ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

আরইএম স্লিপ কন্ডিশন

বন্ধ চোখ জানান দেবে স্বপ্নের খবর

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৫
বন্ধ চোখ জানান দেবে স্বপ্নের খবর

ঢাকা: চোখের মণির নড়াচড়া থেকে স্বপ্ন সম্পর্কে জানা সম্ভব বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।

সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেন, প্রথমবারের মতো নিউরোসায়েন্টিস্টরা আলাদা আলাদা করে মস্তিষ্কের কোষ পর্যবেক্ষণ করে দেখেন, ঘুমের বিভিন্ন স্তরে স্বপ্নের সময় কি কি পার্থক্য হয়।



ইসরায়েলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডা. য্যুভাল বলেন, আমরা মৃগী রোগীদের কাছে কৃতজ্ঞ, যারা এ গবেষণায় অংশ নেন। এ গবেষণার পর নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, কোনো ব্যক্তির বন্ধ চোখ দেখলেই বোঝা যাবে তার মস্তিষ্কের ভেতরে কি হচ্ছে।

ফ্রান্স ও মার্কিন সহকর্মীদের সঙ্গে য্যুভাল এ গবেষণায় কাজ করছেন।

চার বছরের গবেষণায় ১৯ জন রোগীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। যেখানে মস্তিষ্কের ভিন্ন একটি অংশ পর্যবেক্ষণ করা হয়, যা আমাদের দৃষ্টির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়।

গবেষকদের মতে, এই স্নায়ুকোষগুলো কোনো চিত্র দেখতে সাহায্য করে না, কেবল কল্পনায় কাজ করে। উদাহারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন চোখ বন্ধ করে রানী এলিজাবেথকে কল্পনা করার চেষ্টা করেন তখন এই স্নায়ুকোষগুলো কাজ করে। অর্থাৎ, মস্তিষ্কে কোনো কল্পনাকে চিত্রায়িত করাই এর কাজ।

যখন কোনো ব্যক্তি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন এবং একটি ছবির দিকে তাকান তখন প্রায় ০ দশমিক ৩ সেকেন্ড পরে তা মূর্ত হয়। সেই সঙ্গে ওই স্নায়ুকোষগুলো কর্মতৎপরতা বন্ধ করে দেয়। একইভাবে কোনো ব্যক্তি যখন চোখ বন্ধ করে কল্পনা করেন তখনও একই সময়ে ওই প্রক্রিয়া চালু হয়।

ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আরইএম কন্ডিশনেও একই ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন য্যুভালের সহকর্মীরা। স্বপ্নে যখন আমরা কোনো চরিত্র কল্পনা করি তখন চোখের মণি নড়াচড়ার সঙ্গে স্বপ্নের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। যদিও এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত প্রমাণ হ‍াতে পাওয়া যায়নি।

অতীতে ধারণা করা হতো, কোনো দৃশ্য দেখতে ও পরবর্তীতে ওই দৃশ্য কল্পনা করতে স্নায়ুকোষগুলো সক্রিয় থাকে। নতুন এ গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, একইভাবে আরইএম স্লিপ কন্ডিশনেও স্নায়ুকোষগুলো সক্রিয় থাকে।

যে কারণে এটা খুবই স্বাভাবিক চোখের মনির নড়াচড়া থেকে স্বপ্ন সম্পর্কে জানা যাবে। এটা অনেকটা স্লাইড প্রজেক্টরের মতো, চোখের মণি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘ড্রিম ফ্রেইম’ পাল্টে যায়।

এই গবেষণা আরও কয়েকটি বিষয় বুঝতে সহযোগিতা করবে, গর্ভের সন্তান এবং অন্ধ ব্যক্তিরাও আরইএম স্লিপ কন্ডিশনে চোখ নাড়ায়। এমনকি জন্মান্ধ ব্যক্তিরাও স্বপ্ন দেখে। অন্যান্য ইন্দ্রিয় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই স্নায়ুকোষগুলো মস্তিষ্কে কল্পনা সৃষ্টি করে।

অর্থাৎ, আরইএম স্লিপ ও জেগে থাকায় বিশেষ কোনো পার্থক্য ‍নেই, দাবি করেন গবেষকরা।

বিষয়টি সহজ করে বোঝাতে গবেষকরা বলেন, আরইএম স্লিপ অনেকটা কম্পিউটারের স্ক্রিনসেভারের মতো। এটা জেগে থাকার খুব কাছাকাছি, যেমন কোনো একটি বাটনে চাপ দিলেই স্ক্রিনসেভার চলে যায়। নন-আরইএম স্লিপ অনেকটা বন্ধ কম্পিউটারের মতো এবং রিবুট করলে আমরা ঘুম থেকে জেগে উঠি।

নিউরোসায়েন্টিস্ট প্রফেসর উইলিয়াম উইসডেন বলেন, এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর বাকি। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন কেন আমাদের আরইএম স্লিপ কন্ডিশন আসে?

প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। আপনারা জানাতে পারেন বাংলানিউজের ‘মনোকথা’ পাতায় আপনি কি ধরনের প্রতিবেদন দেখতে চান। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের।

আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।

সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।

এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।

আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ ও লেখা পাঠানোর জন্য আমাদের ইমেইল করুন- [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।