ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মনোকথা

মনোযোগে মনোযোগী হন

ডা. সানজিদা শাহরিয়া | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
মনোযোগে মনোযোগী হন

ঢাকা: আপনি মনোযোগী? মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন? কতক্ষণ পারেন? সহজেই মনোযোগী হতে পারেন? নাকি চেষ্টা করতে হয়?

সুমির পড়ার বই দেখলেই হাই ওঠে। ঘুম পায়।

মন বসে না। সিনেমা কী দেখবে আজ বিকেলে সেটি ভাবনায় চলে আসে। কিন্তু গল্পের বই পড়ায় গভীর মনোযোগী সে।

আবার তার ছোটবোন অপরাজিতা দিনে অনায়াসে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পড়ার বই নিয়ে কাটিয়ে দেয়। টিভির দিকে মোটেও মনোযোগী নয় সে।

ভিন্ন ভিন্ন মানুষের মনোযোগের মাত্রা ভিন্ন হবে এটিই স্বাভাবিক। এটি ব্যক্তির পছন্দ, রুচি, পরিবেশ, প্রতিবেশ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।

মানুষ কীভাবে মনোযোগ ধরে রাখে? মনোযোগ ধরে রাখতে পরিবেশ একটি বড় নিয়ামক। পারিপার্শ্বিকতা বড় ভূমিকা পালন করে। যেমন, আপনার চারপাশের অবস্থা শান্ত, আপনার মনোযোগ বাড়বে। সেইসঙ্গে অতীত অভিজ্ঞতা, জেনেটিক গঠন ও ইচ্ছাশক্তি মনোযোগ ধরে রাখতে ভূমিকা পালন করে।

প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার ক্ষেত্রে বার বার নিজেকে মনোযোগী করতে ব্রতী হয়েছে এবং নিজের মনোযোগের দিকে নিজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে, তাদের মনোসংযোগ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে।

এলোমেলো ভাবনা কখনও কখনও আপনার মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয়, কখনও নতুন কোনো সৃষ্টিমূলক চিন্তাকে উস্কে দেয়। এসব তো গেলো সুফল।

আর এর উল্টো দিকে রয়েছে কর্মচাঞ্চল্য কমে যাওয়া থেকে ‍শুরু করে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। আপনি যদি সব সময় মনোযোগ হরিয়ে ফেলেন তবে সমূহ বিপদ। কাজের ফাঁকে মনোযোগ হারিয়ে ফেলার কারণ হলো, আমরা আমাদের মনোসংযোগে পর্যাপ্ত মনোযোগ দেই না। তাই অন্যমনস্কতা আমাদের গ্রাস করে।

আমরা যদি প্রতি মুহূর্তে নিজের মনোযোগ পর্যবেক্ষণ করি, তবে আমাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধায়নে অন্যমনস্কতা আর আমাদের গ্রাস করবে না। কারণ, অন্যমনস্কতা জানান দিয়ে-ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আসে না।

এটি অসতর্ক মুহূর্তে বেনোজলের মতো ঢুকে পড়ে আপনার মননে। এমনটি বহুবার যখন আমরা অন্যমনস্ক হই তখন ধরা পড়ে। তাই নিজের মনোযোগের উপর সতর্ক ও প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

এর জন্য প্রয়োজন মনোসংযোগ। যতো বেশি মনোসংযোগ বাড়াবেন ততো অভিজ্ঞ হয়ে উঠবেন এই প্রক্রিয়ায়।

ফিরে আসি সুমি আর অপরাজিতার কথায়। অপরাজিতা দিনে অনেক বেশি সময় পড়ার বই পড়তে পারে। কারণ, সুমির তুলনায় মনোযোগে তার মনোসংযোগ বেশি। মনোযোগ বাড়ানোর ফলে পর্যায়ক্রমে অন্যমনস্কতা কমে আসবে।

আমরা মানুষ। রোবট নই। মন এলোমেলো হবেই। কিন্তু মনের লাগামটা ধরার পথও রয়েছে।

ডা. সানজিদা শাহরিয়া
বিভাগীয় প্রধান ও প্রফেসর অব এনাটমি এবং কাউন্সিলর

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
এটি/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।