ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বুড়িয়ে যাচ্ছেন? ব্রেডই দায়ী!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৪
বুড়িয়ে যাচ্ছেন? ব্রেডই দায়ী!

কি খাচ্ছেন প্রতিদিন? সঠিক খাবারটি তো? নাকি প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কি সেইসব থাকছে যা শরীরের ব্লাড সুগার বাড়ায়?

কিছু খাবার আছে, যা ‘স্বাস্থকর’ বলে চালিয়ে দিয়ে বড় বড় ফুড কর্পোরেশনগুলো মুনাফা লুটছে। এর মধ্যে এমন দুয়েকটি রয়েছে যা দ্রুত বুড়িয়ে দিতে ভ’মিকা রাখে।

নিত্যখাবারের তালিকায় এমন ভূল খাবার থাকলে বয়সের তুলনায় ১০ বছর বেশি বয়সী বেশি মনে হবে।

কৌতুককর ঠেকলেও, গবেষকরা বলছেন, এটা মোটেই কৌতুক নয়। তারা বেশ জোর দিয়েই বলছেন, যারা এ ধরনের খাবার বর্জন করতে পারছেন তাদের দেখে বয়সের তুলনায় ৫ থেকে ১০ বছর কম বয়সীই মনে হবে।

কি সেই খাবার? যা খেলে বুড়িয়ে যাবে! গবেষকরা তাদের আঙুল নির্দেশ করেছেন ব্রেডের দিকে।

স্বাস্থ্য সচেতনরা প্রতিদিন সকালে দুই সøাইস ব্রেডে জেলি মেখে শুকনো মুখে খেয়ে, বেশ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেলেন বলে তৃপ্তির মুখে চায়ের কাপে ফু দেন। সেই ব্রেড আজ ক্ষতিকর বলেই চিহ্নিত।

গবেষকরা বলছেন, গমজাতীয় বা গম থেকে প্রস্তুত যে কোনো খাবার ক্ষতিকর।

বলেই ক্ষান্ত হন নি। দেখিয়েছেন এই খাদ্যে শরীরে সৃষ্ট জৈব রাসয়নিক কিছু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াও।

যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ মাইক গিয়ারি বলেন, গমজাতীয় খাদ্য শরীরে গ্লিকেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কাজ করে। এজাতীয় খাবারকে অ্যাডভান্সড গ্লিকেশন এন্ড প্রোডাক্টস র্(এজিই) বলে। এই এজিই শরীরকে বুড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখে। এতে শরীরের জয়েন্টগুলো ক্ষয়ে যায়, আর চামড়া কুচকে যায়।

বিশ্বের জায়ান্ট কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরেই তাদের গমজাতীয় পণ্য বিক্রি করতে বলে আসছে, সম্পূর্ণ গমে তৈরি খাবার শরীরের জন্য ভালো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই গম জাতীয় খাবারে এমিলোপেকটিন-এ জাতীয় খুবই অস্বাভাবিক ধরনের কার্বোহাইড্রেড থাকে যা অন্য খাবারে থাকে না। আর গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গেছে এই এমিলোপেকটিন-এ শরীরের ব্লাড সুগার এমন হারে বাড়িয়ে দেয় যা খাবার টেবিলে চামচ ভরে চিনি খেলেও বাড়ে না।

গবেষকরা বলেছেন, গমের এই এমিলোপেকটিন-এ শরীরে রক্তের ব্লাড সুগার যে হারে বাড়ায় আর কোনো ধরনের শ্বেতসার জাতীয় খাবার তা বাড়ায় না।

অতএব গমের তৈরি খাবার যেমন ব্রেড বেগলস, সিরিয়াল, মাফিন এবং অন্যান্য রুটি, লুচি, পরোটা শরীরের ব্লাড সুগারের পরিমান সবচেয়ে বেশি বাড়ায়।

গবেষকরা দেখেছেন, দুই সøাইস ব্রেড খেলে ৪৫ মিনিটের মধ্যে শরীরে ব্লাড সুগার প্রায় দ্বিগুন বেড়ে যায়। পরীক্ষা চালিয়ে তারা দেখেছেন খালি পেটে ব্লাড সুগারের মাত্রা ৮৬ যা দুই সøাইস ব্রেড খাওয়ার ৪৫ মিনিট পর ১৫৫ তে দাঁড়ায়।

অনেকেই আজকাল সিরিয়ালে আগ্রহী হচ্ছেন। এই খাদ্যে অবশ্য সুগার বাড়ার মাত্রা অপেক্ষাকৃত কম। এক বাটি সিরিয়াল খাওয়ার পর রক্তে সুগারের মাত্রা ৮৬ থেকে ১১২ পর্যন্ত বেড়ে যায় বলে গবেষণায় দেখা গেছে।  

গবেষকরা বলছেন, কেউ যদি নিয়মিত এই খাবারটি গ্রহণ করেন তাহলে শরীরে ১৫৫ মাত্রায় ব্লাড সুগার দ্রত বুড়িয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভ’মিকা রাখে।

এছাড়াও গম জাতীয় খাবারে গ্লুটেন নামের একটি উপাদন রয়েছে যা পরিপাকতন্ত্রেও ক্ষতিকর প্রভাব রাখে।

বেক করা গমজাতীয় খাবারে একরিলামিকস নামে এক ধরনের কারসিনোজেনিক রাসয়নিক থাকে যা ব্রেডের একটি অংশ ব্রাউন করে। এই রাসয়নিকটি বয়সের তুলনায় শরীরকে বুড়িয়ে দেয়।

ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজসহ আরও কিছু তেলে ভাজা খাবারেও এই রাসয়নিক উপাদানটি থাকে।  

এ অবস্থায় গবেষকরা খাবারের তালিকা থেকে গমজাতীয় খাবার কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। গমের বদলে ভুট্টা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ সময় ২১১০ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।