ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বাংলাদেশেই বিটিং পদ্ধতিতে বাইপাস সার্জারি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৪
বাংলাদেশেই বিটিং পদ্ধতিতে বাইপাস সার্জারি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশেই করা হচ্ছে আধুনিক বিটিং পদ্ধতিতে (হৃদযন্ত্র সচল রেখেই রক্তনালীর ভেতরে চর্বি কেটে বের করা) বাইপাস সার্জারি।
 
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘বাইপাস সার্জারি উইথ আর্টেরেক্টমি ইন বিটিং হার্ট’ শীর্ষক সায়েন্টিফিক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।



বাংলাদেশ হার্ট রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন এ সেমিনারের আয়োজন করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কার্ডিয়াক সার্জন প্রফেসর ডা. অসিত বরণ অধিকারী ২০০৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম এ পদ্ধতিতে সার্জারি শুরু করেন।

সেমিনারে ডা. অসিত বরণ অধিকারী বলেন, ‘৯০ দশকে বাংলাদেশে হৃদযন্ত্রে বাইপাস সার্জারি শুরু হয়। তখন হৃদযন্ত্র বন্ধ করে সার্জারি করা হতো।

২০০১ সালে আমি আধুনিক বিটিং পদ্ধতিতে (হৃদযন্ত্র সচল রেখে রক্তনালীর ভেতরে চর্বি কেটে বের করা) সার্জারি শুরু করলেও
সীমাবদ্ধতার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে আবার শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ শতাধিক রোগীকে এ পদ্ধতিতে বাইপাস সার্জারি করেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের হাসপাতাল উন্নত না হলেও চিকিৎসা বিশ্বমানের। উন্নত দেশে এ পদ্ধতিতে বাইপাস সার্জারি করানোর খরচ অনেক বেশি। বাংলাদেশে সরকারি পর‌্যায়ে এক লাখ-এর কিছুটা কম ও বেসরকারি পর‌্যায়ে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকায় এ সার্জারি করা হয়। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সরকারি-বেসরকারি প্রায় ১৮টি হাসপাতালে ১৮ থেকে ৯৪ বছর বয়সী রোগীদের এ সার্জারি করা হয়েছে।

অসিত বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে শিশু হৃদরোগীর সংখ্যা প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ এবং বয়স্ক রোগী প্রায় তার দ্বিগুণ। আমেরিকায় বাইপাস সার্জারিতে গড়ে প্রায় ২ শতাংশ রোগী মারা যায় এবং বাংলাদেশে গড়ে ২-৩ শতাংশ রোগী মারা যায়।

আধুনিক বিটিং পদ্ধতিতে সার্জারি করা হলে ভয়ের কোনো কারণ নেই বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে এ পদ্ধতি আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। কেননা বর্তমানে এ পদ্ধতিতে দেশে ২০ থেকে ২৫ জন বাইপাস সার্জারি করেন। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে সার্জনের সংখ্যা হবে দ্বিগুণ।

বাংলাদেশে প্রথম বাইপাস সার্জারি শুরু করেন প্রফেসর ডা. এস আর খান। এ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো বিশ্বের কোনো দেশে এত কম খরচ এ পদ্ধতিতে বাইপাস সার্জারি হয় না।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে এ পদ্ধতিতে ঝুঁকির পরিমাণ কম। সার্জারির পর তিন দিনের মধ্যে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায় এবং নিয়ম মেনে চললে বাকি জীবন সুস্থভাবে কাটাতে পারেন।

তবে এই বাইপাস সার্জারির অধিকাংশ উপকরণ আমেরিকায় তৈরি হয় যা একবার ব্যবহারযোগ্য। ফলে খরচের পরিমাণ কিছুটা বেশি।

এ পদ্ধতিতে মাস্টার্স অব হার্ট সার্জারি পড়তে নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে আসছে। এটা দেশের সফলতা।

সেমিনারে নেপাল থেকে আগত দশজন কার্ডিয়াক সার্জনসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে কার্ডিয়াক বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।