ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ঢামেক জরুরি বিভাগে ট্রলি সংকট চরমে

আবাদুজ্জামান শিমুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৪
ঢামেক জরুরি বিভাগে ট্রলি সংকট চরমে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর টিকাতুলীতে নির্মাণাধীন একটি ভবনে কাজ করার সময় সিড়ি থেকে পড়ে আহত হন নির্মাণ শ্রমিক বিমল (৫০)। গুরুতর আহত অবস্থায় সহকর্মীরা একটি ভ্যানে করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন।

বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও ট্রলি না পাওয়ায় ৪/৫ জন মিলে ধরাধরি করে তাকে ওয়ার্ডে নিয়ে যায়।

কামাল হোসেন (৫০) নামে এক রোগীকে মাইক্রোবাসে করে মানিকগঞ্জ থেকে চিকিৎসার জন্য ঢামেকে নিয়ে আসেন তার ভাতিজা মোবারক হোসেন। জরুরি বিভাগে এসে ট্রলি না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ গাড়িতেই অবস্থান করেন তারা। মোবারক হোসেন জানান, রোগী অচেতন ছিলো। কিন্তু তাকে নেওয়ার জন্য ট্রলি পাওয়া যাচ্ছিল না।

পেটে ব্যাথা সৃষ্টি হওয়ায় নয় মাসের অন্ত:সত্ত্বা শখিকে (২০) রাজধানীর মহাখালী থেকে ঢামেকে নিয়ে আসেন তার খালা সাজেদা বেগম। ঢামেকে এসেই তিনি ট্রলি না পেয়ে পড়েন বিপদে। এ সময় বাংলানিউজের এই প্রতিবেদককে ডাক্তার মনে করে তিনি বলেন, ‘ভাই ট্রলি আছে না নাই, আমরা অতো কিছু বুঝি না, আমাদের তাড়াতাড়ি চিকিৎসা দেন’। একপর্যায়ে ট্রলি ছাড়াই অন্ত:সত্ত্বা সখিকে হাটিয়ে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার সকালে ঢামেক জরুরি বিভাগের সামনের সামান্য চিত্র এটি। ট্রলির সংকটে প্রতিনিয়ত এ রকম ভোগান্তির শিকার হতে হয় রোগী ও তার স্বজনদের।  

ঢামেক জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লু রহমান বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে ট্রলি আছে ২৩টি। স্বাভাবিকভাকে কাজ চালানোর জন্য ৫০টি ট্রলি দরকার। পরিচালক বরাবর চাহিদা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এক মাস আগে।

তিনি আরো জানান, সারাদেশ থেকে ঢামেকে রোগী আসে। নতুন ভবন (মেডিকেল-২) চালু হয়েছে। জরুরি বিভাগে রোগী আসলে ডাক্তারদের পরামর্শে ট্রলিতে করে নতুন ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। একজন রোগীর পেছনে এজন্য ঘণ্টাখানেক সময় ব্যয় হয়। এ কারণে কিছুটা ট্রলি সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মচারী জানান,  ঢামেকে বর্তমানে ট্রলি আছে ১৫/১৬টি। এগুলো দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ চালানো হচ্ছে।

জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আমজাদ ট্রলি সংকটের বিষয় স্বীকার করে বলেন, রোগী ও স্বজনদের বক্তব্য  অনুযায়ী রোগীদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। এতে অনেক ট্রলি দরকার হয়। অনেক রোগীর স্বজন ট্রলি না পেয়ে আমাদের কাছে ধর্ণা দেন।

আরো ৫০টি ট্রলি হলে কার্যক্রম মোটামুটি স্বাভাবিকভাবে চালানো যাবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ট্রলি সংকটের বিষয়টি কিছুটা স্বীকার করেন তিনি।

তিনি বলেন, কর্মচারীরা রোগী নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ট্রলি ফেলে আসে। এ জন্য ট্রলির কিছুটা সংকট হচ্ছে। মঙ্গলবারের মধ্যে আরো ২৫টি ট্রলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।