ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বাড়বে সারচার্জ কমবে ‘স্বাস্থ্য ঝুঁকি’

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২১ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৫
বাড়বে সারচার্জ কমবে ‘স্বাস্থ্য ঝুঁকি’

ঢাকা: বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে তামাক পণ্যের মূল্য অত্যন্ত কম। ফলে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি।


 
তামাক পণ্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তামাক পণ্য বিক্রয় মূল্যের ওপর ১ শতাংশ ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ’ আরোপ করে সরকার। কিন্তু এর পরিমাণ খুবই কম।
 
আর তাই তো আগামী অর্থবছর থেকে ক্রমান্বয়ে সারচার্জ বৃদ্ধি করলে ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষার’ পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে মত অর্থনীতিবিদদের।
 
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে তামাক পণ্য বিক্রয়ের ওপর ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ করে সরকার। এতে বছরে আদায় ২শ’ ৩৪ কোটি টাকা।
 
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টারের (এইচডিআরসি) গবেষণা অনুসারে, বাংলাদেশে তামাক ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহারে প্রতিবছর প্রায় ১২ লাখ মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হন।
 
রোগবালাই মোকাবিলায় বছরে সরকারকে জাতীয় আয়ের ১ শতাংশ ব্যয় করতে হয়। যেখানে ১ শতাংশ সারচার্জ স্বাস্থ্য উন্নয়নে কিছুই নয়।
 
গবেষণায় বলা হয়, তামাকজাত পণ্যের ব্যবহারে প্রতিবছর প্রায় ৭৬ হাজার থেকে ১ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হয়, পঙ্গু হন ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ।
 
তামাকজাত পণ্য সেবনের অসুস্থতায় মৃত্যু বা অক্ষম হয়ে আয় বন্ধ হওয়ার কারণে প্রতিবছর ক্ষতি হয় ৬৫ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি।
 
ধূমপান সংশ্লিষ্ট কারণে যত মানুষ মারা যান, তার অর্ধেকের মৃত্যু হয় জীবনের সবচেয়ে কর্মক্ষম সময়ে (৩০-৫৯ বছর)।
 
একজন মানুষের মাসিক সংসার খরচের ১০ শতাংশ ব্যয় হয় তামাকজাত পণ্য ব্যবহারে অসুস্থতার চিকিৎসায়।
 
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তামাক পণ্যসৃষ্ট রোগে সরকার নামমাত্র চিকিৎসা দিলেও ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা দিতে পারে না।
 
প্রতি অর্থবছরে সারচার্জের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো, তামাকজনিত স্বাস্থ্য ক্ষতির বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও ব্যবহার কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হবে।
 
এনবিআর ও এইচডিআরসি’র হিসেব মতে, চলতি অর্থবছরে ১ শতাংশে আদায় হবে ২৩৪ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে সারচার্জের পরিমাণ ২ শতাংশ করা হলে সারচার্জ (রাজস্ব) আদায় হবে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা।
 
আদায় এ ৫শ’ কোটি টাকার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২৫ শতাংশ (১২৫ কোটি), তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ও প্রচারাভিযানে ব্যয় করা যাবে ২০ শতাংশ ১শ’ কোটি টাকা। নিকোটিন আসক্তদের আসক্তি মুক্ত করার কর্মসূচিতে ১৫ শতাংশ (৭৫ কোটি) ও তামাক চাষী কৃষককে পেশা পরিবর্তন ৪০ শতাংশ (২শ’ কোটি) টাকা ব্যয় করা যাবে।

হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টারের (এইচডিআরসি) তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরে তামাকের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ১৬ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। অথচ তামাকখাতে সরকারের আয় ২৪শ’ কোটি টাকা।
 
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বাংলানিউজকে বলেন, তামাকের কারণে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের যে ব্যয় তাতে ১ শতাংশ সারচার্জ কিছুই নয়।
 
তিনি বলেন, আগামী কয়েক বছরে তামাকজনিত রোগে সরকারের ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। তাই সামনের অর্থবছর থেকে আরও ১ শতাংশ সারচার্জ বাড়াতে পারে সরকার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৫
আরইউ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।