ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

হার্টের সুরক্ষায় চিনাবাদাম

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৫
হার্টের সুরক্ষায় চিনাবাদাম

ঢাকা: খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম, দুশ্চিন্তা প্রভৃতি কারণে অনেকেই ভুগছেন হৃদরোগে। ফলে প্রায়ই যেতে হচ্ছে ডাক্তারবাড়ি।

নিতে হচ্ছে কড়া ওষুধ। কিন্তু খাদ্যাভাসে সামান্য পরিবর্তনও আপনাকে সুরক্ষা দিতে পারে হৃদযন্ত্রের রোগ থেকে।

হৃদরোগের অন্যতম প্রাকৃতিক ওষুধ বাদাম। বেশ কয়েকটি গবেষণার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় অনেকাংশেই। তবে আমন্ড, কাজু প্রভৃতি বাদাম একটু ব্যয়বহুল।

তাই রোজকার খাদ্য তালিকায় তাদের সমসময় ঠাঁই দেওয়া সম্ভব হয় না স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে। তবে চিনাবাদাম সেদিক থেকে সহজলভ্য। আর গুণগত মানও যথেষ্ট ভালো।

সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা কম আয়ের মানুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি কমানোর ওপর একটি গবেষণা করেন। তারা সেসব স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের চিনাবাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ চিনাবাদাম একাধারে হৃদপিণ্ডবান্ধব, সহজলভ্য ও দামের দিক থেকেও সুলভ।   তবে লবণাক্ত চিনাবাদাম স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়।

চিনাবাদাম মূলত বাদাম নয়। এটি শিমজাতীয় ও ঝোপে জন্মায়। তবে এতে রয়েছে অন্যান্য বাদামের মতই উচ্চমানের পুষ্টি উপাদান।

নতুন এ গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ডা. জিয়াও ওউ শু। গবেষণাটি পরিচালনার জন্য পরীক্ষার্থীদের দু’টি দলে ভাগ করেন তিনি।

দু’টি দলের একটি ছিল ৭২ হাজার স্বল্প আয়ের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শুভ্র ও শ্যামাঙ্গী নারী পুরুষ। অন্যটিতে ছিল চীনের সাংহাইতে বসবাসরত প্রায় একলাখ ৩৪ হাজার নারী পুরুষ। জিয়াও তার এ গবেষণায় দেখেছেন, দুটি দলের মধ্যেই পুরুষেরা নারীদের তুলনায় অধিক চীনাবাদাম খান। আবার যুক্তরাষ্ট্রের দলটি তাদের বাদামের তালিকায় অর্ধেকই রাখেন চিনাবাদাম, যেখানে চীনারা পুরোটাই চিনাবাদাম খান।


গবেষণায় দেখা যায়, যারা বাদাম খান তাদের হার্ট অ্যাটাকজনিত কারণে মৃত্যু ঝুঁকি অনেকাংশেই কম। এটি জ‍াতি, লিঙ্গ, বডি মাস ইনডেক্স, ধূমপায়ী, মাদকাসক্ত, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ও বাড়তি ওজনের মানুষ- সবার ক্ষেত্রেই সমান কাজ করে।

এতে যুক্তরাষ্ট্রের দলটির হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। অন্যদিকে চীনের ১৭ শতাংশ। শু জানান, বাদাম ক্যানসার ও ডায়াবেটিসজনিত কারণে মৃত্যুঝুঁকি  কমায়। বিশেষ করে হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুর আশঙ্কা কমে যায় ব্যাপকহারে।


তাদের এই গবেষণাটি ‘জামা’ নামের একটি আন্তর্জাতিক নিউজ জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই জার্নালের সহকারী সম্পাদক মিচেল কাটস জানান, চিনাবাদাম মূলত বাদাম নয়। এটি শিমজাতীয় একটি খাবার। এটি অন্যান্য বাদামের মতো গাছে জন্মে না। এদের জন্মস্থান ঝোপে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, শুধু তাদের গবেষণার ফল দেখেই বেশি পরিমাণে চীনাবাদাম বা বাদাম খাওয়া ঠিক হবে না।


এ গবেষণার বিষয়ে ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের মেডিক্যাল ডিরেক্টর প্রয়ফসর পিটার ওয়েইসবার্গ জানান, গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, যারা বাদাম খান, বিশেষ করে চিনাবাদাম খান তাদের হার্ট অ্যাটকজনিত কারণে মৃত্যঝুঁকি যারা বাদাম খান না তাদের তুলনায় অনেকাংশে কম।

এই আশায় হঠাৎই অতিরিক্ত বাদাম বিশেষ করে লবণাক্ত বাদাম খাওয়া ঠিক নয়। তবে খাদ্য তালিকায় পরিমাণমত বাদাম থাকতেই পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৫
এএ       

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।