক ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ, অনেক ওষুধে অ্যাংজাইটি লক্ষণ উদ্রেককারী কেমিকেল থাকে।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

বাংলাদেশ সময়: ০০১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৬
এসএমএন/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad