ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

মনোকথা

‘শাদি কি রিয়েল সাইড ইফেক্ট’

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৪
‘শাদি কি রিয়েল সাইড ইফেক্ট’

বিয়ে করে সুখে কাটাচ্ছিলেন সিদ্ধার্থ ও তৃষা। কিন্তু বিপত্তি ঘটতে শুরু করল যখন তৃষার গর্ভে সন্তান আসল।

সন্তান নিতে ইচ্ছুক নয় সিদ্ধার্থ, গানের কম্পোজ নিয়ে ব্যস্ত সে।

মেয়ের জন্মের পর তাকে নিয়েই সারাদিন ব্যস্ত থাকেন তৃষা। অন্যদিকে দায়িত্বহীনের মতো আচরণ সিদ্ধার্থের। মেয়ে জামাইয়ের হেয়ালিপনায় বিরক্ত তৃষার মা।

শাশুড়ির কথা সইতে না পেরে পুরোদমে পরিবারের কাজে নেমে পড়েন সিদ্ধার্থ। কিন্তু ব্যর্থতার পরিচয় দেন তিনি। স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায় ক্রমশ। সুখের সংসার আর নেই সিদ্ধার্থ-তৃষার।

এভাবেই গড়িয়েছে ‘শাদি কি সাইড ইফেক্টস’ সিনেমার গল্প। সিনেমার চিরাচরিত ফর্মেটে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সংশোধনীর মাধ্যমে মিলন ঘটানো হয় সাকেত চৌধুরীর এ সিনেমায়।

গল্পের মোড়ে মোড়ে বিয়ে পরবর্তী জীবনের দায়িত্ব, ঝামেলা বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে ফারহান আক্তার ও বিদ্যা বালান অভিনীত ‘শাদি কি সাইড ইফেক্টস’ এ।

‘দিল্লিকা লাড্ডু, যো খায়েগা ও পসতায়েগ‍া, যো নেহি খায়েগা ওভি পসতায়েগা’ প্রবাদটি বিয়ের ক্ষেত্রেও বুঝি প্রযোজ্য!

আর তাইতো সিদ্ধার্ত নাম চরিত্রে অভিনয়কারী ফারহান বলেন, ‘বিহা কারকে পাসতায়া’!

তোয়ালে রাখা নিয়ে স্ত্রীর অভিযোগ তার উত্তর, স্বয়ং আলবার্ট আইনস্টাইনও জানতেন না, তোয়ালে রাখার কোনো ভুল বা সঠিক সাইড আছে কিনা।  

কোথাও বেরুবেন ফারহান। কিন্তু বিদ্যা মনোভঙ্গি দিয়ে বোঝান ফারহান যেন কোথাও না যায়। ফারহানকে নিজের মন পড়ে নিতে বলেন বিদ্যা, ‘আমি চাই যে তুমি চাও, যে তুমি না যাও। ’

আসলেই বিয়ের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস, জগদ্বিখ্যাত মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন স্ত্রী নিয়ে ব্যক্ত করেছেন তাদের উপলব্ধি। কেউ কেউ বলেন, ‘ন‍ারীর মন স্বয়ং ঈশ্বরও বোঝেন না!’

পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাদের স্ত্রী বা সঙ্গী নিয়ে কী ধারণা পোষণ করতেন তা বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

বিখ্যাত রম্য লেখক অস্কার ওয়াইল্ড বলেন, একজন নারীকে একজন পুরুষ যখন পুরোপুরি সাধারণ একজন মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেন তখন একজন নারী কীভাবে সেই প‍ুরুষের সঙ্গে সুখী জীবন যাপনের  কথা চিন্তা করতে পারে!

বাই ফোকাল লেন্সের আবিষ্কারক বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেন, বিয়ের আগে আপনার চোখ যতটা পারেন খুলে রাখুন, বিয়ের পর চোখ আধবোজা রাখলেও চলবে।

সাবেক মার্কিন মুষ্ঠিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেছেন, আমার সবচেয়ে কঠিনতম লড়াই হয়েছে আমার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে।

স্ত্রী নিয়ে তিক্ত বা মধুর দুই অভিজ্ঞতায় বুঝি পেয়েছেন ‘নিজেকে জানো’র প্রবক্তা সক্রেটিস। গ্রিক এ দার্শনিকের মতে, ভাল স্ত্রী পেলে তুমি সুখী হবে। আর তোমার স্ত্রী খারাপ হয় তবে তুমি দার্শনিক হবে।

মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক উডি অ্যালেন বলেন, আমার ঘরে আমি কর্তা হলেও আমার স্ত্রীই হচ্ছে ‘ডিসিশন মেকার’।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন বুঝি সত্যিই স্ত্রীর মন পড়তে পেরেছিলেন। তাই স্ত্রীর চাওয়া আর সন্তুষ্টি সম্পর্কে তার পরামর্শ, স্ত্রীকে খুশি রাখতে মাত্র দুইটি উপায় শিখেছি, প্রথমত তাকে এটা ভাবতে দেওয়া, সে তার মতো চলতে পারে, আর দ্বিতীয়ত ত‍ার ভাবনা অনুযায়ী তাকে চলতে দেওয়া।

তবে প্রেসিডেন্ট জনসনের সহকারী  হারবার্ট এইচ হ্যামপারি নিজের জীবনে সফলতার পেছনে স্বীকার করেছেন স্ত্রী ও শাশুড়ির অবদান। তিনি বলেন, একজন সফল পুরুষের পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান থাকে তার স্ত্রী ও শাশুড়ির।

প্রাক্তন মার্কিন ফাস্ট লেডি অ্যালানোর রুজভেল্ট বলেন, আমি আমার স্বামীকে বলেছি, তিনি যদি আমাকে কোনো কিছু বোঝাতে সক্ষম হন তবে তিনি দেশের সব মানুষের কাছে পরিষ্কার থাকতে পারবেন।

ইংরেজ অপরাধ কল্পকাহিনী লেখক অগাথা ক্রিস্টির মতে, একজন প্রত্নতাত্ত্বিকই একজন নারীর সেরা স্বামী হতে পারে। সেখান থেকে সে পুরোনো অনেক আকর্ষণীয় বিষয়ে জানতে পারবে।

সব শেষে বলা যায়, বিয়ের আগে তোমার পার্টনার সারারাত চিন্তা করবে যে তুমি কি বললে, আর বিয়ের পর সে আগেই ঘুমিয়ে যাবে পাছে তুমি কিছু বল!

বিয়ের সাইড ইফেক্ট বাদ দিলে বিষয়টা আসলে সর্বজনীন। আর আমাদের বিদ্রোহী কবি তো বলেছেন, এ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। কাজেই...

বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।