ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

আপনার সমস্যা-আমাদের সমাধান

ঘুমের মধ্যে কথা বলা-হাঁটা এক ধরনের প্যারাসমনিয়া

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৫
ঘুমের মধ্যে কথা বলা-হাঁটা এক ধরনের প্যারাসমনিয়া

ঢাকা: মনোকথা আপনাদের ‍পাতা। আপনার মনস্তাত্ত্বিক নানা সমস্যা সমাধানে আমরা রয়েছি আপনার পাশে।

সমস্যা জানিয়ে জেনে নিন সম্ভাব্য সমাধান। মনোকথার এক পাঠক জানিয়েছেন তার সমস্যার কথা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সমাধান জানানো হলো।

আপনার সমস্যা
আমার বয়স ২০। আমি যখন রাতে ঘুমিয়ে থাকি তখন ঘুমের মধ্যে অনেক কথা বলি, যা আমার কিছু মনে থাকে না। এমনকি রাতে কোনো স্বপ্ন দেখলে তা আমার মোটেও মনে থাকে না।

আমাদের সমাধান
ঘুমের মধ্যে কথা বলা এক ধরনের প্যারাসমনিয়া। এসব ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে কথা বলেন। পুরুষ ও বাচ্চাদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এটা মেডিকেল সমস্যার মধ্যে পড়ে না। প্যারাসমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে বিড় বিড় বা চিৎকার করে নিজেদের ও অন্যের সঙ্গে কথা বলেন। তবে তা সাধারণত ৩০ সেকেন্ডের বেশি নয়। কিন্তু একই ঘুমে বারবার এমন হতে পারে।

তিন থেকে ১০ বছর বয়সী অর্ধেকের বেশি বাচ্চা এবং স্বল্প সংখ্যক বড়রাও ঘুমের মধ্যে কথা বলে থাকেন। কখনও কখনও বংশ পরস্পরায় এ অভ্যাস থাকতে পারে।

লক্ষণ:
আপনার নিজের পক্ষে বোঝা কঠিন আপনি ঘুমের মধ্যে কথা বলেন কিনা। যারা আপনার সাথে ঘুমায় তারাই বলতে পারে।

ঘুমের মধ্যে কয়েকটি পর্যায় আছে। এর যেকোনো পর্যয়ে মানুষ কথা বলতে পারে। সাধারণত এটা ক্ষতিকর না, তবে কখনও কখনও স্লিপ ডিজঅর্ডার বা স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করে।

রেম স্লিপ বিহেভিয়ার ডিজঅর্ডার (জইউ) আর নাইট টেরর (রাতে ঘুমের মধ্যে ভয় পাওয়া) এই দুই অবস্থায় সাধারণত মানুষ ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে। নাইট টেররের আরেকটা প্রচলিত নাম স্লিপ টেরর। এখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখে হাত-পা ছোড়ে, চিৎকার করে ঘুমের মধ্যে। এই সময় তাকে সহজে ঘুম থেকে ডেকে তোলা যায় না।

বাচ্চারা সাধারণত এতে আক্রান্ত হলে ঘুমের মধ্যে হাঁটে। আক্রান্ত ব্যক্তি ভয়ে চিৎকার করে মাঝে মাঝে ভয়ঙ্কর আচরণ করে। কারও কারও ঘুমের মধ্যে কথা বলার পাশাপাশি ঘুমের মধ্যে হেঁটে চলে বেড়ানো এবং খাওয়ার অভ্যাস থাকে। সকালে দেখবেন ফ্রিজ খালি, কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তি বলতে পারবে না।

কিছু কিছু বিশেষ কারণে ও মানুষ ঘুমের মধ্যে কথা বলে। যেমন:

•    কিছু ওষুধের প্রভাব।
•    মানসিক স্ট্রেস, বিষণ্নতা।
•    জ্বর।
•    মানসিক সমস্যা।
•    মাদক গ্রহণের পর।
•    স্লিপ অ্যাপনিয়া।

যা করবেন:
চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগে করুন। যদি ঘুমের মধ্যে ভয় পান বা চিৎকার করেন তবে পরর্বতী ধাপ কি হবে তিনি বলে দেবেন। প্রয়োজনে স্লিপ স্পেশালিস্টের সাহায্য নিতে পারেন। আশার কথা হলো সাধারণত ঘুমের মধ্যে কথা বলার চিকিৎসা দরকার হয় না।

ঘুমের মধ্যে প্রচুর কথা বলি কিভাবে এটা কমাবো?
প্রথমে স্ট্রেস কমান। পর্যাপ্ত ঘুমান। একটা ডায়েরি রাখুন। তাতে লিখুন কখন শুতে গেলেন, কখন উঠলেন। সেই সঙ্গে দিনে কত কাপ চা-কফি খান, সিগারেট খান, কতটুকু ব্যায়াম করেন, কি ওষুধ খান।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। দেখুন কেমন লাগে। শুভ কামনা রইলো। আমরা প্রয়োজনে পাশে আছি।

প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। আপনারা জানাতে পারেন বাংলানিউজের ‘মনোকথা’ পাতায় আপনি কি ধরনের প্রতিবেদন দেখতে চান। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের।

আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।

সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।

এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।

আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ ও লেখা পাঠানোর জন্য আমাদের ইমেইল করুন -[email protected]

প্রফেসর ডা. সানজিদা শাহরিয়া
কাউন্সিলর

বিসিআর পেইন অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার


বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।